আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
44 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম
স্বামীর বৈধ আদেশ ও সাংসারিক কাজকর্ম করা স্ত্রীর উপর আবশ্যকীয় এটা আমরা জানি, প্রশ্ন হচ্ছে-


স্ত্রী কিভাবে সাংসারিক কাজে সহযোগিতা পাওয়ার জন্য বা অন্যান্য কাজে সহযোগিতা পাওয়ার জন্য স্বামীকে বলতে পারে?

যেমন স্বামী চাইলেই আদেশ সূচক বাক্যে কিছু করার জন্য বলতে পারে, স্ত্রী শুনতেও বাধ্য। স্ত্রীও কি এভাবে আদেশসূচক কোন শব্দ স্বামীকে প্রয়োগ করতে পারবে? নাকি অনুরোধমূলক শব্দ বলা উচিত।
আর আদেশ সূচক শব্দে স্বামীকে কিছু করতে বললে এটাতে যদি স্বামীর মনে খারাপ লাগা কাজ করে তাতে কি স্ত্রীর গুনাহ হবে নাকি স্বামীর এক্ষেত্রে মন খারাপ করাটাই উচিত নয়?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

কুরআনের ঘোষনা হলঃ-

ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ

নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .

 

সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র থেকে বর্ণিতঃ

বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

স্বামীর উপর স্ত্রীর হকসমূহ

১. স্ত্রীর সাথে সর্বদা ভালো আচরণ করা।

২. স্ত্রীর কোনো কথায় বা কাজে কষ্ট পেলে ধৈর্য্য ধারণ করা।

৩. উচ্ছৃঙ্খল, বেপর্দা চলাফেরা করতে থাকলে নম্র ভাষায় তাকে বোঝানো।

৪. সামান্য বিষয় নিয়ে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া-বিবাদ না করা। কথায় কথায় ধমক না দেওয়া। রাগ না করা।

৫. স্ত্রীর আত্মমর্যাদায় আঘাত করে এমন বিষয়ে সংযত থাকা। শুধু শুধু স্ত্রীর প্রতি কুধারণা না করা। স্ত্রীর সম্পর্কে উদাসীন না থাকা।

৬. সামর্থ্যানুযায়ী স্ত্রীর খোরপোষ দেওয়া। অপচয় না করা।

৭. নামায পড়া এবং দ্বীনের আহকাম মেনে চলার জন্য উৎসাহ দিতে থাকা। হায়েয-নেফাসের মাসআলাগুলো ভালোভাবে শিক্ষা দেওয়া। শরীয়ত পরিপন্থী কাজ থেকে বিরত রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করা।

৮. একাধিক স্ত্রী থাকলে তাদের মাঝে সমতা রক্ষা করা।

৯. চাহিদানুযায়ী তাদের সাথে মেলামেশা করা।

১০. অনুমতি ব্যতীত আযল অর্থাৎ মেলামেশার সময় শেষ মুহূর্তে স্বাভাবিক স্থান ত্যাগ না করা।

১১. একান্ত নিরুপায় না হলে তালাক না দেওয়া এবং প্রয়োজনের ক্ষেত্রে শরীয়ত-গৃহীত পন্থায় তালাক দেওয়া।

১২. প্রয়োজন মাফিক থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা।

১৩. মাঝে মাঝে স্ত্রীর নিকটাত্মীয়দের সাথে দেখা-সাক্ষাত করার সুযোগ করে দেওয়া।

১৪. স্ত্রীর সাথে মেলামেশার চিত্র অন্যের কাছে বর্ণনা না করা।

১৫. প্রয়োজনে স্ত্রীকে শাসন করা। সতর্ক করা। শরীয়ত যতটুকু অনুমতি দিয়েছে তার চেয়ে বেশি হাত না তোলা।

★স্বামীর উপর আবশ্যক হলোঃ-
স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা।
স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা ও খোশগল্প করা।

অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য জরুরি। 
প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।

আরো জানুনঃ- 
https://ifatwa.info/91615/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
রাসুলুল্লাহ সাঃ অনেক সময় সাংসারিক কাজে স্ত্রীদের সহযোগিতা করতেন।
এটা নৈতিক দায়িত্বও বটে।
তাই স্বামীকে বলতে হবে কেনো? স্বামী নিজেই নৈতিক দায়িত্বের জায়গা হতে সময় সুযোগ মোতাবেক সাংসারিক কাজে সহযোগিতা করবে।

হ্যাঁ যদি স্বামী অবসর,সময় সুযোগ থাকা 
সুতরাং সাংসারিক কাজে স্ত্রীকে সহযোগিতা না করে, সেক্ষেত্রে স্ত্রী সাংসারিক কাজে সহযোগিতা পাওয়ার জন্য স্বামীকে বলতে পারবে।

এক্ষেত্রে অনুরোধমূলক শব্দ বলারই পরামর্শ থাকবে। 

হ্যাঁ, যদি সাংসারিক কাজে স্ত্রীকে সহযোগিতার জন্য স্বামী খাদেমা রাখে,সেক্ষেত্রে খাদেমাই সব কাজ করে,সেক্ষেত্রে স্বামীকে সাংসারিক কাজের জন্য অনুরোধ করা যাবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...