আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
58 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (20 points)

আসসালামু আলাইকুম। আমি স্টুডেন্ট। বাসায় আম্মু, আমি ও ছোট বোন থাকে। আমরা ছাড়া আরো দুই জন ভাড়াটিয়া আছে। তারা দরজায় নক করলে আম্মু খুলে দিয়ে  বসতে দিয়ে কথাবার্তা বলে। সামনের মাসে ২১ তারিখ থেকে আমার অনার্স পরীক্ষা। পরীক্ষার রুটিন দেওয়ার আগে আমিও উনাদের সাথে বসে যথাসম্ভব কথাবার্তা বলতাম।
এখন আমি আমার রুমে  পড়তে বসা  অবস্থায় তারা আসলে পরীক্ষার পড়ার চাপের জন্য রুম থেকে বের হয়ে ডাইনিং রুম বা অন্য রুমে গিয়ে উনাদের সাথে কথা বলতে যাই না। উনারাও কেও আমার রুমে আসে না। আম্মুর সাথে গল্প সল্প করে চলে যায়। গতকাল উনারা আম্মুকে বলছে আমি কেন উনারা গেলে তাদের সাথে কথা বলি না। যতই পরীক্ষার পড়া থাক তবুও কথা বলা উচিত আরো নাকি কিছু বলেছে।


শারীয়াহ দৃষ্টিতে এক্ষেত্রে আমার করণীয় কি?
তারা বাসায় আসলে আমি রুম থেকে উঠে গিয়ে অন্য ডাইনিং বা অন্য রুমে গিয়ে সালাম দিয়ে, কেমন আছেন বলে তারপর বলবো আমার পরীক্ষা আমি পড়তে গেলাম। এভাবে বলবো?
নাকি পড়া অবস্থায় আমার রুম থেকেই সালাম দিয়ে কেমন আছেন, আমার পরীক্ষা এসব বলবো?
নাকি কিছুই না বলে চুপচাপ আমার মনে পড়তে থাকবো?<!--/data/user/0/com.samsung.android.app.notes/files/clipdata/clipdata_bodytext_240927_102049_895.sdocx-->

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://www.ifatwa.info/2616  নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,

ভাত খাওয়ার সময় সালাম দেয়া নিষেধ এ মর্মে কোন হাদীস নেই!

ইমাম আজলুনী রহঃ বলেনঃ

 ( ﻻ ﺳﻼﻡ ﻋﻠﻰ ﺃﻛﻞ ) ﻟﻴﺲ ﺑﺤﺪﻳﺚ،

'খাওয়ার সময় সালাম নেই' এই কথাটা হাদীস নয়।এরকম কোনো হাদিস পাওয়া যায় নি।

কাশফুল খিফা ও মুযিলুল ইলবাস;(২/৩৬২)

তবে মুখে খাবারের লোকমা থাকা অবস্থায় সালাম দেয়া যাবে না।কেননা তখন উক্ত ব্যক্তির জন্য জবাব দেয়াটা কষ্টকর হবে।

যেমন ইমাম নববী রহ বলেন.....

 " ﻭﻣﻦ ﺫﻟﻚ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻳﺄﻛﻞُ ﻭﺍﻟﻠﻘﻤﺔ ﻓﻲ ﻓﻤﻪ ، ﻓﺈﻥ ﺳﻠَّﻢ ﻋﻠﻴﻪ ﻓﻲ ﻫﺬﻩ ﺍﻷﺣﻮﺍﻝ ﻟﻢ ﻳﺴﺘﺤﻖّ ﺟﻮﺍﺑﺎً ، ﺃﻣﺎ ﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻋﻠﻰ ﺍﻷﻛﻞ ﻭﻟﻴﺴﺖ ﺍﻟﻠﻘﻤﺔُ ﻓﻲ ﻓﻤﻪ ﻓﻼ ﺑﺄﺱَ ﺑﺎﻟﺴﻼﻡ ،

ﻭﻳﺠﺐُ ﺍﻟﺠﻮﺍﺏ

তরজমাঃ- ইমাম নববী রহ কোন সময় সালাম দেয়া উচিৎ এবং কোন সময় অনুচিৎ তার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেনঃঐ সময় সালাম দেয়া মাকরুহ যখন কেউ খাওয়ার মধ্যে থাকে এবং খাদ্য তার মুখে থাকে, যদি এমতাবস্থায় কাউকে সালাম দেয়া হয়,তাহলে তার উপর সালামের উত্তর দেয়া ওয়াজিব হবে না।কিন্তু যদি কেউ খাবার টেবিলে বা খাদ্য খেতে থাকে, এবং তার মূখের খাবার নয় এমন অবস্থায় কেউ তাকে সালাম প্রদান করে তাহলে সালামের উত্তর দেয়া তার উপর ওয়াজিব।(আল-মিনহাজ-১/২৫১)

অথবা কেউ কেউ এ দৃষ্টিকোণেও খাবের সময় সালাম না দেয়ার কথা বলে থাকেন যে,সালামের অর্থ হল মুসাফাহা অর্থাৎ খাবার সময় মুসাফাহা করা যাবে না।

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ "আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায় " রয়েছে,

ولا يسلم على من كان منشغلا بالأكل واللقمة في فمه، فإن سلم لم يستحق الجواب، أما إذا سلم عليه بعد البلع أو قبل وضع اللقمة في فمه فلا يتوجه المنع ويجب الجواب،

খাবার মূখে রয়েছে এমন অবস্থায় সালাম দেয়া যাবে না।যদি কেউ এমতাবস্থায় সালাম দেয় তাহলে সে সালামের জবাব পাওয়া যোগ্য নয়।খাবার গিলে ফেলার পর অথবা মুখে খাবার দেয়ার পূর্বে যদি কেউ তাকে সালাম করে তাহলে এমতাবস্থায় সালামের জবাব দেয়া তার উপর ওয়াজিব।{২৫/১৬৫}

হাকিমুল উম্মত থানভী রাহ আদাবুল মু'আশারাত গ্রন্থে খাবার সময় সালাম প্রদাণ কে এ দৃষ্টিকোনে মাকরুহ বলেছেন যে, এমতাবস্থায় আহারকারীর নিকট খাবার গ্রহণের জন্য সওয়াল করা হয়ে যায়।

তখন অর্থ হয়তো এই দাড়াবে যে,যে ব্যক্তি সালাম করলসে যেন সালামকৃত ব্যক্তির নিকট খাবারের সুওয়াল করছে।

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উত্তম হবে যে, আপনি তাদের সামনে গিয়ে সালাম দিবেন। অতপর নিজের পরীক্ষার জন্য তাদের থেকে দোয়া চাইবেন এবং ভিন্ন রুমে পড়তে যাবেন। এতে কোন সমস্যা নেই। কারণ, তারা মুরব্বী হিসেবে তাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে এমনটি করা উচিত। যদিও রুমে বসেই সালাম দেওয়া যাবে, তবে ক্ষেত্র বিশেষে এটি আদবের পরিপন্থী কাজ। বিধায় তা এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...