আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
68 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমতুল্লাহ।
আমি জানতে চাচ্ছি
১. কেউ কি তার উপার্জনে করা সম্পত্তি থেকে কাউকে (যেমন ১ম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর ২য় স্ত্রীকে বা ১ম বা ২য় পক্ষের সন্তানকে) জীবীত অবস্থায় দিতে পারবে?
২.  ধরুন,কেউ উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সম্পত্তি বিক্রি করে নতুনভাবে অন্যকোথাও জমি কিনেছে।এই জমিও কি সে তার জীবীত অবস্থায় ইচ্ছা অনুযায়ী বন্টন করতে পারবে?

৩. উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া এবং নিজের উপার্জনে করা সম্পত্তি বণ্টনে একজন মানুষের ইখতিয়ার কতটুকু? সে কি ইচ্ছে মত জীবিত অবস্থায় ওয়ারিসদের মধ্যে কম বেশি করে দিতে পারবে?[শত্রুতা ব্যাতীত,যেমন কারও ইনকাম কম, তাই সে জীবীত অবস্থায় ঐ ছেলেকে অন্য ছেলেদের চেয়ে বেশি দিয়েছে কিছু টাকা।বা কোনো ছেলে ভুলিয়ে ভালিয়ে বেশি নিয়ে নিল।আবার ২য় স্ত্রীর নিরাপত্তার কথা ভেবে তাকে ঘর লিখে দেওয়া হল যার জমি তার বাবার কেনা সম্পত্তি বিক্রি করার টাকায় কেনা এবং ঘরটি তৈরি হয়েছে নিজের উপার্জনের টাকায়।]

১ও২ এর সাথে ৩ নং প্রশ্নটা যদিও একই।তারপরও আবার ডিটেইলসে করলাম যদি ভিন্ন কিছু জানতে পারি।

৪. জীবিত অবস্থায় কারও পেনশনের টাকার বন্টনের ক্ষেত্রেও তার ইখতিয়ার কতটুকু? ( একছেলের ব্যবসায় খারাপ যাচ্ছে তাই তাকে ধার দেওয়া হল কিছু টাকা, কিন্তু পরে সে দিবেনা বলে অস্বীকার করে।আরেক ছেলে বেশ বড় এক এমাউন্ট চায় ব্যবসা করতে, যদিও সে বেশ ভালো চাকরি করে,চাকরির পাশাপাশি আরেকটা বিজনেস করতে চায়,কিন্তু বাবা তাকে টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানান। কারন সেই ছেলেকে সে বিশ্বাস করতে পারছে না।কিন্তু একই পরিমাণ টাকা সে অন্য ছেলে দেয় বিজনেস করতে এইভাবে যে সে বিশ্বাসযোগ্য এবং সেই ছেলে সেভাবেই বাবা মাকে দেখাশোনা করে। উল্লেখ্য যে সে টাকাটা এই ছেলেকেও ধার দিয়েছে। বলা আছে যে ব্যবসা গুছিয়ে তার টাকা তাকে ফেরত দিতে হবে।কিন্তু কবে দিবে তা বলা নেই।এভাবে বিশৃঙ্খলভাবে সব টাকাগুলো অন্যান্য ছেলে মেয়েদের মাঝেও বন্টন করা হয়ে যায়।এতে কেউ কম পায়,কেউ অনেক বেশি। আবার কেউ পায়না।যে দুজন পায়নি(এদের একজনকে বাবা আগে কিছু জমি কিনে দিয়েছেন যা অন্য কাউকে দেননি) তারা কিছু ভুল করে।মানে অন্যরা যেভাবে বাধ্য থেকে,বা চেষ্টা চালিয়ে টাকাটা নেয়,তারা উল্টো বাবার সাথে খারাপ আচরণ করে।তাই তখন তাদের দেওয়া হয়না।এদিকে টাকাও শেষ হয়ে যায়।কিন্তু বাবার নিয়ত ছিল না যে তাদের দিবে না।পরে দিবে ভেবেছে।কিন্তু ততদিনে বিভিন্ন ইস্যুতে টাকা শেষ হয়ে যায়।এতটা বিস্তারিত বলার কারন হল,  এটা যাতে বুঝতে পারেন যে কিভাবে আসলে বন্টন হয়েছে।)
দয়াকরে জানাবেন।

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
জবিউল ফুরুজঃ
এদের অংশ পবিত্র কোরআন শরীফে নির্ধারণ করে দেয়া আছে। জবিউল ফুরুজ হল ১২ জন। এদের মধ্যে ৪ জন পুরুষ এবং বাকি ৮ জন মহিলা। ৪ জন পুরুষ হল - ১) স্বামী, ২)পিতা, ৩)দাদা, ৪) সৎ ভাই (বৈপিত্রেয়)। ৮ জন মহিলা হল - ১)স্ত্রী, ২)কন্যা, ৩)পুত্রের কন্যা, ৪)মাতা, ৫)দাদি এবং নানি, ৬)সহোদর বোন, ৭) সৎ বোন (বৈমাত্রেয়), ৮)সৎ বোন (বৈপিত্রেয়)। নির্ধারিত অংশের পরিমান নিম্নরূপঃ
(১) স্বামী ১/৪ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে।
(২) স্বামী ১/২ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকে।
(৩) স্ত্রী ১/৮ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান থাকে।
(৪) স্ত্রী ১/৪ পাবে যখন সন্তান বা পুত্রের সন্তান না থাকে।
(৫) কন্যা ১/২ পাবে যখন একজন মাত্র কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে।
(৬) কন্যা ২/৩ পাবে যখন দুই বা ততধিক কন্যা থাকে এবং পুত্র না থাকে।
(৭) কন্য অবশিষ্ট ভোগী হিসাবে পাবেন যখন এক বা একের অধিক পুত্র থাকে।
এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/343

হযরত আনাস ইবনে মালেক রাযি থেকে বর্ণিত,
عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ فَرَّ مِنْ مِيرَاثِ وَارِثِهِ، قَطَعَ اللَّه ُمِيرَاثَهُ مِنَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ যে ব্যক্তি তার ওয়ারিছদেরকে মিরাছ প্রদান থেকে পলায়ন করবে(তথা-ওয়ারিছদেরকে মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবে)আল্লাহ তা'আলা ক্বিয়ামতের দিন তাকে জান্নাতের মিরাছ থেকে বঞ্চিত করবেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ-২৭০৩)

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
ﻋَﻦِ اﺑْﻦِ ﻋَﺒَّﺎﺱٍ - ﺭَﺿِﻲَ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻨْﻬُﻤَﺎ - ﻋَﻦِ اﻟﻨَّﺒِﻲِّ - ﺻَﻠَّﻰ اﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ - ﻗَﺎﻝَ: «ﻻَ ﻭَﺻِﻴَّﺔَ ﻟِﻮَاﺭِﺙٍ، ﺇِﻻَّ ﺃَﻥْ ﻳَﺸَﺎءَ اﻟْﻮَﺭَﺛَﺔُ»
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেনঃ ওয়ারিছদের জন্য কোনো ওসিয়ত নেই,তবে যদি অন্যান্য সমস্ত ওয়ারিছরা রাজি থাকে তাহলে জায়েয আছে। (মিশকাত-৩০৭৪)

ঙসু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
মানুষ তার জীবদ্দশায় তার সম্পত্তিকে যেকোনো ভাবে যে কোনো ত্বরিকায় খরচ করতে পারবে। ওয়ারিছদের মধ্যে যে কোনো একজন কে কমবেশ যা ইচ্ছা সে  দিতে পারবে। তবে অন্য ওয়ারিছকে বঞ্চিত করার নিয়তে শুধুমাত্র একজনকে সবকিছু বা বৃহৎ অংশ দেওয়া জায়েয হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...