আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
3,182 views
in পবিত্রতা (Purity) by (10 points)

আসসালামুআলাইকুম শায়খ,

ঘর সুগন্ধী করার জন্য কি আগরবাতি জ্বালানো যাবে? ইসলামে আগরবাতি জ্বালানো বা না জ্বালানোর কোন বিধান আছে কিনা।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

হযরত আনাস রাযি থেকে থেকে বর্ণিত
 ﻋَﻦْ ﺃَﻧَﺲٍ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﻗَﺎﻝَ : ﻗَﺎﻝَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : ( ﺣُﺒِّﺐَ ﺇِﻟَﻲَّ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ : ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀُ ﻭَﺍﻟﻄِّﻴﺐُ ، ﻭَﺟُﻌِﻞَ ﻗُﺮَّﺓُ ﻋَﻴْﻨِﻲ ﻓِﻲ ﺍﻟﺼَّﻠَﺎﺓِ ) 
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, দুনিয়ার তিনটি জিনিষ বিশেষভাবে আমার নিকট পছন্দনীয়।(১)নারী জাতি (২)সুগন্ধি(৩) এবং চক্ষুকে নামাযের মাধ্যমে শীতিল করা।(সুনানে নাসাঈ-৩৯৩৯) 

হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,
 ﻋَﻦْ ﻋَﺎﺋِﺸَﺔَ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬَﺎ ﻗَﺎﻟَﺖْ : ﺻَﻨَﻌْﺖُ ﻟِﺮَﺳُﻮﻝِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺑُﺮْﺩَﺓً ﺳَﻮْﺩَﺍﺀَ ﻓَﻠَﺒِﺴَﻬَﺎ ، ﻓَﻠَﻤَّﺎ ﻋَﺮَﻕَ ﻓِﻴﻬَﺎ ﻭَﺟَﺪَ ﺭِﻳﺢَ ﺍﻟﺼُّﻮﻑِ ﻓَﻘَﺬَﻓَﻬَﺎ ، ﻭَﻛَﺎﻥَ ﺗُﻌْﺠِﺒُﻪُ ﺍﻟﺮِّﻳﺢُ ﺍﻟﻄَّﻴِّﺒَﺔُ . 
আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর জন্য একটি কালো চাদর তৈরী করি,যা তিনি পরিধান করতেন।অতঃপর যখন উনার শরীর ঘেমে যেতো,তখন তিনি তাতে পশমের গন্ধ পেতেন।যা তিনি অবশ্যই অপছন্দ করতেন।সুগন্ধি রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট অধিক পছন্দনীয় ছিলো।(সুনানে আবু-দাউদ-৪০৭৪) 

হযরত না'ফে রাহ বলেন,
 ﻋَﻦْ ﻧَﺎﻓِﻊٍ ﻗَﺎﻝَ : ﻛَﺎﻥَ ﺍﺑْﻦُ ﻋُﻤَﺮَ ﺇِﺫَﺍ ﺍﺳْﺘَﺠْﻤَﺮَ ﺍﺳْﺘَﺠْﻤَﺮَ ﺑِﺎﻟْﺄَﻟُﻮَّﺓِ ﻏَﻴْﺮَ ﻣُﻄَﺮَّﺍﺓٍ ﻭَﺑِﻜَﺎﻓُﻮﺭٍ ﻳَﻄْﺮَﺣُﻪُ ﻣَﻊَ ﺍﻟْﺄَﻟُﻮَّﺓِ ﺛُﻢَّ ﻗَﺎﻝَ ﻫَﻜَﺬَﺍ ﻛَﺎﻥَ ﻳَﺴْﺘَﺠْﻤِﺮُ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ . 
 হযরত ইবনে উমর (রাযিঃ) অভ্যস্ত ছিলেন যে, যখন তিনি সুগন্ধির ধোয়া নিতেন, তখন সুগন্ধিযুক্ত কাঠের উদ (চন্দন কাঠ) ধোয়া নিতেন। তিনি এর সাথে কোন কিছু মিলাতেন না। আবার (কখনো) চন্দন কাঠের সঙ্গে কর্পূর ছিটিয়ে দিতেন। তারপর বলতেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ রকমভাবে সুগন্ধি জ্বালাতেন। সহীহ মুসলিম-২২৫৪(শামেলা)(ইসলামিক ফাউন্ডেশন ৫৬৮৮, ইসলামিক সেন্টার ৫৭১৯) 

 মিশকাতুল মাসাবিহ-৪৪৩৬ মোল্লা আলী কারী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা করতে যেয়ে বলেন,
 (وَعَنْ نَافِعٍ قَالَ: كَانَ ابْنُ عُمَرَ إِذَااسْتَجْمَرَ) : أَيْ تَبَخَّرَ وَتَعَطَّرَ. قَالَ الطِّيبِيُّ: أَيِ اسْتَعْمَلَ الْجَمْرَ وَحَصَلَ الْجَمْرُ فِيهِ لِلْبَخُورِ اهـ. وَفِيهِ إِيمَاءٌ إِلَى أَنَّهُ مَأْخُوذٌ مِنَ الْجَمْرَةِ، وَمِنْهُ الْمِجْمَرَةُ وَهِيَ وِعَاءٌ يُوضَعُ فِيهِ النَّارُ، ثُمَّ الْعُودُ وَيُتَبَخَّرُ بِهِ. قَالَ النَّوَوِيُّ: الِاسْتِجْمَارُ هُنَا اسْتِعْمَالُ الطِّيبِ، وَالتَّبَخُّرُ بِهِ مَأْخُوذٌ مِنْ مِجْمَرَةٍ وَهُوَ الْبَخُورُ اهـ. وَقَيَّدَهُ لِقَوْلِهِ هُنَا لِأَنَّ الِاسْتِجْمَارَ قَدْ يُسْتَعْمَلُ بِمَعْنَى الِاسْتِنْجَاءِ بِالْأَحْجَارِ أَوْ مُطْلَقًا  
ভাবার্থ ইস্তেজমার অর্থ সুগন্ধি ব্যবহার করা ও সুগন্ধি-কে অর্জন করা।ইমাম তিব্বী রাহ বলেন,অর্থাৎ আগুনের আঙ্গারা কে ব্যবহার করা।এদ্বারা এদিকে ইশারা করা হচ্ছে যে,ইস্তাজমারা শব্দটি 'জামরাতুন' শব্দ থেকে চয়ন করা হয়েছে,এবং এত্থেকে 'মিজমারাতুন' শব্দটিকেও চয়ন করা হয়েছে।মিজমারাতুন শব্দের অর্থ হলো, এমন পাত্র যাতে আগুন প্রজ্বলিত করে তাতে সুগন্ধি লাকড়ি(উদ) রাখা হয়।অতপর তা থেকে সুগন্ধি-কে অর্জন করা হয়। 

(বিঃদ্রঃ) 
ইস্তেজমার দ্বারা কখনো প্রস্রাবের ঢেলা উদ্দেশ্য নেয়া হয়।আবার কখনো কাঠ জ্বালিয়ে সুগন্ধি ব্যবহারের অর্থও নেয়া হয়।কিন্তু এখানে কাঠ জ্বালিয়ে সুগন্ধি হাসিল সম্ভলিত অর্থই উদ্দেশ্য হবে। (মিরকাত-৪৪৩৬) 

সু-প্রিয় পাঠকবর্গ! 
উপরোক্ত হাদীস সমূহ দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম যে,সুগন্ধি ব্যবহার করা রাসূলুল্লাহ সা এর সুন্নাত সমূহের একটি।এই সুগন্ধি ব্যবহার অনেক ভাবেই হতে পারে।যেমন তরল সুগন্ধি।আবার কাঠ-কে জ্বালিয়ে ধোয়া দ্বারাও সুগন্ধি ব্যবহার করা হতে পারে।যাই হোক মূল উদ্দেশ্য হল,সুগন্ধি ব্যবহার করা। সুতরাং আগরবাতি জ্বালিয়ে সুগন্ধি ব্যবহার করা যেতে পারে,যেমনটা না'ফে রাহ এর বর্ণনায় রাসূলুল্লাহ সাঃ এর এমন সুগন্ধি ব্যবহার পদ্ধতি জানা যায়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (10 points)
জাযাকআল্লাহ শায়খ।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...