আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
77 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (9 points)
আমার স্বামীকে আমি সব সময় বোঝানোর চেষ্টা করি ইসলামের গুরুত্ব। সে একদম ই দুনিয়ামুখি মানুষ আজ ৫ বছর যাবৎ তাকে আলহামদুলিল্লাহ দ্বীনের পথে চলতে দেখছি। কিন্তু তার সমস্যা সে মিথ্যা অবলিলায় বলে ফেলে যদিও সে ধরা খেয়ে যায়। এই মিথ্যার জন্য তার সাথে প্রায় ই রাগারাগি হয় তবুও মিথ্যা যেনো তার অভ্যাস। আমি সম্পূর্ণ শরিয়া মেনে পর্দা করি আমার স্বামীর বাড়ির মানুষ কেউ পছন্দ করে না এবং আমি এক রুমের একটা ছোট্ট ঘরে থাকি। সেখানে থাকাটা দুষ্কর হয়ে পড়ায় বাবার বাড়ি আসতে বাধ্য হয়েছি।

আমার স্বামী আমাকে বাবার বাড়ি আসলে কখনোই নিজ থেকে কল করে না। আজ প্রায় ১০/১৫ দিনের মতো হয়েছে আমি বাবার বাড়ি আছি তাকে আমার ই কল দিতে হয়। গতকাল খুব রাগারাগির পর উনি বাড়িতে আসেন। উনি আসলে পর ফোন থেকে এমন কিছু দেখতে পাই যা আমাকে ভিষণ কষ্ট দিয়েছে!

এমতাবস্থায় আমি তাকে খুব জোরে খামচি দিয়েছিলাম আর গলায় হাত দিয়ে বলেছিলাম আজ শুধু গলায় ধরেছি পরেরবার আমি সত্যিই খুন করে ফেলবো। আমি মূলত ভয় দেখাবার জন্য এ কথাগুলো বলেছিলাম। তার গুনাহের কথাটা আমি বলছি না যে সে কি করেছে তবে ইসলামে একে জিনা বলেই পরিচয় দিয়েছে। আমি তার থেকে দূরে থেকেও নিজেকে তার জন্য রক্ষা করে রেখেছি আর উনি আমার নজরের আড়াল হয়ে এসব করে বেড়াচ্ছেন। আমার হক্বের ব্যাপারে সবাই এতো অমনোযোগী যে কখনও কখনও ভীষণ হতাশ হই। স্বামীকে আমি খুব ভালো মানুষ এবং বিশ্বাস ও করতাম যে ভাবতাম - আর যাই হোক উনি এসব করবেন না। কারণ উনি আমাকে কথা দিয়েছিলেন যে আগে যা করেছি,করেছি; এখন বিয়ে করেছি আমার আর কোথাও ইন্টারেস্ট নেই।

রিসেন্টলি তার এই কাজের আমি যে তাকে রাগের মাথায় খামচি টা জোরেই দিয়েছিলাম তবে গলায় চাপটা ইচ্ছা করেই দিয়েছিলাম হালকাভাবে। আমি যে উনার সাথে এমন আচরণ করে ফেললাম এতে কি আমার গুনাহ হয়েছে? আমার কি উচিত উনার কাজে ক্ষমা চাওয়া? আমার তার এই কাজকে কিভাবে দেখা উচিত ছিলো আর কি করা উচিত ছিলো?

আমি জানি আমার রাগ নিয়ন্ত্রণ করা উচিত ছিলো কিন্তু আমি নিজেকে সংযত করতে পারিনি। তার বারবার মিথ্যা কথা বলা আর আমার উপর রাগ দেখানোটা আমাকে আরোও insecurity তে ভোগাচ্ছিলো। আমি তাকে শুধু মিথ্যাবাদীই ভাবতাম এখন তাকে একজন জীনাখোর হিসেবেই দেখছি যা আমার জন্য পীড়াদায়ক। আর এই চিন্তাটা আমাকে ভিষণ রকমের কষ্ট দিচ্ছে। স্বামীর পরিবারের কারণে যে আমরা একত্রিত হতে পারছি না আর তাকে দিয়ে যে গুনাহ হলো এর জন্য কি উনারাও দায়ী থাকবেন না?

আমার এই দুঃখ কাউকেই শোনাবার নেই আমার আল্লাহ ছাড়া তাই আরোও বিক্ষিপ্ত আছি। তার গুনাহ কারো সামনে আনতে চাইছি না,বলতেও চাইছি না তাই মেহেরবানী করে যদি আমার প্রশ্নের উত্তরটা দিতেন এবং ছোট বোন হিসেবে যদি কিছু নাসিহাহ করতেন আমি খুবই উপকৃত হতাম।

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

যে নারী স্বামীর একান্ত অনুগতা ও পবিত্র সে নারীর বড় মর্যাদা রয়েছে ইসলামে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন,

إِذَا صَلَّتِ الْمَرْأَةُ خَمْسَهَا، وَصَامَتْ شَهْرَهَا، وَحَصَّنَتْ فَرْجَهَا، وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا، دَخَلَتْ مِنْ أَيِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ.

‘‘রমণী তার পাঁচ ওয়াক্তের নামায পড়লে, রমযানের রোযা পালন করলে, ইজ্জতের হিফাযত করলে ও স্বামীর তাবেদারী করলে জান্নাতের যে কোন দরজা দিয়ে ইচ্ছামত প্রবেশ করতে পারবে।
(মিশকাতুল মাসাবিহ ৩২৫৪।)

وَعَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ: قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: أَيْ النِّسَاءِ خَيْرٌ؟ قَالَ: «الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَلَا مَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ» . رَوَاهُ النَّسَائِيُّ وَالْبَيْهَقِيُّ فِي شُعَبِ الْإِيمَان

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, কোন্ রমণী সর্বোত্তম? উত্তরে তিনি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, যে স্বামী স্ত্রীর প্রতি তাকালে তাকে সন্তুষ্ট করে দেয়, স্বামী কোনো নির্দেশ করলে তা (যথাযথভাবে) পালন করে এবং নিজের প্রয়োজনে ও ধন-সম্পদের ব্যাপারে স্বামীর ইচ্ছার বিরুদ্ধাচরণ করে না।
হাসান :
(নাসায়ী ৩২৩১, আহমাদ ৭৪২১, ইরওয়া ১৭৮৬, সহীহাহ্ ৮৩৩৮, সহীহ আল জামি‘ ৩২৯৮.মিশকাত ৩২৭২।)

★স্ত্রীর নিকট স্বামীর মর্যাদা বিরাট। এই মর্যাদার কথা ইসলাম নিজে ঘোষণা করেছে। প্রিয় নবী (সাঃ) বলেন, 
لَوْ كُنْتُ آمِرًا أَحَدًا أَنْ يَسْجُدَ لِأَحَدٍ لَأَمَرْتُ الْمَرْأَةَ أَنْ تَسْجُدَ لِزَوْجِهَا.

‘‘যদি আমি কাউকে কারো জন্য সিজদা করতে আদেশ করতাম, তাহলে নারীকে আদেশ করতাম, সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে।’’

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
আপনি যে খামচি দিয়েছেন,এটা শরীয়ত বিরোধী কাজ। স্বামীকে এভাবে দৈহিক শাস্তি দেয়ার অধিকার আপনার নেই।

এমতাবস্থায় প্রশ্নে উল্লেখিত সমস্যার সমাধান বুঝিয়ে করাটাই উচিত ছিলো।
তাতে সমাধান না হলে উভয় পরিবারের মুরব্বিদের মাধ্যমে মিটিং করে আপনার স্বামীকে বুঝানো উচিত ছিলো।

সর্বপরি উক্ত কাজের জন্য স্বামীর কাছে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...