ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
□ স্বামীর
জন্য জরুরি হলো স্ত্রীর অধিকার রক্ষা করা, তার সাথে সদব্যবহার করা।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন
ألا
واستوصوا بالنساء خيرا، فإنما هن عوان عندكم ليس تملكون منهن شيئا غير ذلك
শোন হে! তোমরা আমার পক্ষ হতে নারীদের প্রতি সদাচরণের উপদেশ
গ্রহণ কর। তারা তো তোমাদের কাছে আটকে আছে। তোমরা তাদের কাছ থেকে এছাড়া আর কিছুর
অধিকার রাখো না। (জামে তিরমিযী,
হাদীস: ১০৮৩
https://ifatwa.info/91615/ নং ফাতওয়ায়
উল্লেখ রয়েছে যে,
□ মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-
ﻭَﻋَﺎﺷِﺮُﻭﻫُﻦَّ
ﺑِﺎﻟْﻤَﻌْﺮُﻭﻑ
নারীদের সাথে সদ্ভাবে জীবন-যাপন কর। (সূরা নিসা-১৯)
হাদীস শরীফে এসেছে-
عَنْ سُلَيْمَانَ بْنِ
عَمْرِو بْنِ الأَحْوَصِ، قَالَ حَدَّثَنِي أَبِي أَنَّهُ، شَهِدَ حَجَّةَ الْوَدَاعِ
مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَحَمِدَ اللَّهَ وَأَثْنَى عَلَيْهِ
وَذَكَّرَ وَوَعَظَ فَذَكَرَ فِي الْحَدِيثِ قِصَّةً فَقَالَ " أَلاَ
وَاسْتَوْصُوا بِالنِّسَاءِ خَيْرًا… أَلاَ وَحَقُّهُنَّ عَلَيْكُمْ أَنْ
تُحْسِنُوا إِلَيْهِنَّ فِي كِسْوَتِهِنَّ وَطَعَامِهِنَّ " .
সুলাইমান ইবনু আমর ইবনুল আহওয়াস (রহঃ) হতে তার পিতার সূত্র
থেকে বর্ণিতঃ বিদায় হজ্জের সময় তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লামের সাথে ছিলেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার প্রশংসা ও গুণগান করলেন এবং ওয়াজ-নাসীহাত করলেন। এ
হাদীসের মধ্যে বর্ণনাকারী একটি ঘটনা বর্ণনা করে বলেন, তিনি
(রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেনঃ স্ত্রীদের সাথে ভালো
আচরণের উপদেশ নাও। ... জেনে রাখ! তোমাদের প্রতি তাদের অধিকার এই যে, তোমরা তাদের
উত্তম পোশাক-পরিচ্ছদ ও ভরণপোষণের ব্যবস্থা করবে। (সুনানে তিরমিযী ১১৬৩)
★স্বামীর উপর
আবশ্যক হলোঃ- স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার করা। স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা
ও খোশগল্প করা।
অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের
কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য জরুরি। প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।
বিস্তারিত জানুনঃ-
https://ifatwa.info/26084/
স্ত্রীর সাথে সহবাস করাও একটি ইবাদত । যেমন হাদীসে বর্ণিত
হয়েছে-
হযরত আবু যর রাযি
থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي، ذَرٍّ أَنَّ
نَاسًا، مِنْ أَصْحَابِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالُوا لِلنَّبِيِّ صلى
الله عليه وسلم يَا رَسُولَ اللَّهِ ذَهَبَ أَهْلُ الدُّثُورِ بِالأُجُورِ
يُصَلُّونَ كَمَا نُصَلِّي وَيَصُومُونَ كَمَا نَصُومُ وَيَتَصَدَّقُونَ بِفُضُولِ
أَمْوَالِهِمْ . قَالَ " أَوَلَيْسَ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لَكُمْ مَا
تَصَّدَّقُونَ إِنَّ بِكُلِّ تَسْبِيحَةٍ صَدَقَةً وَكُلِّ تَكْبِيرَةٍ صَدَقَةٌ
وَكُلِّ تَحْمِيدَةٍ صَدَقَةٌ وَكُلِّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ وَأَمْرٌ
بِالْمَعْرُوفِ صَدَقَةٌ وَنَهْىٌ عَنْ مُنْكَرٍ صَدَقَةٌ وَفِي بُضْعِ أَحَدِكُمْ
صَدَقَةٌ " . قَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ أَيَأْتِي أَحَدُنَا شَهْوَتَهُ
وَيَكُونُ لَهُ فِيهَا أَجْرٌ قَالَ " أَرَأَيْتُمْ لَوْ وَضَعَهَا فِي
حَرَامٍ أَكَانَ عَلَيْهِ فِيهَا وِزْرٌ فَكَذَلِكَ إِذَا وَضَعَهَا فِي
الْحَلاَلِ كَانَ لَهُ أَجْرٌ " .
কিছু সাহাবা বললেন, হে আল্লাহর রসূল! ধনীরাই তো বেশী নেকীর অধিকারী হয়ে গেল।
তারা নামায পড়ছে যেমন আমরা নামায পড়ছি, তারা রোযা রাখছে যেমন আমরা রাখছি এবং (আমাদের চেয়ে তারা
অতিরিক্ত কাজ এই করছে যে,) নিজেদের প্রয়োজন-অতিরিক্ত মাল থেকে তারা সাদকাহ করছে। তিনি
বললেন, আল্লাহ কি তোমাদের জন্য সাদকাহ করার মত জিনিস দান করেননি? নিঃসন্দেহে
প্রত্যেক তাসবীহ সাদকাহ, প্রত্যেক তাকবীর সাদকাহ, প্রত্যেক তাহলীল সাদকাহ, ভাল কাজের নির্দেশ দেওয়া সাদকাহ ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা
সাদকাহ এবং তোমাদের স্ত্রী-মিলন করাও সাদকাহ।
সাহাবাগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাদের কেউ স্ত্রী-মিলন করে নিজের
যৌনক্ষুধা নিবারণ করে, তবে এতেও কি তার পুণ্য হবে? তিনি বললেন, কী রায়
তোমাদের, যদি কেউ অবৈধভাবে যৌন-মিলন করে, তাহলে কি
তার পাপ হবে? (নিশ্চয় হবে।) অনুরূপ সে যদি বৈধভাবে (স্ত্রী-মিলন করে)
নিজের কামক্ষুধা নিবারণ করে,
তাহলে তাতে তার পুণ্য হবে। (সহীহ মুসলিম ২৩৭৬)
,
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
১. স্বামীর উপর আবশ্যক হলোঃ- স্ত্রীর সাথে উত্তম ব্যবহার
করা। স্ত্রীর সঙ্গে প্রয়োজনে একান্তে বসা ও খোশগল্প করা।
অবসরে স্ত্রীর সঙ্গে একান্তে বসে কিছু গল্পগুজব করা, তার মনের
কথা জানা-বোঝা, তার কোনো চাহিদা থাকলে তা জেনে নিয়ে পূরণ করা স্বামীর জন্য
জরুরি। প্রয়োজন মাফিক স্ত্রীকে সময় দেয়া।
এর পরও যদি আপনাকে আপনার স্বামী সময় না দেয় বা আপনার সাথে
খারাপ আচরণ করে তাহলে তার গোনাহ হবে।
২. বোন,
প্রথমত আমাদের পরামর্শ থাকবে যে, আপনি আপনার পরিবারের
মুরুব্বী ও তাদের পরিবারের মুরুব্বীদের মাঝে বিষয়টি জানিয়ে সমাধান করার চেষ্টা করতে
পারেন এবং আল্লাহ তায়ালার কাছে খুব বেশী বেশী দুআ করতে থাকবেন। বিশেষ
করে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়ে। অন্তরকে পরিবর্তন করে দেওয়ার মালিক তো একমাত্র আল্লাহ
তায়ালা।
তারপরও যদি তারা পরিবর্তন না হয় এবং আপনার ওপরে জুলুম, অত্যাচার
ও নির্যাতন করতে থাকে তাহলে আপনি আপনার পরিবারের লোকদের সাথে পরামর্শ ক্রমে আবার ইস্তেখারা
করে ডিভোর্স বা অন্য কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।