আমার বাবা আমাদের ছোটোবেলায় চাকুরী করতেন, স্বাভাবিক সংসার। কিন্তু বাবার সাথে আদর, ভালোবাসা, আন্তরিকতা এসব জিনিস আমার কাছে সবসময়ই অধরা রয়েছে। আমার নানা অবস্থাসম্পন্ন মানুষ। আমার বাবা চাকুরী ছাড়া পর ব্যবসার নামে প্রচুর ঋণ, সুদের ঋণ, সমিতি এসবে জড়িয়ে যায়। আমার নানা সাধ্যমত শোধ করে দিয়েছেন। শহরে বিভিন্ন ঝামেলার কারণে গ্রামে গিয়ে ফার্মেসী দিয়েছেন। গ্রামের লোক আমার বাবাকে বিশ্বাস করে মসজিদের ফান্ডের দায়িত্ব দিয়েছিল। কিন্তু সে এইসব টাকা তার দোকানে ব্যবহার করে এবং নিষেধ করা সত্ত্বেও বন্ধ করেনি। এখন লোকজন সব জানার পর টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। তবে আমার বাবা এখন ওই ফার্মেসী মন চাইলে খোলে নাহয় ঘুমিয়ে খেয়ে নামাজ পরে দিন কাটাচ্ছে। আর আমার মায়ের উপর ভীষণ মানসিক অত্যাচার করছে সবাই মিলে। আমার নানাও এখন ঋণ শোধ করে দিতে আগ্রহী না। আমার বাবা মা টিনের যে ঘরে থাকে সেটাও ভগ্নদশা। অল্প অল্প টাকা জমিয়ে একটা ছোটো পাকা ঘর তুলে দিতে চাইছিলেন আমার নানা আর আমার মা টুকটাক সেলাই কাজ করে। আমিও কিছু টাকা জমিয়েছি ঘর মেরাতমতের উদ্দেশ্য। এখন আমার বাবা আকার ইঙ্গিতে সেসব টাকা চাচ্ছে তার ঋণ পরিশোধের জন্য। অথচ তিনি সুস্থ সবল একজন পুরুষ, কোনো পরিশ্রমের কাজ/চাকুরী করতে নারাজ। তিনি ঘরে কোনো সদাই/কোনো ভরণপোষন কিছুই দেন না। আমার একটি ভাই মাদ্রাসায় পড়ে তার খরচ আমার স্বামী বহন করে। তবুও বাবা ওর তার পরিবার বলেন তারা অক্ষম। আমার মা/নানা/আমি কেন দিচ্ছিনা এজন্য অপমানের শেষ নেই। বাবার কথা সময় হলে আল্লাহ ই নাকি দিবেন তবে পাশাপাশি মায়ের সাথে খারাপ ব্যবহার তো আছেই। কিন্তু আমার মা তাকে টাকা দিতে দিতে ক্লান্ত, এখন তিনি মাথার উপর একটা ছাদ চান। কিন্তু বাবা ও তার পরিবার তো এখন তা করতে দিবেনা। আমি মানসিকভাবে খুবই পেরেশান। আমার কাছে আছে সীমিত অর্থ যা আমি কেবল একজনকেই দিতে পারব।
আরেকটি বিষয় আমার মা তো আশা করেন আমি উপার্জন করে তাদের দেখাশুনা করব। কিন্তু আমার স্বামী বাইরে চাকরী করা পছন্দ করেন না। তিনি সামর্থ্যমত সাহায্য করবেন যতদিন আমার ভাই সাবালক না হয়। তবুও আমার মা বাবা চায় আমি উপার্জন করে তাদের দিই। এটা করতে কি আমি বাধ্য? যেহেতু আমার বাবা কর্মক্ষম কিন্তু অলস।