বিসমিহি তা'আলা
সমাধানঃ-
মহান আল্লাহ বলেনঃ
ﻳَﺎ ﺑَﻨِﻲ ﺁﺩَﻡَ ﻗَﺪْ ﺃَﻧﺰَﻟْﻨَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﻟِﺒَﺎﺳًﺎ ﻳُﻮَﺍﺭِﻱ ﺳَﻮْﺀَﺍﺗِﻜُﻢْ ﻭَﺭِﻳﺸًﺎ ﻭَﻟِﺒَﺎﺱُ ﺍﻟﺘَّﻘْﻮَﻯَ ﺫَﻟِﻚَ ﺧَﻴْﺮٌ ﺫَﻟِﻚَ ﻣِﻦْ ﺁﻳَﺎﺕِ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻟَﻌَﻠَّﻬُﻢْ ﻳَﺬَّﻛَّﺮُﻭﻥَ
তরজমাঃ-হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতেরঅন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।[সূরা আল আ’রাফ ২৬]
পোষাকের ক্ষেত্রে ইসলামের কতিপয় মূলনীতির প্রতি লক্ষ্য রেখে একজন মুসলিম যে কোন পোষাক পরতে পারবে। ইসলামে তার অনুমোদন রয়েছে।মূলনীতি গুলো যেমন-
১। সতরকে আবৃত করে রাখা।
সতর সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-975
২। বিশেষ শ্রেণীর কাপড় সম্পর্কে শরয়ী বিধিনিষেধ মান্য করা।
যেমন-(ক)পুরুষদের জন্য রেশমি কাপড় পরিধান না করা।(খ)পুরুষদের জন্য স্বর্ণ ব্যবহার না করা।অহংকার মূলক তথা টাখনুর নিচে পরিধান না করা। এ প্রসঙ্গে কিছু হাদীস উল্লেখ করা হল :
হযরত উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
سَمِعْتُ عُمَرَ، يَقُولُ: قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ لَبِسَ الحَرِيرَ فِي الدُّنْيَا لَمْ يَلْبَسْهُ فِي الآخِرَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি দুনিয়াতে রেশম পরিধান করবে সে আখেরাতে তা থেকে বঞ্চিত হবে।-সহীহ বুখারী(শামেলা) হাদীস : ৫৮৩৪;সহীহ মুসলিম, হাদীস : ২০৬৯/১১
হযরত আবু মুসা আশআরী রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَبِي مُوسَى الأَشْعَرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: حُرِّمَ لِبَاسُ الحَرِيرِ وَالذَّهَبِ عَلَى ذُكُورِ أُمَّتِي وَأُحِلَّ لِإِنَاثِهِمْ
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,আমার উম্মতের পুরুষের জন্য রেশমের পোষাক ও স্বর্ণ হারাম করা হয়েছে আর তা হালাল করা হয়েছে মহিলাদের জন্য।-সুনানে তিরমিযী(শামেলা) হাদীস : ১৭২০
হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ " الْبَسُوا مِنْ ثِيَابِكُمُ الْبَيَاضَ، فَإِنَّهَا مِنْ خَيْرِ ثِيَابِكُمْ، وَكَفِّنُوا فِيهَا مَوْتَاكُمْ، وَإِنَّ خَيْرَ أَكْحَالِكُمُ الْإِثْمِدُ: يَجْلُو الْبَصَرَ، وَيُنْبِتُ الشَّعْرَ "
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,তোমরা সাদা কাপড় পরিধান কর। কেননা তা তোমাদের উত্তম কাপড়ের অন্যতম আর তাতেই তোমাদের মৃতদেরকে কাফন দাও।সর্বোত্তম সুরমা হল ইছমিদ,যা চক্ষুর পাওয়ারকে উন্নত করে এবং চুল গজায়।-সুনানে আবু দাউদ(শামেলা) হাদীস : ৪০৬১
৩। নারী-পুরুষ একে অন্যের সাদৃশ্য গ্রহণ না করা।
এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে অত্যন্ত কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করা হয়েছে।
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,
ﻋَﻦْ ﺍﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ ﺭَﺿِﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ : ( ﻟَﻌَﻦَ ﺭَﺳُﻮﻝُ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﺍﻟْﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬِﻴﻦَ ﻣِﻦْ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ﺑِﺎﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ، ﻭَﺍﻟْﻤُﺘَﺸَﺒِّﻬَﺎﺕِ ﻣِﻦْ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀِ ﺑِﺎﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ ) .
তরজমাঃ নবীজী সাঃ মহিলার সাদৃশ্য গ্রহণকারী পুরুষ ও পুরুষের সাদৃশ্য গ্রহণকারী মহিলার উপর লা'নত দিয়েছেন। সহীহ বুখারী-৫৪২৫।
আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: «لَعَنَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الرَّجُلَ يَلْبَسُ لِبْسَةَ الْمَرْأَةِ، وَالْمَرْأَةَ تَلْبَسُ لِبْسَةَ الرَّجُلِ»
নারীর পোষাক পরিধানকারী পুরুষকে এবং পুরুষের পোষাক পরিধানকারী নারীকে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লানত করেছেন।-আবু দাউদ,হাদীস(শামেলা): ৪০৯৮
বেশ ধারণ করার অন্যতম মাধ্যম হল পোষাক। অতএব নারীর জন্য পুরুষের পোষাক পরিধান করা আর পুরুষের জন্য নারীর পোষাক পরিধান করা হারাম ও কবীরা গুনাহ।
৪। ইসরাফ ও অপচয় থেকে বেঁচে থাকা।
عَنْ أَبِي الْأَحْوَصِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: أَتَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي ثَوْبٍ دُونٍ، فَقَالَ: «أَلَكَ مَالٌ؟» قَالَ: نَعَمْ، قَالَ: «مِنْ أَيِّ الْمَالِ؟» قَالَ: قَدْ آتَانِي اللَّهُ مِنَ الإِبِلِ، وَالْغَنَمِ، وَالْخَيْلِ، وَالرَّقِيقِ، قَالَ: «فَإِذَا آتَاكَ اللَّهُ مَالًا فَلْيُرَ أَثَرُ نِعْمَةِ اللَّهِ عَلَيْكَ، وَكَرَامَتِهِ»
আবুল আহওয়াস তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কাছে এলাম। তখন আমার পরনে ছিল অতি নিম্নমানের পোষাক। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন,তোমার কি সম্পদ আছে? আমি বললাম,জ্বি হ্যাঁ। তিনি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, কী সম্পদ আছে? আমি বললাম,সবধরনের সম্পদই আল্লাহ আমাকে দান করেছেন্তউট, গরু, ছাগল, ঘোড়া, গোলাম ইত্যাদি। তখন তিনি ইরশাদ করলেন, ‘যখন আল্লাহ তাআলা তোমাকে সম্পদ দিয়েছেন তখন তোমার উপর তাঁর নেয়ামতের ছাপ থাকা চাই।’ নাসাঈ, হাদীস : ৫২৯৪,আবু-দাউদ;৪০৬৩
৫। অহংকার ও প্রদর্শনের মানসিকতা থেকে বেঁচে থাকা।
হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا يَقُولُ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ جَرَّ ثَوْبَهُ مَخِيلَةً لَمْ يَنْظُرِ اللَّهُ إِلَيْهِ يَوْمَ القِيَامَةِ»
নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, যে ব্যক্তি অহংকারবশত মাটিতে কাপড় টেনে টেনে চলে আল্লাহ তাআলা কেয়ামতের দিন তার দিকে দৃষ্টিপাত করবেন না (রাগান্বিত থাকবেন)বুখারী,হাদীস : ৫৭৯১
অন্য হাদীসে ইরশাদ হয়েছে,হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا أَسْفَلَ مِنَ الكَعْبَيْنِ مِنَ الإِزَارِ فَفِي النَّارِ»
লুঙ্গির যে অংশ টাখনুর নিচে যাবে তা (অর্থাৎ টাখনুর নিচের সেই স্থান) জাহান্নামে জ্বলবে।-বুখারী, হা. : ৫৭৮৭
হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، - قَالَ فِي حَدِيثِ شَرِيكٍ: يَرْفَعُهُ - قَالَ: «مَنْ لَبِسَ ثَوْبَ شُهْرَةٍ أَلْبَسَهُ اللَّهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ثَوْبًا مِثْلَهُ» زَادَ عَنْ أَبِي عَوَانَةَ «ثُمَّ تُلَهَّبُ فِيهِ النَّارُ»
যে ব্যক্তি দুনিয়াতে প্রসিদ্ধির (উদ্দেশ্যে) পোষাক পরিধান করবে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাকে লাঞ্ছনার পোষাক পরিধান করাবেন।-আবু দাউদ, হাদীস : ৪০২৯; ইবনে মাজাহ,হাদীস : ৩৬০৩/৩৬০৭
৬। অগোছালো পোষাক পরিধান না করা।
হাদীস শরীফে আছে, নবীয়ে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে বসা ছিলেন, ইতিমধ্যে এক ব্যক্তি মসজিদে প্রবেশ করল, যার চুল ও দাড়ি ছিল এলোমেলো। নবীজী তাকে হাতের ইশারায় পরিপাটি হয়ে আসতে বললেন। তিনি পরিপাটি হয়ে এলেন। নবীজী তখন ইরশাদ করলেন, কেউ মাথার চুল আউলিয়ে মূর্তিমান শয়তানের মতো উপসি'ত হওয়ার চেয়ে বর্তমান বেশটি কি উত্তম নয় ।’-মুয়াত্তা মালেক ২/২৬২
হাদীস শরীফে আছে, আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন,
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ: " نَهَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عَنِ المُلاَمَسَةِ وَالمُنَابَذَةِ، وَعَنْ صَلاَتَيْنِ: بَعْدَ الفَجْرِ حَتَّى تَرْتَفِعَ الشَّمْسُ، وَبَعْدَ العَصْرِ حَتَّى تَغِيبَ، وَأَنْ يَحْتَبِيَ بِالثَّوْبِ الوَاحِدِ لَيْسَ عَلَى فَرْجِهِ مِنْهُ شَيْءٌ بَيْنَهُ وَبَيْنَ السَّمَاءِ،وَأَنْ يَشْتَمِلَ الصَّمَّاءَ "
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ‘মুলামাসাহ’ ও ‘মুনাবাযাহ’ থেকে নিষেধ করেছেন এবং দু’সময়ে সালাত আদায় করা থেকেও অর্থাৎ ফজরের (সালাতের) পর সূর্য উপরে উঠা পর্যন্ত এবং ‘আসরের (সালাতের) পর সূর্যাস্ত পর্যন্ত। আরও নিষেধ করেছেন একটি মাত্র কাপড় এমনভাবে পরতে, যাতে লজ্জাস্থানের উপরে তার ও আকাশের মধ্যস্থলে আর কিছুই থাকে না। আর তিনি কাপড় মুড়ি দিয়ে বসতে নিষেধ করেছেন।সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৮১৯, ৫৮২২
উক্ত হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক চাদরে ইহতিবা করতে নিষেধ করেছেন।
এখানে ইহতিবা অর্থ হল, মাটিতে দুই হাঁটু খাড়া করে বসে এক চাদরে পুরো শরীর ও দুই পা আবৃত করা। এতে উপর দিয়ে সতর দৃষ্টিগোচর হতে পারে।তদ্রূপ লুঙ্গি পরে বিছানায় বা মাটিতে শুয়ে হাঁটুর উপর পা তুলে দিতেও নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন।কেননা, এতেও সতর খুলে যাওয়ার আশংকা রয়েছে।(জামউল ওসাইল শরহু শামায়িলিত তিরমিযী ১/১৭৯)
এবং রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইশতিমালুস সাম্মা থেকে নিষেধও করেছেন।
ইশতিমালুস সাম্মা বলা হয় চাদর জাতীয় কোনো পোষাক দ্বারা পুরো শরীরকে এমনভাবে পেঁচিয়ে নেওয়া যে, সহজভাবে চলাফেরা করা যায় না এবং প্রয়োজনের সময় তাড়াতাড়ি হাত বের করাও যায় না। যেমন গ্রামাঞ্চলে দেখা যায়,শীতকালে মায়েরা শিশুদের গায়ে চাদর জড়িয়ে ঘাড়ের কাছে গিঁট মেরে দেন। এভাবে কাপড় পড়া অনুচিত।
৭। পোষাক পরিষ্কার ও পরিপাটি হওয়া।
عَنْ جَابِرِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ: أَتَانَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَرَأَى رَجُلًا شَعِثًا قَدْ تَفَرَّقَ شَعْرُهُ فَقَالَ: «أَمَا كَانَ يَجِدُ هَذَا مَا يُسَكِّنُ بِهِ شَعْرَهُ، وَرَأَى رَجُلًا آخَرَ وَعَلْيِهِ ثِيَابٌ وَسِخَةٌ، فَقَالَ أَمَا كَانَ هَذَا يَجِدُ مَاءً يَغْسِلُ بِهِ ثَوْبَهُ»
জাবির রা. বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের নিকট এলেন এবং এক ব্যক্তির মাথার চুল এলোমেলো দেখলেন। তখন তিনি ইরশাদ করলেন, ‘এই লোকের কি এমন কিছু নেই,যা দিয়ে সে তার মাথা পরিপাটি করবে?’ অপর এক ব্যক্তিকে ময়লা কাপড় পরিহিত দেখে বললেন, ‘এর কাছে কি এমন কিছু নেই যা দিয়ে তার কাপড় ধৌত করবে।’-আবু দাউদ, হাদীস : ৪০৫৬
৮। বিজাতির অন্ধ অনুকরণ থেকে বেঁচে থাকা।
হযরত ইবনে উমর রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ «ﻣﻦ ﺗﺸﺒﻪ ﺑﻘﻮﻡ ﻓﻬﻮ ﻣﻨﻬﻢ »
তরজমাঃ-রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন, যে ব্যক্তি যার অনুসরণ করবে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে।সুনানে আবু-দাউদ৩৫১২
৯। খুব পাতলা বা আঁটোসাঁটো না হওয়া।
হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত।তিনি বলেন
عن أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم: «صنفان من أهل النار لم أرهما، قوم معهم سياط كأذناب البقر يضربون بها الناس، ونساء كاسيات عاريات مميلات مائلات، رءوسهن كأسنمة البخت المائلة، لا يدخلن الجنة، ولا يجدن ريحها، وإن ريحها ليوجد من مسيرة كذا وكذا»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,জাহান্নামের দু'টি দল,যাদেরকে এখন পর্যন্ত আমি দেখিনি।(ক)ঐ দল যাদের সাথে গরুর লেজের মত লাঠি থাকবে যা দ্বারা তারা লোকদিগকে প্রহার করবে।(খ)ঐ সমস্ত পোশাকধারী উলঙ্গ মহিলা,যারা আকৃর্ষিত হবে এবং পুরুষদেরকে আকর্ষৃত করবে।তাদের মাথা উঠের পিঠের মত কুজো এবং আকর্ষনকারী হবে।তারা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না।এমনকি তারা তার সুঘ্রাণ ও পাবে না।অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ এত এত দূরত্ব থেকে সহজেই পাওয়া যাবে।সহীহ মুসলিম-২১২৮
১০। পোষাক পরিধান করে আল্লাহর শোকরগোযারী করা।
আবু সাঈদ খুদরী রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন কোনো নতুন কাপড় পরিধান করতেন তখন বলতেন্ত
ﺍﻟﻠﻬﻢ ﻟﻚ ﺍﻟﺤﻤﺪ، ﺃﻧﺖ ﻛﺴﻮﺗﻨﻲ ﻫﺬﺍ، ﻧﺴﺄﻟﻚ ﺧﻴﺮﻩ ﻭﺧﻴﺮ ﻣﺎ ﺻﻨﻊ ﻟﻪ ﻭﺃﻋﻮﺫﺑﻚ ﻣﻦ ﺷﺮﻩ ﻭﺷﺮ ﻣﺎ ﺻﻨﻊ ﻟﻪ
ইয়া আল্লাহ! তোমারই প্রশংসা। তুমিই আমাকে এই পোষাক পরিয়েছ। আমরা তোমার নিকট এই কাপড়ের কল্যান (যথা,টেকসই হওয়া, প্রয়োজনে কাজে আসা) ও উপকারিতা প্রার্থনা করি এবং এর অকল্যাণ ও অপকারিতা থেকে পানাহ চাই।তিরমিযী, হাদীস : ১৭৬৭
সু্প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
রাসূলুল্লাহ সাঃ থেকে লুঙ্গী, জোব্বা, টুপি,পাগড়ী এবং কোনো কোনো বর্ণনা অনুযায়ী পায়জামা পড়াও প্রমাণিত রয়েছে।লুঙ্গি জোব্বা এ সবই নিসফে সাক পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ সাঃ পরিধান করেছেন।সুতরাং এই সমস্ত পোষাক পরিধান করা রাসূলুল্লাহ সাঃ এর সুন্নাত।তবে এই সুন্নত, সুন্নতে যায়েদা, অর্থাৎ যা অত্যাবশ্যকীয় নয়।তবে অবশ্যই রাসূলুল্লাহ সাঃ অনুসরণ হিসেবে কল্যাণকর ।এছাড়া আরো পোষাক যেগুলো নেককারগণ পরিধান করেছেন,সেগুলোও পরিধান করা যাবে।সার্ট-পেন্ট ইত্যাদিও পরিধান করা যাবে যদি সেগুলো পোষাক পরিধানের মূলনীতির বিরোধী না হয়ে থাকে।কিন্তু অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় পোষাক পরা যাবে না।এটা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ-১৯/২৬০