আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
86 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (2 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমার কিছু প্রশ্ন রয়েছে যেগুলো বিবরণসহ নিম্নে দেয়া হল:

১.আমাদের সংসার আমার স্বামী এবং আমার শশুর দুইজনের খরচে চলে।আমার স্বামী মোটামুটি একটা ভালো এমাউন্ট দেন পরিবারে যেটা দিয়ে খাবার খরচ সহ প্রয়োজনীয় আরো কিছু চলে।আর শশুরের টাকা ভাড়া দেয়া হয়।আমার শশুর বাড়ীর সকলে কৃপণ টাইপ। আমি যদি আমার বাবার বাড়ি কিছু দিতেও চাই তাদের অনুমতি মন থেকে না পাবার চান্স বেশি।আমার স্বামী বলেছেন যেহেতু তিনি এখানে ইনভেস্ট করেন সুতরাং আমি যা খুশি বিনা অনুমতিতে নিতে পারি এবং আমার বাবার বাড়ি ও দিতে পারি। আমার প্রশ্ন এখন যদি আমি আমার সংসার থেকে কিছু নিয়ে বাবার বাড়ি দেই এটা কি জায়েজ হবে?

২.বিয়ের পরে আমার স্বামী বলেছেন আপনার টাকা আর আমার টাকা বলে কিছু নেই সব আমাদের(মন থেকেই বলেছেন)এবং এটাও বলেছেন আপনি নিজের ইচ্ছা মত আমার কাছ থেকে(যেখানে রাখে আর কি) টাকা নিতে কোনো পারমিশন লাগবে না। ইভেন একবার নয় আমি নিয়ে যদি তাকে বলি তখন ও সে বলে তাকে কেন বলি।আর কোনো দাবি নেই।আমার স্বামী প্রচুর টাকা খরচ করেন অযথা।এই কারণে আমি অনেক সময়ই কিছু টাকা সরিয়ে রাখি কারণ তার দ্বারা টাকা রাখা সম্ভব নয়।এই যে তাকে না বলে টাকা রাখি এটা কি গুনাহের কাজ?সে তো বলেই দিয়েছে আমি নিতে পারি তার দাবি নেই।যেহেতু আমি কোনো খরচ করি না,বাহিরে ঘুরাঘুরি ও করি না,সো খরচ হয় না বললেই হয়।এ কারণে আমি টাকা সরিয়ে রাখি।

৩.বিয়ের আগে যে সকল পাপ স্ট্রিক্টলি মেইনটেইন করেছি বিয়ের পর সেসকল পাপ ছাড়া যেন দিন ই কাটছে না।নিজেকে খুব করে কন্ট্রোল করলেও রেজাল্ট শুন্য।বিশেষ করে গিবত থেকে বাঁচতে পারছি না।দেখা যায় শশুর শাশুড়ী কিংবা ননদের কথা স্বামীকে বলাই লাগে না পারতে।আগে বলতাম না কিন্তু এখন আর ওয়ে পাই না।এগুলো কি গিবত?তাদের খুশি রাখাও অনেক টাফ।এছাড়া দেখা যায় তারা সারাদিন অন্যের গিবত করে চলে, না বললেও শুনে না।সেই সাথে আমার নামেও অযাচিত কথা বলে বেড়ায়,আমার পরিবারকে নিয়ে খারাপ মন্তব্য করে।আমার স্বামী প্রটেস্ট করতে গেলে বরং আরো কথা শুনে।তিনি নিজেও ভয় পান মা-বাবা না কষ্ট পায়।এজন্য আমরা ঠিক করেছি আমরা আলাদা থাকবো।তবে তাদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করবো না ইনশাআল্লাহ। এই ডিসিশন ইসলাম কতোটা সমর্থন করে?
৪.আমরা কিছু ফ্রেন্ড এন্ড রিলেটিভ রা মিলে প্রতি মাসে ২ হাজার করে টাকা জমা দেই এবং ড্র করি মোট ৪৪০০০হাজার টাকা একজন তুলে।সবার নাম থাকে কাগজে যে নাম উঠে সব টাকা সে পায়।এমন প্রতি মাসেই হয়।২৪ মাসে এমন ২৪ জন পাবে।এখানে এমন নয় যে টাকা পাবে না বা কিছু।সবার ই সম্মতিতে।যেহেতু টাকা রেখে দিলে খরচ হয়ে যায় তাই এই সিস্টেম। এইটা কি জায়েজ নাকি হারাম হবে?হারাম হলে করণীয় কি?কারণ চাইলেই এখান থেকে বের হওয়া যাবে না যেহেতু সবার ই ভাগ আছে।

1 Answer

0 votes
by (590,550 points)
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
স্ত্রী তার স্বামীর মাল থেকে ওয়াজিব হক্ব পরিমাণ সম্পদ গ্রহণ করতে পারবে।অর্থাৎ স্বামীর উপর স্ত্রীর খোরাকি এবং নিজ সন্তানাদির খোরাকি পরিমাণ শরীয়ত কর্তৃক যা ওয়াজিব ছিলো, সেটাকে স্ত্রী গ্রহণ করতে পারবে।
 ﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ : ﺃﻥ ﻫﻨﺪ ﺑﻨﺖ ﻋﺘﺒﺔ ﻗﺎﻟﺖ : ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ، ﺇﻥ ﺃﺑﺎ ﺳﻔﻴﺎﻥ ﺭﺟﻞ ﺷﺤﻴﺢ ﻭﻟﻴﺲ ﻳﻌﻄﻴﻨﻲ ﻣﺎ ﻳﻜﻔﻴﻨﻲ ﻭﻭﻟﺪﻱ ﺇﻻ ﻣﺎ ﺃﺧﺬﺕ ﻣﻨﻪ ﻭﻫﻮ ﻻ ﻳﻌﻠﻢ، ﻓﻘﺎﻝ : ﺧﺬﻱ ﻣﺎ ﻳﻜﻔﻴﻚ ﻭﻭﻟﺪﻙ ﺑﺎﻟﻤﻌﺮﻭﻑ .
"হযরত আয়েশা রাঃ থেকে বর্ণিত,হিনদ বিনতে উতবা রাঃ নবী কারীম সাঃ এর কাছে (নিজ স্বামীর অভিযোগ নিয়ে এসে) বললেনঃহে রাসুলুল্লাহ সাঃ আবু সুফিয়ান একজন কৃপন মানুষ, সে আমাকে ও আমার সন্তানদেরকে পর্যাপ্ত পরিমাণ ভরণ-পোষণ দেয় না,যদ্দরুন তার অজান্তে তার মাল থেকে আমি খরছ করে ফেলি, (এ বিষয়ে শরীয়তের দিকনির্দেশনা আমাদেরকে বলুন)রাসুলুল্লাহ সাঃ বললেনঃ ন্যায়সঙ্গত ভাবে তোমার ও তোমার সন্তানদের যা প্রয়োজন তা (তার অজান্তে)নিয়ে নিতে পারো(এতে কোনো অসুবিধা হবে না)।"(সহীহ বুখারীঃ৫৩৬৪)আরও বর্ণিত আছে৫৭৮৬ নং হাদীসে। 

স্বামীর উপর স্ত্রী ও নাবালিগ সন্তানদের ভরণ-পোষণ ওয়াজিব,এই ওয়াজিব হক্ব আদায় না করা দরুণ রাসুলুল্লাহ সাঃ স্বামীর অজান্তে স্বামীর মাল থেকে স্ত্রীকে উসূলের অনুমতি দিয়েছেন।

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
স্বামী-স্ত্রী পরস্পর মৌখিক সম্মতি বা মৌন সম্মতি ব্যতীত একে অন্যর সম্পত্তিতে কোনো প্রকার হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1111

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
(১) আপনার স্বামীর স্পষ্ট বা মৌনসম্মতি ব্যতিত আপনি একটি কানাকড়িও স্বামীর মাল থেকে খরচ করতে পারবেন না। যেহেতু আপনার স্বামী অনুমতি দিয়েছেন, তাই আপনি স্বামীর সম্পদ থেকে খরচ করতে পারবেন।যেহেতু ঘরের খরচের মধ্যে আপনার শশুড়েরও অংশ বা হিস্যা রয়েছে, তাই আপনি এত বেশী কিছু বাবার বাড়ী দিতে পারবেন না। বরং যতসামান্য দিতে পারবেন। আর শশুড়ের অনুমতি থাকলে তখন দিতে পারবেন।
(২) স্বামীকে অপচয় থেকে বাঁচাতে স্ত্রী কিছু টাকা যদি সরিয়ে নেয়, তাহলে তা নাজায়েয হবে না।তবে পরবর্তীতে স্বামীর পরামর্শেই সেগুলোকে খরচ করতে হবে।

(৩)  আপনারা স্বামী স্ত্রী উভয় বিশেষকরে আপনার স্বামী যদি তার পরিবারের হক আদায় করে নিতে পারে। এবং খুশিখুশি আপনারা পৃথক থাকতে চান, তাহলে এতে কোনো সমস্যা হবে না।

(৪) এই পদ্ধতির সমিতি নাজায়েয হবে না। কেননা সময়ের ব্যবধানে সবাই তার টাকা পাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (2 points)
শায়েখ,আমার স্বামী স্পষ্ট ভাবেই বলেছেন যে তার টাকা থেকে খরচ করলে বা আমার নিজের মা বাবার মার জন্য খরচ করতে পারি। এতে তাকে বলতেও হবে না এবং টাকার হিসেব ও দিতে হবে না।যেহেতু তিনি নিজেই একথা বলেছেন এজন্য আমি তাকে কিছু বলি না।তবে নাজায়েজ কাজে বা অযথা খরচ ও করি না।তার ই পরে দরকার হলে সাহায্য করি।আগেই যেহেতু তিনি বলে দিয়েছেন কোনো দাবি নেই তাহলে কি নতুন করে তার পারমিশনের দরকার আছে?
by (590,550 points)
নতুন করে আর পারমিশন নিতে হবে না।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...