আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
94 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (38 points)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ
আমাকে গতকাল দেখতে এসেছে,আমি প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে পড়ি,আমার এক্সাম চলছে বাসায় আমাকে বলে নিয়ে গেছে দেখতে আসবে।মহিলারা আসবে আমি বলেছিলাম পুরুষ না আসতে যাওয়ার পর ছেলের মা আর বাবা আসে।

মাকে আমি মুখ দেখিয়েছি,এরপর বাবা সামনে যেতে হবে আমি পর্দা করেই গিয়েছিলাম অনেক প্রশ্ন করেছে এরপর আমি চলে আসি। বাবা বলছ,,  আমার পরিবারের মানুষের সাথ,,
আমাকে ত চা দিবে একসময় এইটা অইটা করবে তখন?
তারপর ও মনের উপর জোর নাই।আমি আমার পরিবারকে বুঝাতে পারিনি বিয়ে হলে তখন শশুর হবে তখন ত জায়েজ।

সবাই আমাকে অনেক প্রেশার দিয়ে নিয়ে যায় আমি অনেক কান্না করেছি তাতেও তাদের মন গলেনি,মুরুব্বি মানুষ আমার দিকে ত খারাপ ভাবে তাকাবে না।মনের পর্দা বড় পর্দা।

আমি গিয়েছি,এক মিনিট ও থাকিনি চলে আসি।

এরপর আমি আমার ইউনিভার্সিটি উদ্দেশ্য রওনা দিচ্ছিলাম।তখন এলাকার কিছু দাদি কাকি,ছিলো দেখতে আসলে এমন মানুষ আসেই আমাদের অইদিকে।

এখন ছেলেকে ছবি দিতে হবে বললাম ছবি কেন দিব,, ছবি দিবনা দেখেই ত ঢাকা থেকে আসছি সামনাসামনি দেখার জন্য।

আমাকে ইচ্ছামত কথা শুনিয়েছে।এবং বলেছে তুই ত মাদরাসায় পড়স নাই,এমন পর্দা কেউ করে না,এখন ছেলের বাবা যদি সন্দেহ করে যে মনে হয় প্রেম আছে তখন?

এমন পর্দা  কেউ করেনা,বিয়ের পরে জামাইকে মানাইতে পারলে করবি সব তো তোরই করতে হবে বড় ছেলের বউ হিসাবে,,

ছেলের বোন দাওরায় পড়ছে উনার মা ও এইসব বলে গেছে,আমার মেয়ের জামাই আসবে তাদের খাওয়াবে এমন আর কি কথা বলতেছিল।

পর্দা করলে এমন কঠিন হয়না নরম হইতে হয়,বললাম আমি ত কখনই অবাধ্য হইনাই এইখানে আল্লাহর আদেশ আমাকে তা পালন করতে হবে বাবা মা উপরে তিনি।আমার হারাম রিলেশন আছে এই অপবাদ দিয়েছে আস্তাগফিরুল্লাহ।

শুধু মাত্র আমি ছেলের বাবার সামনে যাবো না আর কান্না কেন করছিলাম এই জন্য।

আমার আম্মুর কথা ছিলো সবার সামনে কেন এইসব বলছি,মান সম্মান গেছে,সবাই যা বলছে মেনে নিতাম আর কি তখন উনি আমাকে মেরেছে সবার সামনে এবং সবাইকে বলছে ওর বিয়া ও বসবে।আমাকে পাত্র আনতে বলে আমি কই থেকে আনবো বললাম?

তারপর বলছে যদি না আনতে পারিস আমরা যা বলব তাই।

যখন আম্মুকে আর পাশে পাইনি তখন আমি ছবিও দিয়ে দিয়েছি।

আমার এই দুনিয়ায় কেউ নাই,আমার বাকস্বাধীনতাও নেই ,, পছন্দ অপছন্দ অনেক দুরের বিষয়। এবং বয়স ও হয়ে যাচ্ছে এখন আমি কি করবো?

শুধু রবকে বলেছি,যেই আবরন আমাকে দয়া করে দান করেছেন সেই আবরন এর মর্যাদা আমি রক্ষা করতে পারিনি এই আবরন আমাকে তাহলে কেন দেওয়া হয়েছে।?

আমি এখন কি করবো?

অই ছেলেকে বিয়ে করলে আমার জীবন নরক হয়ে যাবে আল্লাহু আকবর।

পরিবারকেও আমার পছন্দ হয়নি,আগেই বলছে লেখাপড়া করা যাবেনা আমার সাথে থাকবে মানে (ছেলের মায়ের সাথে)

লেখাপড়া ছেড়ে দিতে আপত্তি নেই,যদি দ্বীনদার পরিবার হয় আমার,, কিন্তু এমন পরিবারের জন্য আছে অবশ্যই।

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/8201/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে, বিবাহের ক্ষেত্রে কুফুল মিল রাখতে হয়,

রাসূল সা: ‘কুফু’র বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। কুফুর মিল না হলে পরস্পরে মুহাব্বত তেমন হয়না।

অনেক সময় বিবাহও ভেঙ্গে যায়।

,

তাই কুফু মিল রাখতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ خُلُقَهُ وَدِينَهُ فَزَوِّجُوهُ إِلَّا تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের নিকট এমন কোন ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এলে, যার চরিত্র ও ধর্মানুরাগ সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সাথে (তোমাদের মেয়েদের) বিবাহ দাও। তোমরা যদি তা না করো, তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ব্যাপক বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়বে। (ইবনে মাজাহ ১৯৬৭,তিরমিযী ১০৮৪, ইরওয়াহ ১৮৬৮, সহীহাহ ১০২২।)

,

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَخَيَّرُوا لِنُطَفِكُمْ وَانْكِحُوا الْأَكْفَاءَ وَأَنْكِحُوا إِلَيْهِمْ

 আয়িশাহ্ (রাঃ)  থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা ভবিষ্যত বংশধরদের স্বার্থে উত্তম মহিলা গ্রহণ করো এবং সমতা (কুফু) বিবচেনায় বিবাহ করো, আর বিবাহ দিতেও সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখো। (ইবনে মাজাহ ১৯৬৮)

 

আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4541/

,

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

.

আপনার পরিবারকে এই কুফুর বিষয় বুঝাতে হবে এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে দুআ করতে থাকা যাতে দ্বীনি পরিবেশেই যেনো আপনার বিবাহ হয়সুতরাং জোড় করে কোথাও আপনাকে আপনার পরিবারের জন্য বিয়ে দেয়া জায়েয হবে না।

যদি তারপরও তারা আপনাকে জোড় করে অন্যত্রে বিবাহ দেয়, তাহলে একটি বিষয় হলো এক্ষেত্রে স্বামীকে মন থেকে মুহাব্বত করা শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব বিধান নয়। চাইলেই আপনি মন থেকে মুহাব্বত নাও করতে পারেন।

,

তবে আল্লাহই এক্ষেত্রে মুহাব্বত ঢেলে দেন। সূরা রুমের ২১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ

وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ

আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে আর একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের সঙ্গিনীদেরকে সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা ওদের নিকট শান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালোবাসা ও মায়া-মমতা সৃষ্টি করেছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে।

,

সহিহ মুসলিমে (১৪৬৯) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “কোন মুমিন স্বামী যেন মুমিন স্ত্রীকে ঘৃণা না করে। যদি তার কোন একটি আচরণ অপছন্দনীয় হয় অন্য আরেকটি আচরণ সন্তোষজনক হবে।”

,

তোমাদের মধ্যে সেই নারী উত্তম, যে তার স্বামীর কাছে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: হাদিস-১১৬২)

,

আপনি আপনার স্বামীকে বুঝিয়ে দ্বীনের পথে নিয়ে আসবেন। দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে পাঠিয়ে দিবেন বা কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে পাঠাবেন। ইনশাআল্লাহ সে হেদায়াতের পথে চলবে।

.

দুআ করি আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য একজন দ্বীনদার পাত্রের ব্যবস্থা করে দেন। একটি দ্বীনদার ফ্যামিলির ব্যবস্থা করে দেন। আপনিও আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া করতে থাকুন। বিশেষ করে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে দোয়া করতে থাকুন।

পরিবারের কথা-বার্তায় ধৈর্য ধারণ করুন। তাদের জন্য হেদায়েতের দোয়া করতে থাকুন। তাদেরকে আরো ভালোভাবে বোঝানোর চেষ্টা করুন। যদি তারা আপনার নামে কোন অপবাদ দেয় তাহলে অবশ্যই তাদের অনেক মারাত্মক গুনাহ হবে। কখনো আল্লাহর রহমত হতে নৈরাশ হবেন না।

উল্লেখ্য যে, এভাবে ছেলে পক্ষকে পাত্রীর ছবি দেওয়াও জায়েজ নেই। এটাও তাদেরকে বুঝাবেন। ঐ ছেলের সাথে তো আপনার বিয়ে নাও হতে পারে। অথচ তাদের কাছে আপনার ছবি থেকে যাবে। ছেলে চাইলে সরাসরি এসে আপনাকে দেখবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

No related questions found

...