আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
92 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (25 points)
আসসালামু আলাইকুম,
আমি এক ছাত্রী প্রাইভেট পড়াই ইন্টারের,তো সে আজকে আমায় একটি লোমহর্ষক কাহিনি বলল। ওর বাবা ওর সাথে বহুবার জিনা করার চেষ্টা করছে।

ও যখন ক্লাস ৬ এ ছিল তখন ও রাতে এক রুমে ঘুমিয়ে ছিল, সকালে উঠে দেখে ওর গায়ে জামা নেই, পাশে ওর বাবা বসা। এ অবস্থায় জিজ্ঞাসা করলে বাবা মুখ চেপে ধরে আর বলে কাউকে না বলার জন্য। কিন্তু ও ওর মাকে জানায়, মা বিশ্বাস করে না বরং রেগে ওকেই বকাঝকা করে। খালাকে জানায় খালাও প্রথমত অবাক হয়ে যায়, কিছুটা সাপোর্ট দিলেও শেষে বলে উনি তোমার বাবা এমন কিভাবে বল। আর বাবা সবার সামনে নাকি ভালো সাজার চেষ্টা করে, মেয়েকে আম্মু বলে ডাকে আদর করে, যাতে কেউ আরো বিশ্বাস না করে মেয়ের কথা।

ব্যাপারটা একবার হয়নি বরং বারংবার করার চেষ্টা হয়েছে, ওর বাবা সৌদিতে কাজ করে, প্রতি বছর আসে।  তিনি আসলে ও শান্তিতে ঘুমাতেও পারে না সবসময় আতংকে থাকে। একবার ওর (ছাত্রীর) পা ভাঙ্গে তো লাঠি দিয়ে হাটা লাগত, সে সময়ে আংকেল আসে, রুমে যেত আর বলত এখন তো পা টাও নায় যে কিছু করলে দৌড় দিবা। এমনও হইছে নাকি অনেক ধস্তাধস্তি করছে পরে ভোর হয়ে যায় দেখে আন্টির ঘুম থেকে উঠার সময় হয়েছে তখন ছেড়ে দেয় মেয়েকে। মেয়ে ভয়ে নিজের কাছে ছুড়ি রাখত সবসময়। ছাদে গিয়ে সুইসাইডের কথাও মাথায় আনে।  কেউ বিশ্বাস করছে না। ওই লোক প্রতিবার মেয়ের দিকে তাকাতো বাজেভাবে একজন কাম ইচ্ছুক পুরুষের মতো।

এখন প্রশ্ন হলো এ পরিস্থিতিতে কি করতে পারে? আইনি পদক্ষেপ একা ইন্টার পড়ুয়া মেয়ে নিতে পারবে না ( যেহেতু বাংলাদেশের আইন) কারন কোন বড় মানুষের সাপোর্ট নাই। মা স্বাবলম্বী না, যে এ লোককে ছেড়ে দিয়ে আলাদা থাকবে। এর উপায় কি? শরিয়ত কি বলে?  মাকে জানিয়েও সাপোর্ট পাচ্ছে না, কি করা যায় এখন

1 Answer

0 votes
by (566,160 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

হাদীস শরীফে এসেছে 

أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲

যার সারমর্ম হলো যদি কেহ কোনো মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করে,তাহলে সেই মহিলার মেয়ে বা তার মাকে সে কোনোদিন বিবাহ করতে পারবেনা।
(ই'লাউস সুনান ১১/১৩২)

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।      
(ই'লাউস সুনান ১১/১৩১)

হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

শর্তগুলো হল,
১–

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

যার সারমর্ম হলো যদি কাপড় পরিধান অবস্থায় হয় তাহলে যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। 
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবে।   

( যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। ) 

অন্যথায় হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।     

২–

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 

৩-
স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। 
আগে বা পরে উত্তেজিত হলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।      

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। 

বিস্তারিত জানুনঃ 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন ,
প্রশ্নে উল্লেখিত যেই ঘটনা উল্লেখ করেছে,সেটি যদি তার বালেগাহ হওয়ার পরের ঘটনা হয়ে থাকে,সেক্ষেত্রে তো তার বাবা মায়ের মাঝে বৈবাহিক সম্পর্ক আজীবনের জন্য ছিন্ন হয়ে গিয়েছে।

তদুপরি বোনটির জন্য করনীয় হলো যেভাবেই হোক মাকে/পরিবারের অন্য মুরব্বিদের মহিলা সদস্যদের বিষয়টি পুনরায় বুঝানোর। 
প্রয়োজনে প্রমান রেখে দেয়া যেতেও পারে।

কাজ না হলে সেক্ষেত্রে তার বাবা ছুটিতে বাসায় আসলে সে সেই কয়দিন অন্য কোনো আত্মীয়ের বাসায় থাকবে।

দ্রুত বিবাহের চেষ্টা করবে।

তারপরেও কোনোভাবেই কোনো সমাধান না হলে সেক্ষেত্রে আইনি সহায়তা নেয়া ছাড়া আর কোনো উপায় দেখছিনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...