জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
তাঁর ঐ ব্যবসা টা সকল ওয়ারিশদের মাঝে শরীয়তের বিধান অনুসারে বন্টন করে দেয়া আবশ্যক।
তবে যদি সকল ওয়ারিশ সন্তুষ্টি চিত্তে এই মর্মে রাজী হয় যে উক্ত ব্যবসা ২ ছেলে দেখাশোনা করবে,আর লভ্যাংশ শরীয়তের বিধান অনুসারে সকল ওয়ারিশদের মাঝে বন্টন করে দিতে হবে।
এমতাবস্থায় লভ্যাংশ তাঁর ঐ দুই মেয়ে, ২ ছেলে এবং এক জন অবিবাহিত মেয়ে আর স্ত্রীও পাবে।
শরীয়তের বিধান অনুসারে যার যত টুকু অংশ ততটুকু পাবে।
তবে ঐ ২ ছেলে তাদের শ্রমের দরুন লভ্যাংশের নিজ ভাগের চেয়েও অতিরিক্ত ভাগের হকদার হবে।
(০২)
তালাক হচ্ছে স্বামীর অধিকার। স্বামী তালাক দিলেই তালাক সংঘটিত হবে।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يَحْيَى حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُكَيْرٍ حَدَّثَنَا ابْنُ لَهِيعَةَ عَنْ مُوسَى بْنِ أَيُّوبَ الْغَافِقِيِّ عَنْ عِكْرِمَةَ عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ
ইবনু ‘আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এসে বললো, হে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তার বাঁদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার ও আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেন, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মিম্বারে আরোহণ করলেন, অতঃপর বলেনঃ হে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন যে, সে তার গোলামের সাথে তার বাঁদীর বিবাহ দেয়, অতঃপর তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়? নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধ, তালাকের অধিকার তার।
(সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১.বায়হাকী ৯/১৫৭, ইরওয়াহ ২০৪১।)
★শরীয়তের বিধান অনুযায়ী মহিলা নিজের উপর কেবল তখনি তালাক পতিত করতে পারবে, যদি স্বামী তাকে তালাক দেবার অধিকার দিয়ে থাকে।
এটি নিকাহ নামার ১৮ নং ধারাতে হ্যাঁ লেখার মাধ্যমেই হোক,বা পরবর্তীতে মৌখিক বা লিখিত ভাবেই হোক।
,
সুতরাং স্বামী যদি স্ত্রীকে তালাকের ক্ষমতা প্রদান করে,আর স্ত্রী স্বামী কর্তৃক তালাকে তাভবিজের ক্ষমতাবলে লিখিত বা মৌখিকভাবে নিজের নফসের উপর তালাক দিয়ে দিলে সেটি পতিত হয়ে যাবে।
আরো জানুনঃ
ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ
قال لھا: طلقي نفسک ولم ینو أو نوی واحدة فطلقت وقعت رجعیة الخ (الدر المختار مع رد المحتار، کتاب الطلاق، باب الأمر بالید، ۴: ۵۷۵، ط: مکتبة زکریا دیوبند)۔
সারমর্মঃ
কেহ যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার নিজের নফসকে তালাক দাও,কোনো নিয়ত না করে,অথবা এক তালাকের নিয়ত করে,অতঃপর স্ত্রী তালাক দেয়,তাহলে এক তালাকে রজয়ী পতিত হবে।
رجل قال لامرأتہ خذي طلاقک، فقالت: أخذت، یقع الطلاق۔ (الفتاویٰ الہندیۃ، کتاب الطلاق / الفصل الثاني في إیقاع الطلاق ۱؍۳۵۹)
সারমর্মঃ
কোনো ব্যাক্তি যদি তার স্ত্রীকে বলে,তুমি তোমার তালাক গ্রহন করো।
স্ত্রী যদি বলে যে গ্রহন করলাম,তাহলে তালাক পতিত হয়ে যাবে।
’’ ولو قال اختاری فقالت أنا اختارنفسی طلق ‘‘ ( الھدایۃ : ۲/۳۷۷)
সারমর্মঃ
স্বামী যদি বলে (তালাক সংক্রান্ত) তোমার ইখতিয়ার,বা তোমার ইচ্ছা।
স্ত্রী যদি বলে আমি নিজের নফসের প্রতি ইখতিয়ার করলাম,তাহলে তালাক পতিত হবে।
বিস্তারিত জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
১, এখানে ১ তালাকে রজয়ী হয়েছিলো।
২, এক্ষেত্রে বাকি তালাক গুলি পতিত হয়নি।
শুধু ১ম বারের এক তালাক পতিত হয়েছে।
৩, এক্ষেত্রে শুধু ১ম বারের এক তালাক পতিত হয়েছে।
পরবর্তী তালাক পতিত হয়নি।
আর ১ম বারের তালাকের পর ইদ্দতকালের মধ্যে স্বামী তো আপনাকে ফিরিয়ে নেয়নি,বরং ৩ হায়েজ অতিবাহিত হওয়ার পর তিনি আপনার কাছে এসেছিলেন,সুতরাং এক্ষেত্রে প্রশ্নের বিবরন মতে নতুন ভাবে বিবাহ পড়ানো আবশ্যক ছিলো।
হ্যাঁ,ইদ্দতকাল অতিবাহিত হওয়ার আগে মৌখিক ভাবে আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে থাকলে তাহা ভিন্ন কথা,এক্ষেত্রে কোনো সমস্যা নেই।
৪, সব মিলে আপনি ১ তালাকেরই অধিকার পেয়েছিলেন,এর বেশি নয়।
৫, ১ম বার তালাক পতিত হওয়ার পর প্রশ্নের বিবরন মতে স্বামী তো ইদ্দত কাল অতিবাহিত হওয়ার আগেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়নি,সুতরাং এখন সে আর আপনার স্বামী নয়।
তাই আর নতুন করে বিচ্ছেদের প্রয়োজনীয়তা নেই।
তবে ইদ্দতকাল (তালাকের পর ৩ হায়েজ) অতিবাহিত হওয়ার আগেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নিয়ে থাকলে সেক্ষেত্রে এখন বিচ্ছেদের নিয়ম হলো,
কাজি/আদালতের স্বরনাপন্ন হয়ে খোলা তালাকের আবেদন করা।
৬, ১ম বার তালাক পতিত হওয়ার পর প্রশ্নের বিবরন মতে স্বামী তো ইদ্দত কাল অতিবাহিত হওয়ার আগেই স্ত্রীকে ফিরিয়ে নেয়নি,সুতরাং এখন সে আর আপনার স্বামী নয়।
তাই এভাবে দূরে থাকা, স্বামীর হক আদায় না করার জন্যে আপনার কবিরা গুনাহ হবেনা
স্ত্রীর ইবাদত আমল কবুল হতে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।