ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/8201/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে, বিবাহের ক্ষেত্রে কুফুল মিল
রাখতে হয়,
রাসূল সা: ‘কুফু’র বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। কুফুর
মিল না হলে পরস্পরে মুহাব্বত তেমন হয়না।
অনেক সময় বিবাহও ভেঙ্গে যায়।
,
তাই কুফু মিল রাখতে হবে। হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَتَاكُمْ مَنْ تَرْضَوْنَ خُلُقَهُ وَدِينَهُ فَزَوِّجُوهُ إِلَّا تَفْعَلُوا تَكُنْ فِتْنَةٌ فِي الْأَرْضِ وَفَسَادٌ عَرِيضٌ
আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমাদের
নিকট এমন কোন ব্যক্তি বিবাহের প্রস্তাব নিয়ে এলে, যার চরিত্র ও ধর্মানুরাগ সম্পর্কে তোমরা সন্তুষ্ট, তার সাথে (তোমাদের মেয়েদের) বিবাহ দাও। তোমরা যদি তা না করো, তাহলে পৃথিবীতে বিপর্যয় ও ব্যাপক বিশৃংখলা ছড়িয়ে পড়বে। (ইবনে মাজাহ ১৯৬৭,তিরমিযী
১০৮৪,
ইরওয়াহ ১৮৬৮, সহীহাহ ১০২২।)
,
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم تَخَيَّرُوا لِنُطَفِكُمْ وَانْكِحُوا الْأَكْفَاءَ وَأَنْكِحُوا إِلَيْهِمْ
আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ তোমরা
ভবিষ্যত বংশধরদের স্বার্থে উত্তম মহিলা গ্রহণ করো এবং সমতা (কুফু) বিবচেনায় বিবাহ
করো,
আর বিবাহ দিতেও সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখো। (ইবনে মাজাহ ১৯৬৮)
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/4541/
,
★প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
.
আপনার পরিবারকে এই কুফুর বিষয় বুঝাতে হবে এবং আল্লাহ
তায়ালার কাছে দুআ করতে থাকা যাতে দ্বীনি
পরিবেশেই যেনো আপনার বিবাহ হয়। সুতরাং জোড়
করে কোথাও আপনাকে আপনার পরিবারের জন্য বিয়ে দেয়া জায়েয হবে না।
যদি তারপরও তারা আপনাকে জোড় করে অন্যত্রে বিবাহ দেয়, তাহলে একটি বিষয় হলো এক্ষেত্রে স্বামীকে মন থেকে মুহাব্বত
করা শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব বিধান নয়। চাইলেই আপনি
মন থেকে মুহাব্বত নাও করতে পারেন।
,
তবে আল্লাহই এক্ষেত্রে মুহাব্বত ঢেলে দেন। সূরা রুমের ২১ নং আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেনঃ
وَمِنْ
آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُم مِّنْ أَنفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِّتَسْكُنُوا إِلَيْهَا
وَجَعَلَ بَيْنَكُم مَّوَدَّةً وَرَحْمَةً ۚ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَآيَاتٍ لِّقَوْمٍ
يَتَفَكَّرُونَ
আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে আর একটি নিদর্শন এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের সঙ্গিনীদেরকে
সৃষ্টি করেছেন,
যাতে তোমরা ওদের নিকট শান্তি পাও এবং তোমাদের মধ্যে
পারস্পরিক ভালোবাসা ও মায়া-মমতা সৃষ্টি করেছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে অবশ্যই
বহু নিদর্শন রয়েছে।
,
সহিহ মুসলিমে (১৪৬৯) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত তিনি
বলেন,
রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন: “কোন
মুমিন স্বামী যেন মুমিন স্ত্রীকে ঘৃণা না করে। যদি তার কোন একটি আচরণ অপছন্দনীয় হয়
অন্য আরেকটি আচরণ সন্তোষজনক হবে।”
,
‘তোমাদের মধ্যে সেই নারী উত্তম, যে তার স্বামীর কাছে উত্তম।’ (জামে তিরমিজি: হাদিস-১১৬২)
,
★আপনি আপনার
স্বামীকে বুঝিয়ে দ্বীনের পথে নিয়ে আসবেন। দাওয়াত ও তাবলিগের মেহনতে পাঠিয়ে দিবেন বা কোনো হক্কানী শায়েখের কাছে পাঠাবেন। ইনশাআল্লাহ সে হেদায়াতের পথে চলবে।
.
দুআ করি আল্লাহ তায়ালা আপনার জন্য একজন দ্বীনদার পাত্রের ব্যবস্থা
করে দেন। একটি দ্বীনদার ফ্যামিলির ব্যবস্থা করে দেন। আপনিও আল্লাহ তাআলার কাছে দোয়া
করতে থাকুন। বিশেষ করে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে দোয়া করতে থাকুন।
পরিবারের কথা-বার্তায় ধৈর্য ধারণ করুন। তাদের জন্য হেদায়েতের
দোয়া করতে থাকুন। তাদেরকে আরো ভালোভাবে বোঝানোর চেষ্টা করুন। যদি তারা আপনার নামে
কোন অপবাদ দেয় তাহলে অবশ্যই তাদের অনেক মারাত্মক গুনাহ হবে। কখনো আল্লাহর রহমত হতে
নৈরাশ হবেন না।
উল্লেখ্য যে, এভাবে ছেলে পক্ষকে পাত্রীর ছবি দেওয়াও জায়েজ
নেই। এটাও তাদেরকে বুঝাবেন। ঐ ছেলের সাথে তো আপনার বিয়ে নাও হতে পারে। অথচ তাদের
কাছে আপনার ছবি থেকে যাবে। ছেলে চাইলে সরাসরি এসে আপনাকে দেখবে।