আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
65 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম। আমার দুইটি প্রশ্ন ছিলো।

১/ একই অপরাধের জন্য মহান আল্লাহর কাছে কি সবসময় ক্ষমা চাওয়া যাবে?
অনেকেই বলে থাকে, একই অপরাধের জন্য মহান আল্লাহর কাছে সবসময় ক্ষমা চাইলে আল্লাহর সাথে বান্দার দূরত্ব সৃষ্টি হয়।
অতীতের কোনো অপরাধ স্মরণ করে কি মহান আল্লাহর কাছে সবসময় ক্ষমা চাওয়া যাবে?

২/ তিন তালাকের পর সহবাসে জন্ম নেওয়া সন্তান কি তার পিতার মিরাসের অংশীদার হবে নাকি তার মাতার মিরাসের অংশীদার হবে?

উক্ত দুইটি প্রশ্নের উওর দেওয়ার জন্য বিনীত অনুরোধ রইলো।

1 Answer

0 votes
by (556,350 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
তওবার পর তওবার উপর অটল না থাকতে পেরে আবারো একই গুনাহ হয়ে গেলে পুনরায় সেই গুনাহের তওবা করা যাবে।

খালেস দিলে তওবা করলে,তওবার শর্তাবলী মেনে মেনে তওবা করলে আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন।

(০২)
হাদীস শরীফে  এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مَنْصُورٍ، وَمُسَدَّدٌ، قَالَا: حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُرْوَةَ، عَنْ عَائِشَةَ، اخْتَصَمَ سَعْدُ بْنُ أَبِي وَقَّاصٍ، وَعَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ، فَقَالَ سَعْدٌ: أَوْصَانِي أَخِي عُتْبَةُ إِذَا قَدِمْتُ مَكَّةَ أَنْ أَنْظُرَ إِلَى ابْنِ أَمَةِ زَمْعَةَ فَأَقْبِضَهُ فَإِنَّهُ ابْنُهُ، وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ: أَخِي ابْنُ أَمَةِ أَبِي، وُلِدَ عَلَى فِرَاشِ أَبِي، فَرَأَى رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ شَبَهًا بَيِّنًا بِعُتْبَةَ، فَقَالَ: الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ، وَاحْتَجِبِي عَنْهُ يَا سَوْدَةُ،

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। একদা সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাযি.) ও ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ (রাযি.) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট যাম‘আহর দাসীর এক সন্তানের বিষয়ে বিবাদ নিয়ে উপস্থিত হলো। সা‘দ (রাযি.) বললেন, আমার ভাই ‘উতবাহ আমার কাছে ওয়াসিয়াত করেছে, আমি মক্কায় এলে যেন যাম‘আহর দাসীর সন্তানকে আমার অধিকারে গ্রহণ করি। কারণ ওটা তার ছেলে। কিন্তু ‘আবদ ইবনু যাম‘আহ বললেন, এটা আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর সন্তান, আমার পিতার বিছানায় তার জন্ম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্তানটির মধ্যে ‘উতবাহর সুস্পষ্ট সাদৃশ্য দেখতে পেয়ে বললেনঃ সন্তান তার বিছানা যার। আর যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। তিনি সাওদা (রাযি.) বললেনঃ তার থেকে পর্দা করো। যিনাকারীর জন্য রয়েছে পাথর। মুসাদ্দাদের বর্ণনায় রয়েছেঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ ‘হে ‘আব্দ! সে তোমার ভাই।’
(আবু দাউদ ২২৭৩)

وَعَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ : كَانَ عُتْبَةُ بْنُ أَبِىْ وَقَّاصٍ عَهِدَ إِلٰى أَخِيهِ سَعْدِ بْنِ أَبِىْ وَقَّاصٍ : أَنَّ ابْنَ وَلِيدَةِ زَمْعَةَ مِنِّىْ فَاقْبِضْهُ إِلَيْكَ فَلَمَّا كَانَ عَامُ الْفَتْحِ أَخَذَه سَعْدٌ فَقَالَ : إِنَّهُ ابْنُ أَخِىْ وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ : أَخِىْ فَتَسَاوَقَا إِلٰى رَسُوْلِ اللّٰهِ ﷺ فَقَالَ سَعْدٌ : يَا رَسُوْلَ اللّٰهِ! إِنَّ أَخِىْ كَانَ عَهِدَ إِلَىَّ فِيهِ وَقَالَ عَبْدُ بْنُ زَمْعَةَ : أَخِىْ وَابْنُ وَلِيْدَةَ أَبِىْ وُلِدَ عَلٰى فِرَاشِه فَقَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «هُوَ لَكَ يَا عَبْدُ بْنَ زَمْعَةَ الْوَلَدُ لِلْفِرَاشِ وَلِلْعَاهِرِ الْحَجَرُ» ثُمَّ قَالَ لِسَوْدَةَ بِنْتِ زَمْعَةَ : «احْتَجِبِىْ مِنْهُ» لِمَا رَأَى مِنْ شَبَهِه بِعُتْبَةَ فَمَا رَاٰهَا حَتّٰى لَقِىَ اللّٰهَ وَفِىْ رِوَايَةٍ : قَالَ : «هُوَ أَخُوكَ يَا عَبْدُ بْنَ زَمَعَةَ مِنْ أَجْلِ أَنَّه وُلِدَ عَلٰى فِرَاشِ أَبِيهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيْهِ

‘আয়িশাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কুরায়শ নেতা ‘উতবাহ্ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (উহুদ যুদ্ধে কাফির অবস্থায় যে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর দন্ত মুবারক শহীদ করেছিল) সে তার ভাই সা‘দ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাঃ)-এর নিকট মৃত্যুর পূর্বে ওয়াসিয়্যাত করে যায় যে, কুরায়শ নেতা যাম্‘আহ্-এর দাসীর গর্ভজাত সন্তান আমার ঔরসের, তুমি তাকে (স্বীয় ভাইয়ের পুত্ররূপে) নিয়ে এসো। তিনি [‘আয়িশাহ্ (রাঃ)] বলেন, মক্কা বিজয়ের সময়ে সা‘দ তাকে গ্রহণ করে বলল, এ আমার ভাইয়ের পুত্র। এদিকে যাম্‘আহ্-এর পুত্র ‘আব্দ (অস্বীকৃতি জানিয়ে বাধা সৃষ্টি করল), এ তো আমার ভাই। অতঃপর উভয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট উপস্থিত হলো।

সা‘দ বললেন, হে আল্লাহর রসূল! আমার ভাই একে গ্রহণ করার জন্য আমাকে ওয়াসিয়্যাত করেছে। এর প্রতিবাদে ‘আব্দ ইবনু যাম্‘আহ্ বলল, আমার ভাই, আমার পিতার দাসীর গর্ভের সন্তান, আমার পিতার শয্যাসঙ্গিনীর উৎসে জন্মেছে। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে ‘আবদ ইবনু যাম্‘আহ্! সে তোমারই অংশিদারিত্ব হবে। শয্যা যার সন্তান তার আর ব্যভিচারীর জন্য পাথর (অর্থাৎ- বঞ্চিত হওয়া)। অতঃপর তিনি স্বীয় সহধর্মিণী সাওদাহ্ বিনতু যাম্‘আহ্ (রাঃ)-কে সম্বোধন করে বললেন, তুমি ঐ সন্তান হতে পর্দা করবে, সে তোমার ভাই নয়। কারণ তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পুত্রটির মাঝে ‘উত্বার গঠন-প্রকৃতির সাদৃশ্য দেখতে পান। অতঃপর ছেলেটি মৃত্যু পর্যন্ত সাওদার সামনে আসেনি। অপর এক বর্ণনায় আছে- হে ‘আব্দ ইবনু যাম্‘আহ্! ঐ ছেলেটি তোমার ভাই, কেননা সে তার পিতার শয্যাসঙ্গিনীর উৎসে জন্মগ্রহণ করেছে।

(সহীহ : বুখারী ২৭৪৫, ৪৩০৩, মুসলিম ১৪৫৭, আবূ দাঊদ ২২৭৩, নাসায়ী ৩৪৪৮, আহমাদ ২৪৯৭৫, সহীহাহ্ ২১০৮, সহীহ আল জামি‘ ৭১৬১।)

আরো জানুনঃ  

শরীয়তের বিধান হলো, যেনার পর সন্তান হলে যেনাকারী যদি সেই সন্তানের বাবা হওয়ার দাবী করে,এবং যেনার আলোচনা না করে, তাহলে ঐ বাচ্চার বংশ তার থেকে সাব্যস্ত হবে।

فتاوی عالمگیری:

"ولو طلقها ثلاثا، ثم تزوجها قبل أن تنكح زوجا غيره فجاءت منه بولد ولا يعلمان بفساد النكاح فالنسب ثابت، وإن كانا يعلمان بفساد النكاح يثبت النسب أيضا عند أبي حنيفة - رحمه الله تعالى - كذا في التتارخانية ناقلا عن تجنيس الناصري."

(1 / 540،كتاب الطلاق، الباب الخامس عشر في ثبوت النسب، ط: رشيدية)

অনুবাদঃ-
যদি সে তাকে তিনবার তালাক দেয়, অতঃপর সে অন্য স্বামীকে বিয়ে করার পূর্বে তাকে বিয়ে করে এবং তার থেকে তার একটি সন্তান হয় এবং তারা জানত না যে বিবাহটি অবৈধ, তাহলে বংশ স্থাপিত হবে এবং যদি তারা জানত যে বিবাহটি অবৈধ। , আবু হানিফার মতে তবুও বংশ প্রমাণিত হবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
তিন তালাকের পর সহবাসে জন্ম নেওয়া সন্তান তার পিতার মিরাসের অংশীদার হবে।

এক্ষেত্রে পিতার দিক হতে তার বংশ সাব্যস্ত হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...