আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in সালাত(Prayer) by (7 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমি ফরজ সালাতে তাশাহুদ পড়ার পরে সালাম ফিরানোর আগে সূরা ফুরকানের ৭৪ নাম্বার আয়াত দোয়া হিসেবে পড়ি, আগে কুরআনের অন্য দোয়াও পড়েছি।আমি জানতাম যে তাশাহুদের পর দোয়া করা যায়।

এখন আমার সালাতের কি কোনো সমস্যা হবে?দেখলাম যে অনেক উলামায়ে কেরামগন নিষেধ করেছেন।

1 Answer

0 votes
by (58,470 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

নামাযের শেষ বৈঠকে দরূদ শরীফের পর দোয়া মাসুরা পড়তে হয়। এক্ষেত্রে কোরআন-হাদিসে বর্ণিত যেকোনো একটি মাসনূন দোয়া পড়লেই হয়। এমনকি একাধিক দোয়াও পড়া যায়। কেননা, হাদীস শরীফে এসেছে-

ثُمَّ يَتَخَيَّرُ مِنَ الْمَسْأَلَةِ مَا شَاءَ

অতঃপর (দরূদ পাঠের পর) যে দোয়া ইচ্ছা পড়বে। (সহীহ মুসলিম ৪০২)

তবে এক্ষেত্রে সেই দোয়াগুলো পড়া উত্তম হবে, যেগুলো রাসূলুল্লাহ সরাসরি বলেছেন। আর সেগুলো নিম্নে পেশ করা হল

১. আবু হুরায়রা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ বলেছেন, যখন তোমাদের কেউ নামাজে তাশাহহুদ পড়বে, তখন চারটি বিষয় থেকে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করবে। বলবে

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ جَهَنَّمَ وَمِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَمِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَالْمَمَاتِ وَمِنْ شَرِّ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি জাহান্নামের আযাব থেকে, কবরের আযাব থেকে, জীবন-মৃত্যুর ফিতনা থেকে এবং মাসীহ দাজ্জালের অনিষ্ট থেকে। (সহীহ মুসলিম ৫৮৮)

২. অপর বর্ণনায় এসেছে, উরওয়া ইবনু যুবাইর রহ. থেকে বর্ণিত যে, নবী -এর সহধর্মিনী আয়িশা রাযি. তাঁকে বলেছেন যে, রাসূলুল্লাহ এ বলে দোয়া করতেন

اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَسِيحِ الدَّجَّالِ، وَأَعُوذُ بِكَ مِنْ فِتْنَةِ الْمَحْيَا وَفِتْنَةِ الْمَمَاتِ، اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْمَأْثَمِ وَالْمَغْرَمِ

অর্থ: হে আল্লাহ! আমি তোমার আশ্রয় প্রার্থনা করছি কবরের আযাব থেকে, দাজ্জালের ফিৎনা থেকে। আশ্রয় প্রার্থনা করছি জীবন ও মৃত্যুর ফিতনা থেকে। হে আল্লাহ ! আমি আশ্রয় চাচ্ছি গুনাহ ও ঋণ থেকে। (সহীহ বুখারী ৮৩৩ সহীহ মুসলিম ৫৮৯)

৩. আর আমাদের মাঝে সবচেয়ে প্রসিদ্ধ যে দোয়া তা আবু বকর রা.-এর আবেদনের প্রেক্ষিতে রাসূলুল্লাহ তাঁকে শিখিয়েছেন।

হাদীস শরীফে এসেছে, হযরত আবু বকর রাযি. রাসূলুল্লাহ -এর কাছে আবেদন করলেন, আমাকে একটি দোয়া শিখিয়ে দিন, যা আমি নামাযে পড়ব। রাসূলুল্লাহ বললেন, এ দোয়াটি বলবে

 اللَّهُمَّ إِنِّي ظَلَمْتُ نَفْسِي ظُلْمًا كَثِيرًا وَلا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلا أَنْتَ فَاغْفِرْ لِي مَغْفِرَةً مِنْ عِنْدِكَ وَارْحَمْنِي إِنَّك أَنْتَ الْغَفُورُ الرَّحِيمُ

অর্থ: হে আল্লাহ্! আমি নিজের উপর অধিক যুলুম করেছি। আপনি ছাড়া সে অপরাধ ক্ষমা করার কেউ নেই। আপনার পক্ষ থেকে আমাকে তা ক্ষমা করে দিন এবং আমার উপর রহমত বর্ষণ করুন। নিশ্চই আপনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান। (সহীহ বুখারী ৮৩৪ সহীহ মুসলিম ২৭০৫)

দুই. ফরজ নামাযে সিজদায় অন্য দোয়া না করা উত্তম ৷ নফল নামাযে সিজদা অবস্থায় কুরআন-হাদীসে বর্ণিত দোয়াসমূহ পড়া যাবে। তবে নফল হোক কিংবা অন্য কোনো নামাযে অনারবী ভাষায় দুআ করা নিষিদ্ধ। (সুনানে আবু দাউদ ১/১২৬; আদ্দুররুল মুখতার ১/৫২১; হাশিয়া তাহতাবী আলাদ্দুর পৃ. ১/২২৯; মাহমুদিয়া ১২/৮৬)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

নামাযের শেষ বৈঠকে দরূদ শরীফের পর দোয়া মাসুরা পড়তে হয়। এক্ষেত্রে কোরআন-হাদিসে বর্ণিত যেকোনো একটি মাসনূন দোয়া পড়লেই হয়। এমনকি একাধিক দোয়াও পড়া যায়। তবে এক্ষেত্রে সেই দোয়াগুলো পড়া উত্তম হবে, যেগুলো রাসূলুল্লাহ সরাসরি বলেছেন।

 সুতরাং আপনি দোয়া সম্বলিত যেই আয়াতগুলো পাঠ করেছেন তা জায়েয আছে। এতে নামাজের কোন সমস্যা হবে না। তবে উত্তম হলো, যা পূর্বে বলা হয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 2,347 views
...