আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
84 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (13 points)
আমার হাসব্যান্ড এখনো স্টুডেন্ট , তাই সে বাচ্চা নিতে সেভাবে আগ্রহী নয়. কিন্তু আমি মা হতে খুব আগ্রহী , আমি ইসলামিক ভাবে জীবন কাটাতে চাই, যদিও আগে এতো বুঝ ছিল না.
হুজুর আমার হাসব্যান্ড প্রাকৃতিক ভাবে এবং অস্থায়ী পদ্ধতি ব্যবহার করে. তার ওজর একটাই এখন আর্থিক অবস্থা ভালো না. আর একটা বিষয় হচ্ছে আমি চাকরি করি, সে চিন্তা করে বাচ্চা নিলে তো আমার  চাকরি টা থাকবে না আর... সে চাই আমি চাকরি করি আরো কিছু দিন, তার আর্থিক অবস্থা ভালো হলে তখন বাচ্চা নেয়ার চিন্তা করবেন (দেয়ার মালিক আল্লাহ) । আমার শশুর বাড়ির লোকজন ও চান বাচ্চা এখন না নিতে। তারাও চাই যে আমি যেন চাকরি করি এখন.  আমি যদি বলি এইসব ওজর এ লেট করা উচিত হবে না তখন বলে আল্লাহ যদি চান পরেও দিবেন, আবার অনেক সময় অনেকের তো প্রটেকশন ব্যবহার করার পর ও বাচ্চা  হয়, সে বলসে যদি প্রটেকশন এর পরও বাচ্চা এসেই যায় তাইলে নিয়ে নিবো তখন । কিন্তু সে তো পদ্ধতি ব্যবহার করতেসে এবং সে খুব এ সতর্ক এ ব্যাপারে, ২ বছর পার হয়ে গেসে, সে খুব সতর্ক থাকে।।  কিন্তু আমি ইসলামী শরীয়া এখন মেনে চলার চেষ্টা করতেসি। আমি চাই বাচ্চা নিতে এবং ইসলামী শরীয়া মেনে জীবন যাপন করতে। একক্ষেত্রে হাসব্যান্ড কে কিভাবে বুঝাতে পারি, যে আমি বাচ্চা নিতে চাই. বেশি জোর করলেই বলে আগে নিজে ভালো করে নিজেকে সামলাতে শিখো।  তার ভাষ্যমতে আরো ২/১ বছর পর সে এটা নিয়ে চিন্তা করবে। আমি খুব ই অসহায় হয়ে পড়তেসি। আমি হাদিস বা ইসলামিক দিক থেকে কিভাবে তাকে বুঝতে পারি? বা আমি যে চাকরি ছেড়ে দিয়ে বাচ্চা নিতে চাই আমার এ সিদ্ধান্ত কি যৌক্তিক? আমার হাসব্যান্ড এর ব্যবহার এ তো বুঝা যাচ্ছে সে টাকা পয়সার অভাবের ভয় এ রাজি হচ্ছে না. কি করতে পারি আমার দিক থেকে
অনুগ্রহ করে উত্তর দিবেন হুজুর......

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/56764/ নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

সাধারণত দুটি পদ্ধতিতে  সাধারণত জন্ম নিয়ন্ত্রণ  করা হয়।

এক. স্থায়ী পদ্ধতি–যার দ্বারা নারী বা পুরুষ প্রজনন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।

এই পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ অবৈধ।


আল্লামা বদরুদ্দিন আইনী (র.) বুখারী শরীফের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করেন: و هو محرم بالاتفاق অথাৎ স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন সর্বসম্মতক্রমে হারাম। (উমদাতুল ক্বারীঃ ১৪/১৪ পৃঃ)


দুই. অস্থায়ী পদ্ধতি– যার ফলে স্বামী-স্ত্রীর কেউ প্রজনন ক্ষমতাহীন হয়ে যায় না। যেমন: আযল করা (সহবাসের চরম পুলকের মুহুর্তে স্ত্রীর যোনীর বাহিরে বীর্যপাত ঘটানো), Condom Jelly, Cream, Foam, Douche ইত্যাদি ব্যবহার করা, পিল (Pill) খাওয়া, জরায়ুর মুখ সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া, ইঞ্জেকশন নেয়া ইত্যাদি।


দ্বিতীয় প্রকার শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত মাকরুহে তানযিহি। তবে শরীয়ত সম্মত নিম্নোক্ত প্রয়োজনে বৈধ রয়েছে।

(ক) মহিলা এত দুর্বল যে, গর্ভধারণের বর্তমানে যোগ্যতা নেই।

(খ) মহিলা নিজ বাসস্থান থেকে এত দূর সফরে যেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের আপতত কোনো মনোবাসনা নেই। আবার নিজ বাসস্থানে আসতেও কয়েক মাস লেগে যাবে বা কয়েক মাসের প্রয়োজন।

(গ) স্বামী-স্ত্রীর পারস্পারিক সম্পর্ক চূড়ান্ত নিম্ন পর্যায়ের, এমনকি উভয়ের অন্তরে বিচ্ছেদের চিন্তাভাবনা চলছে।

(ঘ) পূর্বের বাচ্চার সু-সাস্থ্যর ক্ষতির আশঙ্কা থাকলে।

(ঙ) স্থান-কালের ফাসাদ অর্থাৎ দ্বীনী পরিবেশের চূড়ান্ত পর্যায়ের অবনতির ধরুন বাচ্চা বদ-আখলাক বা অসচ্চরিত্র এবং মাতাপিতার বে-ইজ্জতির কারণ হবে বলে আশঙ্কা করলে।


হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

عن جابر قال كنا نعزل على عهد النبي صلى الله عليه و سلم ـ صحيح البخاري – (2 / 784)، باب العزل

হযরত জাবের রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের যুগে আযল(যা জন্ম নিয়ন্ত্রণের একটা পুরনো ও অস্থায়ী পদ্ধতি) করতাম। (বুখারী ২/৭৮৪)


বিঃদ্রঃ

সম্পদ কমে যাবে বা মেয়ে সন্তান জন্ম নিলে সমাজে লজ্জিত হতে হবে মনেকরে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ কখনো বৈধ হবে না।

আল্লাহ বলেছেন,

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً.

দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)


অন্যত্র আল্লাহ তায়ালা বলেন,

الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَ .

শয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. আকীদা ঠিক রেখে শরীয়ত সম্মত প্রয়োজনে বাচ্চা দেড়িতে নেয়া বৈধ রয়েছে।

শরীয়ত সম্মত প্রয়োজন ব্যতীত আকীদা বিশুদ্ধ রেখে অস্থায়ী পদ্ধতি অবলম্বন করা মাকরুহে তানযিহি তথা অনুত্তম বলে বিবেচিত হবে।

আর রিযিকের টেনশনে বাচ্চা না নিলে হারাম হবে।


. কিছু শর্ত সাপেক্ষে মহিলাদের জন্য চাকুরী করা জায়েজ

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/5338/

(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...