ওয়া
আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
بسم
الله الرحمن الرحيم
জবাব,
ফরজ
নামাজ পড়ার জন্য যতটুকু সূরা-কেরাআত জানা প্রয়োজন ততটুকু পরিমাণ কোরআন শিক্ষা করা ফরজ।
পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, এর তরজমা ও তাফসীর অধ্যয়ন এবং কোরআন শরীফ হেফজ বা মুখস্থ করা
অনেক পূণ্যের কাজ। মুসলিম জাতির যোগ্য ও মেধাবী সদস্যদের পক্ষে আল কোরআন নিয়ে গবেষণা
করা একটি অপরিহার্য কর্তব্য। ইসলামী বিধানের আলোকে জীবনযাপন করার জন্যে যতটুকু ইলমে
দীন বা কোরআন-সুন্নাহর জ্ঞান শিক্ষা করা দরকার ততটুকু হাসিল করা প্রতিটি মুসলমানের
ওপর ফরজ।
https://www.ifatwa.info/3782 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
ইবনে
আবেদীন শামী রাহ,জ্ঞান শিক্ষা ফরয সম্পর্কিত একটি মূলনীতি তুলে ধরেন।যাকে আমাদের সামনে
আসলে,ভবিষ্যৎ অনেক অস্পষ্টতা দূরবিত হয়ে যাবে ইনশা'আল্লাহ।
তিনি
বলেনঃ
وَكُلُّ مَنْ اشْتَغَلَ بِشَيْءٍ يُفْرَضُ عَلَيْهِ عِلْمُهُ وَحُكْمُهُ لِيَمْتَنِعَ عَنْ الْحَرَامِ فِيهِ اهـ
যে বক্তি
কোনো জিনিষ বা কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট হবে নিজেকে সংশ্লিষ্ট করজে, তার উপর উক্ত বিষয়
সম্পর্কে ইলম অর্জন করা ফরয।যাতে করে উক্ত বিষয় ও বিষয় সংশ্লিষ্ট সমস্ত হারাম থেকে
সে অনায়াসে বেছে থাকতে পারে। (রদ্দুল মুহতার-১/৪২)..................বিস্তারিত জানতে
ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1893
আপনি
জানতে চাচ্ছেন যে, কতোটুকু জ্ঞান অর্জন করাটা ফরয?কী কী জিনিষ এই ফরজ ইলমের অন্তর্ভুক্ত?
এবং কোন কোন বিষয়? বা কতটুককু জ্ঞানার্জন করলে কেউ ধরে নিতে পারবে যে,তার ফরজ পরিমাণ
ইলম অর্জিত হয়ে গেছে।
এর উত্তর
হচ্ছে, আল্লাহর ফরয হুকুমকে ঠিক ঠিক ভাবে অনুসরণ করতে এবং নিষিদ্ধ বিষয় থেকে বাঁচতে
যত বিষয় সম্পর্কে যতটুকু ইলমের প্রয়োজন ততটুকু ইলম শিক্ষা ফরয।যেমন,নামায আল্লাহর ফরয
বিধান,নামায পড়ার জন্য পবিত্রতা অর্জন শর্ত।তাই পবিত্রতার ইলম অর্জন ফরয।ঠিকতেমনি কেরাত
ফরয, তাই কেরাত শিক্ষা ফরয।ঈমান আনয়নের জন্য শিরক মুক্ত হয়ে মনেপ্রাণেএকমাত্র আল্লাহকে
বিশ্বাস করা ও তার বিধি-বিধান কে মান্য ফরয।তাই এ সম্পর্কীয় ইলম অর্জন ফরয।এবং রোযা
আল্লাহর ফরয বিধান।রোযা রাখতে হলে তার করণীয় ও বর্জনীয় বিষয় সম্পর্কে যথেষ্ পরিমাণ
ইলম অর্জন ফরয।অর্থাৎ যতটুকু ইলম হলে রোযাকে নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচিয়ে রাখা যায়,ততটুকু
পরিমাণ ইলম অর্জন ফরয।ইত্যাদি ইত্যাদি।
যেকোনো
ভাবেই হোক ফরয সমপরিমাণ ইলম অর্জন করতে হবে। সর্বোত্তম মাধ্যম হল, সরাসরি উস্তাদের
নিকট উপস্থিত হয়ে কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করা। যদি সরাসরি উস্তাদের নিকট উপস্থিত হওয়া সম্ভব
না হয়, তাহলে তখন ইউটিউবের মাধ্যমে কুরআন শিখার চেষ্টা করতে হবে। ইউটিউবে ভিডিও দেখতে
গিয়ে যদি কখনো কোনো হারাম এ্যড চলে আসে, তাহলে সাথে সাথে চোখকে ফিরিয়ে নিতে হবে।এবং
অতিদ্রুত স্কিপ করতে হবে।এই এ্যাড আসার কারণে কুরআন শিখাকে পরিত্যাগ করা যাবে না। কেননা
জরুরত অনেক জিনিষে শেষ পর্যন্ত রুখসত নিয়ে আসে।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রিয়
বোন! আপনার জন্য কোরআন তেলাওয়াত অশুদ্ধ হওয়ার কারণে সালাত ত্যাগ
করা মোটেই জায়েজ হয়নি। আপনার জন্য আবশ্যক হলো যে, অনতিবিলম্বে
ছোট ছোট পাঁচ ছয়টি সূরা বিশুদ্ধভাবে
মুখস্ত করবেন এবং সালাত আদায় করবেন। আপনার সাধ্যানুযায়ী তেলাওয়াত সহিহ করার জন্য সর্বাত্মক
চেষ্টা করতে হবে এবং সালাতও আদায় করতে হবে।
বিষয়টি মোটেও এমন নয় যে, আগে কোরআন
তেলাওয়াত সহিহ করতে হবে অতপর সালাত আদায় করতে হবে। কারণ, আপনার উপরে নামাজ পড়া যেমন
ফরজ ঠিক তেমনি ভাবে একই সময় ফরজ পরিমাণ কোরআন শিক্ষা করাও আবশ্যক।
বিধায় তেলাওয়াত সহিহ করার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা
করতে হবে এবং সালাতও ত্যাগ করা যাবে না। সুতরাং
আপনি নিয়মিত নামাজ পড়বেন এবং সাধ্য অনুযায়ী
বিশুদ্ধভাবে তেলাওয়াত করার চেষ্টা করবেন। আশা করি দ্রত আপনার পড়া সুদ্ধ হয়ে যাবে ইশাআল্লাহ। উত্তম হবে যদি স্থানীয় কোন আলেমা, হাফেজা বা দ্বীনি
বোনের কাছ থেকে তেলাওয়াত শিখেন। যদি আপনার আশেপাশে পরিচিত এমন কেউ না থাকে এমতাবস্থায়
অনলাইনেও কোরআন শিখতে পারেন। কিন্তু আপনার
উপরে নামাজ পড়া যেহেতু ফরজ তাই নামাজ ত্যাগ করা যাবে না। যেই দুইদিন আপনি নামাজ পড়েননি
উক্ত নামাজগুলো কাযা করে নিবেন।