আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
79 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (23 points)
আসসালামু আলাইকুম।
সম্মানিত শাইখ।

এক আন্টির বিয়ে হয়েছে  এক সন্তান  এর বাবার সাথে।আগের সন্তান তার মায়ের সাথে থাকে।সমস্যা আছে, সন্তানের ভরণপোষণ এর টাকা সব সময় দায়িত্ব পালন করা হয়,কিন্তু সন্তানকে দেখতে যাওয়া /অন্য প্রকার যোগাযোগ বন্ধের জন্য আন্টির দাবি থাকে।কারণ, সন্তানের মা একজন চরিত্রহীন নারী। পরকিয়ার কারণে মূলত তাদের ডিভোর্স হয়, এবং পরবর্তীতে সে আবার তালাক হওয়া সত্ত্বেও আগের হাসবেন্ড এর সাথে সন্তানের নাম দিয়ে আবার সংসার করার তীব্র চেষ্টা করছে। সেজন্য আন্টি বলেছে শুধু খরচ দেয়া যাবে,কিন্ত দেখা সাক্ষাৎ কিছুই করা যাবে না সন্তানের সাথে(সন্তানের বয়স ১ বছর)
#সন্তানের বাবার কথা হচ্ছে তার মেয়ের অভিশাপ লাগবে, হক নষ্ট হবে, তার অসুস্থতায় দেখতে না গেলে হাসপাতালে, বা যোগাযোগ না করলে।তার মতে সে ঠিক আছে। কিন্ত আন্টি জানে অই মহিলা চক্রান্ত করে হলেও আবার ফুসলিয়ে বিয়ে করবে কোন না কোন ভাবে। এইজন্য অনেক অশান্তি।
#প্রশ্ন-১: সত্যি কি হক নষ্ট হবে যেখানে আরও বেশি ফিতনা হবে?

#প্রশ্ন-২: শায়েখ সুপরামর্শ দিবেন প্লিজ,কারণ এই প্রশ্নের উত্তর আন্টি তার হাসবেন্ডকে দেখাবে।

1 Answer

0 votes
by (58,200 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

শরীয়তের বিধান মতে তালাকের পর স্ত্রী যদি অন্যত্রে বিবাহ না বসে, এ শর্তে সন্তান ছেলে হলে ৭ বছর,মেয়ে হলে ৯ বছর পর্যন্ত তার লালন পালন স্ত্রী তথা সন্তানের মা করতে পারবে। এটি তার হক,তবে তিনি অন্যত্রে বিবাহ বসলে তার হক আর থাকবেনা। এ সময়ের মধ্যে তিনি যদি তার স্বামীর সাথে ঝগড়া করে দূরে চলে যায়,তাহলে সেটি মন্দ বিষয়। সন্তানের সাথে দেখা করতে না দেওয়া তার পিতার প্রতি জুলুম।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে স্বামীর সাথে ঝগড়া  না করে,এমনিতেই নিজ প্রয়োজনে অন্য কোনো জেলায় স্ত্রী স্থানান্তরিত হতে পারবে। তবে  স্বামীর সাথে ঝগড়া করে যদি এমনটি করে,তাহলে সেটি জায়েজ নয়।

যেহেতু সন্তানের সাথে তার পিতার হক রয়েছে,যেটি অন্য দেশে গেলে বিনষ্ট হয়ে যেতে পারে,তাই স্ত্রী তথা সন্তানের মা তাকে অন্য দেশে নিয়ে যেতে পারবেনা।

আবু দাউদ শরীফের ২২৭৬ নং হাদীস শরীফে এসেছেঃ

حَدَّثَنَا مَحْمُودُ بْنُ خَالِدٍ السُّلَمِيُّ، حَدَّثَنَا الْوَلِيدُ، عَنْ أَبِي عَمْرٍو يَعْنِي الْأَوْزَاعِيَّ، حَدَّثَنِي عَمْرُو بْنُ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو، أَنَّ امْرَأَةً قَالَتْ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّ ابْنِي هَذَا كَانَ بَطْنِي لَهُ وِعَاءً، وَثَدْيِي لَهُ سِقَاءً، وَحِجْرِي لَهُ حِوَاءً، وَإِنَّ أَبَاهُ طَلَّقَنِي، وَأَرَادَ أَنْ يَنْتَزِعَهُ مِنِّي، فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَنْتِ أَحَقُّ بِهِ مَا لَمْ تَنْكِحِي

আব্দুল্লাহ ইবনু আমর (রাযি.) সূত্রে বর্ণিত। একদা এক মহিলা বললো, হে আল্লাহর রাসূল! এই সন্তানটি আমার গর্ভজাত, সে আমার স্তনের দুধ পান করেছে এবং আমার কোল তার আশ্রয়স্থল। তার পিতা আমাকে তালাক দিয়েছে। এখন সে সন্তানটিকে আমার থেকে কেড়ে নিতে চাইছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেনঃ তুমি অন্যত্র বিয়ে না করা পর্যন্ত তুমিই তার অধিক হকদার। (আহমাদ, হাকিম। ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেন: সনদ সহীহ।)

দারুল উলুম দেওবন্দ এর 19755 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে সাত বছর ছেলে সন্তান আর নয় বছর মেয়ে সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব তার মার হয়।

কিন্তু খরচ বাবার।

এর পর পিতা নিতে পারবে,যদি মায়ের কাছে সন্তানের থাকার দরুন তার আখলাক মন্দ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে,তাহলে তার আগেই তাকে তার বাবা নিতে পারবে।

মা ঝগড়া করে সন্তানকে নিয়ে অন্যত্রে চলে যাওয়া,অনেক মন্দ বিষয়। মোট কথা পিতার সাথে তার দেখা করতে না দেওয়া, এটি সন্তানের বাবার উপর জুলুম।

নয় বছর পর মেয়ে সন্তানের লালন পালনের দায়িত্ব তার পিতার।

জামিয়া বিন নুরি পাকিস্তানের 144001200246 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে সাত বছর ছেলে সন্তানের আর নয় বছর মেয়ে সন্তানের মা তার লালন পালন করতে পারবে,খরচ দিবে তার পিতা।

তবে শর্ত হলো তার মা অন্যত্রে বিবাহ না বসা। (কিতাবুন নাওয়াজেল ১০/১৪৩)

যদি বিবাহ হয়ে যায়,তাহলে তার মায়ের হক আর থাকবেনা।

যদি মা খারাপ পথে যায়,তাহলে মেয়ে সন্তানের নয় বছর পর্যন্ত সন্তানের নানি (নানি মারা গেলে সন্তানের দাদি) তার লালন পালন করতে পারবে।

ছেলে সন্তান সাত বছর আর মেয়ে সন্তান নয় বছর হওয়ার পার তার লালন পালনের দায়িত্ব তার পিতার। এক্ষেত্রে কেউই তার হক নষ্ট করতে পারবেনা।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

সন্তানের ভরণপোষণের দায়িত্ব পিতার উপর। সন্তানের অসুস্থতাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে তার খোঁজ খবর রাখা পিতার  কর্তব্য। এক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্ত্রী স্বীয় স্বামীকে বাধা প্রদান করতে পারবে না। তবে হ্যাঁ!  যদি  স্বামী চেতনায় পড়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে এমতাবস্থায় হেমা ও ভালোবাসার সাথে  স্বামীকে বোঝাবে। এবং স্বামীকে এ বিষয়ে বোঝাবে যে  তালাক দেওয়ার পর  প্রথম স্ত্রীর সাথে  সাক্ষাৎ করা  স্বামীর জন্য  জায়েজ নেই।  শুধু  সন্তানের সাথে  সাক্ষাৎ করার  অনুমতি রয়েছে। বিধায়  স্বামী  উচিত  সর্বোচ্চ সর্তকতা অবলম্বন করে ফেতনা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা এবং সন্তানের হক যেন নষ্ট না হয় সেদিকেও খেয়াল রাখা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...