আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
76 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (1 point)
আসসালামু আলাইকুম উস্তাদ, আমি একটি সমবায় সমিতিতে আইটি অফিসার পদে আছি। আমার দায়িত্ব হলো তাদের সমিতির সদস্যের তথ্য ও লেনদেন অনলাইনে হালনাগাদ করা। যেখানে আমাকে সদস্য ভর্তি এবং সদস্যের কিস্তি ও সঞ্চয় আদায় এগুলো তুলতে ও আপডেট করতে হয়। পাশাপাশি ফিল্ড অফিসারদেরকে এই কাজটি শিখিয়ে দিতে হয়। নিঃসন্দেহে সমিতিটি সুদের সাথে জড়িত এবং আমার বেতনের টাকার সম্পুর্ন অর্থ সুদ থেকে আসে। আমার চোখের সামনে সুদের লেনদেন হয় আমি তা লিখে রাখি এবং সাক্ষী থাকি।আমার চাকরি হালাল হবে এমন কোন কিছু আমি দেখছি না এবং আশাও করিছি না। তবে আমি প্রথমে বিষয়টি বিস্তারিত বুঝতে না পারার কারণে চাকরিতে যুক্ত হয়ে গেছি সাধারণত ৬ মাসের চুক্তিতে । চুক্তি অনুযায়ী আমাকে চাকরি ছেড়ে দিতে চাইলে ১ মাস পুর্বে জানাতে হবে। আমার চাকরির বয়স এখনো একমাস হয়নি। আমি এই হারামে ধৈর্য্য ধারণ করতে চাচ্ছি না এখনি বের হতে চাচ্ছি।এটি কি আমার আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত হবে নাকি আমার উচিত সময় নিয়ে অফিসে কথা বলে তাদের সময় দিয়ে বের হয়ে যাওয়া। তবে আত্বীয়ের মাঝে অনেকে দ্বিমত পোষণ করছে। তারা বলছে আমি যেহেতু অপারগ তাই যেন চাকরিটা করতে থাকি। তবে আলহামদুলিল্লাহ বাবার ছোট্ট ব্যবসায় পরিবার চলছে। তবে আমাদের কিছু টাকা লোন আছে। আমি চাকরি ছেড়ে দিলেও ইনশাআল্লাহ কোন সমস্যা হবে না লোন পরিশোধে বিলম্ব ব্যাতীত।এখন প্রশ্ন হলো আমি যেহেতু চাকরি করছি। আমি নিশ্চয় বেতন নিব এছাড়া যদি কোন জটিলতায় চাকরিটি এখনো না ছাড়া যায় কিংবা আরও একমাস চাকরি করে যে বেতন নিব। সেই টাকা আমাদের খাবার খরচ ব্যবতীত ব্যবহারে কি আমি যা আহার করছি তা হালাল হবে। তবে আমি সেই টাকা দিয়ে লোন পরিশোধ করতে চাচ্ছি কিংবা সে টাকা আসলে কোন কোন কাজে ব্যয় করা থেকে আমার বিরত থাকা উচিত। এছাড়া আমাকে এবং আত্বীয়ের উদ্দেশ্যে সুদের এবং আমার চাকরির ভয়াবহতা নিয়ে বলুন। যেন আমি এথেকে এখুনি বের হয়ে যায়।জাযাকাল্লাহু খয়রন...

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

সুদ ভক্ষন কারীরা জাহান্নামে যাবে।
আল্লাহ তা'আলা সুদ সম্পর্কে বলেন,

الَّذِينَ يَأْكُلُونَ الرِّبَا لاَ يَقُومُونَ إِلاَّ كَمَا يَقُومُ الَّذِي يَتَخَبَّطُهُ الشَّيْطَانُ مِنَ الْمَسِّ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ قَالُواْ إِنَّمَا الْبَيْعُ مِثْلُ الرِّبَا وَأَحَلَّ اللّهُ الْبَيْعَ وَحَرَّمَ الرِّبَا فَمَن جَاءهُ مَوْعِظَةٌ مِّن رَّبِّهِ فَانتَهَىَ فَلَهُ مَا سَلَفَ وَأَمْرُهُ إِلَى اللّهِ وَمَنْ عَادَ فَأُوْلَـئِكَ أَصْحَابُ النَّارِ هُمْ فِيهَا خَالِدُونَ

যারা সুদ খায়, তারা কিয়ামতে দন্ডায়মান হবে, যেভাবে দন্ডায়মান হয় ঐ ব্যক্তি, যাকে শয়তান আসর করে মোহাবিষ্ট করে দেয়। তাদের এ অবস্থার কারণ এই যে, তারা বলেছেঃ ক্রয়-বিক্রয় ও তো সুদ নেয়ারই মত! অথচ আল্লা’হ তা’আলা ক্রয়-বিক্রয় বৈধ করেছেন এবং সুদ হারাম করেছেন। অতঃপর যার কাছে তার পালনকর্তার পক্ষ থেকে উপদেশ এসেছে এবং সে বিরত হয়েছে, পূর্বে যা হয়ে গেছে, তা তার। তার ব্যাপার আল্লাহর উপর নির্ভরশীল। আর যারা পুনরায় সুদ নেয়, তারাই দোযখে যাবে। তারা সেখানে চিরকাল অবস্থান করবে।(সূরা বাকারা-২৭৫)

সুদ ভক্ষনকারীর দোয়া,ইবাদত আল্লাহ তায়ালা কবুল করবেননা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ- 
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত, 

ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺃﻳﻬﺎ ﺍﻟﻨﺎﺱ ﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﻃﻴﺐ ﻻ ﻳﻘﺒﻞ ﺇﻻ ﻃﻴﺒﺎ ﻭﺇﻥ ﺍﻟﻠﻪ ﺃﻣﺮ ﺍﻟﻤﺆﻣﻨﻴﻦ ﺑﻤﺎ ﺃﻣﺮ ﺑﻪ ﺍﻟﻤﺮﺳﻠﻴﻦ ﻓﻘﺎﻝ ﻳﺎ ﺃﻳﻬﺎ ﺍﻟﺮﺳﻞ ﻛﻠﻮﺍ ﻣﻦ ﺍﻟﻄﻴﺒﺎﺕ ﻭﺍﻋﻤﻠﻮﺍ ﺻﺎﻟﺤﺎ ﺇﻧﻲ ﺑﻤﺎ ﺗﻌﻤﻠﻮﻥ ﻋﻠﻴﻢ ﻭﻗﺎﻝ ﻳﺎ ﺃﻳﻬﺎ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺁﻣﻨﻮﺍ ﻛﻠﻮﺍ ﻣﻦ ﻃﻴﺒﺎﺕ ﻣﺎ ﺭﺯﻗﻨﺎﻛﻢ ﺛﻢ ﺫﻛﺮ ﺍﻟﺮﺟﻞ ﻳﻄﻴﻞ ﺍﻟﺴﻔﺮ ﺃﺷﻌﺚ ﺃﻏﺒﺮ ﻳﻤﺪ ﻳﺪﻳﻪ ﺇﻟﻰ ﺍﻟﺴﻤﺎﺀ ﻳﺎ ﺭﺏ ﻳﺎ ﺭﺏ ﻭﻣﻄﻌﻤﻪ ﺣﺮﺍﻡ ﻭﻣﺸﺮﺑﻪ ﺣﺮﺍﻡ ﻭﻣﻠﺒﺴﻪ ﺣﺮﺍﻡ ﻭﻏﺬﻱ ﺑﺎﻟﺤﺮﺍﻡ ﻓﺄﻧﻰ ﻳﺴﺘﺠﺎﺏ ﻟﺬﻟﻚ

নবীজী সাঃ বলেনঃ হে লোকসকল জেনে রাখ!আল্লাহ পবিত্র তিনি পবিত্র জিনিষ ছাড়া অপবিত্র জিনিষকে কবুল করেন না।আর আল্লাহ তা'আলা মু'মিনদেরকে সেই জিনিষ সমূহেরই আদেশ দিচ্ছেন যা তিনি নবীদেরকে দিয়েছিলেন।আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ(হে রাসুল সাঃ তোমরা পবিত্র জিনিষ থেকে খাও,এবং নেক কাজ করো,নিশ্চয় তোমরা যা কিছু করো তা আমি জানি।)এবং বলেনঃ(হে ঈমানদারগণ! তোমরা আমার প্রদানকৃত পবিত্র জিনিষ থেকে খাও)
অতঃপর নবীজী সাঃ এমন এক মানুষের কথা আলোচনা করতে শুরু করলেনঃযে দ্বীনের রাস্তায় লম্বা সফর করেছে যদ্দরুণ তার চুল এলোমেলো,সে ধুলায় আচ্ছাদিত।এমতাবস্থায় সে দু'হাত আসমানের দিকে সম্প্রসারিত করে আল্লাহ কাছে রহমতের দু'আ  করছে।
বলছে হে আমার রব! হে আমার রব!অথচ তার অন্ন,বস্র ইত্যাদি হারাম।তাহলে তার দু'আ কিভাবে কবুল করা হবে?(কবুল হবে না)(সহীহ মুসলিম-১০১৫)

সুদ কতখানি জঘন্য তা হাদীস শরীফে এসেছে-

عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : "الربا سبعون حوبا،أيسرها أن ينكح الرجل أمه."

حكم الحديث: صحيح

"হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "সুদের ৭০ টি স্তর রয়েছে৷ সবচেয়ে নিম্নটি হল নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচার করা৷" (ইবনে মাজাহ: অধ্যায়: ব্যবসা-সুদ:২২৭৪)

عبد الله بن مسعود عن أبيه عن النبي صلى الله عليه وسلم قال لعن الله آكل الربا وموكله وشاهديه وكاتبه

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রাঃ এর পিতা থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন- “যে সুদ খায়, যে সুদ খাওয়ায়, তার সাক্ষী যে হয়, আর দলিল যে লিখে তাদের সকলেরই উপর আল্লাহ তায়ালা অভিশাপ করেছেন। (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস নং-৩৮০৯, মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নং-৪৯৮১)

হারাম টাকার বিধান হল, তা প্রাথমিকভাবে মূল মালিকের কাছে ফেরত দেয়া।নতুবা সওয়াবের নিয়ত ছাড়া গরীবদের মাঝে সদকা করে দেয়া।

 من ملك بملك خبيث ولم يمكنه الرد الى المالك فسبيله التصدق على الفقراء
 (معارف السنن، كتاب الطهارة، باب ما جاء لا تقبل صلاة بغير طهور-1/34، الفتاوى الشامية، باب البيع الفاسد، مطلب فى من ورث مالا حراما-7/301، كتاب الحظر والإباحة، فصل فى البيع-9/554، بذل المجهود، كتاب الطهارة، باب فرض الوضوء- 1/37

যদি কারো নিকট কোনো হারাম মাল থাকে,তাহলে ঐ মালকে তার মালিকের নিকট ফিরিয়ে দেওয়া সম্ভব না হলে সেটি ফকিরদেরকে সদকাহ করে দিতে হবে।
(মাআরিফুস সুন্নাহ ১/৩৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
আপনার জন্য এখনই উক্ত চাকরি ছেড়ে দিয়ে বের হয়ে আসা উচিত।এটি আপনার আবেগপ্রবণ সিদ্ধান্ত হবেনা,বরং এটি আপনার উপর আবশ্যক। 

সেই চাকরিতে যতক্ষন থাকবেন,ততক্ষন সুদী কাজে সহযোগিতার গুনাহ আপনার হতে থাকবে।

সুতরাং আপনি দ্রুত চাকরি ছেড়ে দিয়ে অন্য কোনো হালাল চাকরি খোজার চেষ্টা করুন,অথবা ব্যবসা করতে পারেন।

(উক্ত চাকরির বেতন দিয়ে আপনি কোনো কিছুই করতে পারবেননা,কোনো লোনও শোধ করতে পারবেননা।
এ টাকা সম্পূর্ণভাবে গরিব মিসকিনদের মাঝে ছওয়াবের নিয়ত ছাড়া বণ্টন করে দিতে হবে।)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...