বিবাহ সংক্রান্ত একটি প্রশ্ন

Question

আসসালামু আলাইকুম।
আমি প্রায় দীর্ঘদিন যাবৎ একটি হারাম সম্পর্কে যুক্ত আছি। দ্বীনের বুঝ আসার পরেও আমি সেটি থেকে বের হতে পারি নি। অনেকবার চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারি নি। আমি আমার বাসায় জানিয়েছি। ছেলের সাথে দেখা করাইছি। তাদের পছন্দ হয়েছে। এবং ছেলেকে কথা দিয়েছে যে আমাকে তার সাথেই বিয়ে দিবে।
অপরদিকে ছেলের বাসায় ও জানানে হয়েছে। তাদেরও পছন্দ আমাকে। কিন্তু তারা এখনি বিয়ে দিতে চায় না। ছেলে পড়াশোনা করতেছে। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করবে তারপর বিয়ে দিবে বলছে।
এদিকে আমার বাবা মা বিয়ে দিতে রাজি একটাই শর্ত ছেলের বাবা মা কে জানিয়ে বিয়ে দিবে। কিন্তু ছেলের বাসায় অসংখ্য বার বুঝানোর পরেও একটাই কথা তাদের ছেলে আগে ইনকাম করবে তারপর। আমার পরিবার ভরনপোষণ এর দায়িত্ব ও এখনি নিতে বলে নি। শুধু সম্পর্ক টা ঠিক রাখতে বিয়ে দিতে চাচ্ছিলো। যখন ছেলের মা মানে নি তখন আমার পরিবার ও বলছে যে পরেই বিয়ে দিবে। এখন এমনি কথা বলো।
২ পরিবারই আমাদের এই মেলামেশা টা এক্সেপ্ট করছে। কিন্তু আমরা যিনার পাপ থেকে বাচতে এবং বাবা মা কে দাইয়ূস না বানানোর জন্য একা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমরা কি ঠিক করতেছি একটু জানাবেন ইনশাআল্লাহ??  আর বিয়ে টা হয়ে যাবে কি না।

Answer 1

জবাবঃ-

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 

بسم الله الرحمن الرحيم

শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক (বালেগ) সমঝদার (বুঝবান) সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক (বালেগ) পাত্র ও পাত্রি (বালিগাহ)  যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।

,

বিস্তারিত জানুনঃ- 

https://ifatwa.info/4801/

https://ifatwa.info/1525/

রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ

وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!

(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি পাত্র এবং আপনি উভয়ে বালেগ বালেগাহ হোন,এবং দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ  সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করেন, তাহলে বিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে যাবে।

(উল্লেখ্য যে  মাতাপিতা সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে।এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও অাখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম।মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী হওয়া যাবে না।

তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব।

সুতরাং যদিও উপরে উল্লেখিত পদ্ধতিতে আপনাদের বিবাহ হয়ে যাবে,তারপরেও উভয়ের অভিভাবককে রাজী করানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করার পরামর্শ থাকবে। 

প্রয়োজনে ছেলে নিজের মুরব্বিদের স্বরনাপন্ন হয়ে তাদের মাধ্যমে নিজের পরিবারকে শুধু বিবাহ পড়িয়ে রাখার জন্য রাজি করাবে।)