আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
67 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (0 points)
আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ হুজুর। জান্নাতে আল্লহ তার বান্দাদের অনেক নিয়ামত দিবেন। তার মধ্যে একটি হলো হুর।এখন আল্লাহর কোনো বান্দা যদি হুরদেরকে না চেয়ে শুধু তার স্ত্রীর সাথে থাকতে চায় এটার জন্য দোয়া করা কি জায়েজ হবে?
আর জান্নাতে কি এভাবে থাকা যাবে?
আল্লাহ কি এতে নারাজ হবেন?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

কোরআন-হাদীসে যে সমস্ত হুরের আলোচনা এসেছেতারা মহিলা জাতীয় অর্থ্যাৎ স্ত্রী লিংগতবে কেউ কেউ বলে থাকেন হুর পুরুষ মহিলা উভয়-ই হতে পারেউক্ত মতানুসারে ফলাফল  এই হবে যে পুরুষকে মহিলা হুর দেওয়া হবেএবং মহিলাকে পুরুষ হুর দেওয়া হবে,আসলে বক্তবটা এমন নয় যেমন তারা ভেবেছেন,বরং জান্নাতি হুর বলতে মহিলা জামিয়া হুর-ই কেননা আল্লাহ তা'আলা যেখানেই হুর সম্পর্কে আলোচনা এনেছেনসেখানেই স্ত্রী লিংগের শব্দ ব্যবহার  করেছেন,এবং যেসব স্থানে পুঃলিঙ্গ এসেছে সেখানে উলামায়ে কেরাম তার তাবীল বা মাননসই ব্যখ্যা প্রদান করেছেন। শুনুন এ সম্পর্কে  আল্লাহ তা'আলার শাশ্বত বানী সমূহ.....


ﺇِﻧَّﺎ ﺃَﻧﺸَﺄْﻧَﺎﻫُﻦَّ ﺇِﻧﺸَﺎﺀً ، ﻓَﺠَﻌَﻠْﻨَﺎﻫُﻦَّ ﺃَﺑْﻜَﺎﺭًﺍ ، ﻋُﺮُﺑًﺎ ﺃَﺗْﺮَﺍﺑًﺎ

"আমি জান্নাতী রমণীগণকে বিশেষরূপে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর তাদেরকে করেছি চিরকুমারী। কামিনীসমবয়স্কা।" (সূরা ওয়াকেয়া-৩৫)

ﺇِﻥَّ ﻟِﻠْﻤُﺘَّﻘِﻴﻦَ ﻣَﻔَﺎﺯًﺍ ، ﺣَﺪَﺍﺋِﻖَ ﻭَﺃَﻋْﻨَﺎﺑًﺎ ، ﻭَﻛَﻮَﺍﻋِﺐَ ﺃَﺗْﺮَﺍﺑًﺎ

পরহেযগারদের জন্যে রয়েছে সাফল্য। উদ্যানআঙ্গুরসমবয়স্কাপূর্ণযৌবনা তরুণী। (সূরা নাবা ৩১-৩৩)


https://ifatwa.info/34105/  নং ফাতওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,

আল্লাহ তা'আলা বলেন,

کَذٰلِکَ ۟ وَ زَوَّجۡنٰهُمۡ بِحُوۡرٍ عِیۡنٍ

এরূপই ঘটবেআর আমি তাদেরকে বিয়ে দেব ডাগর নয়না হূরদের সাথে।(আদ-দোখান-৫৩)

مُتَّکِئِیۡنَ عَلٰی سُرُرٍ مَّصۡفُوۡفَۃٍ ۚ وَ زَوَّجۡنٰهُمۡ بِحُوۡرٍ عِیۡنٍ

সারিবদ্ধ পালঙ্কে তারা হেলান দিয়ে বসবেআর আমি তাদেরকে মিলায়ে দেব ডাগরচোখা হূর-এর সাথে।(আত-তুর-২০)


আল্লাহ তায়ালা আরো বলেন-

فِیۡهِنَّ خَیۡرٰتٌ حِسَانٌ

সেই জান্নাতসমূহে থাকবে উত্তম চরিত্রবতী অনিন্দ্য সুন্দরীগণ। (আর রাহমান-৭০)

এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন- https://www.ifatwa.info/8778   


দুনিয়ার স্ত্রী ও জান্নাতী হুরদের মধ্যে বিতর্ক অনুষ্ঠানঃ

হুরদের অহঙ্কার।

عن علی رضی اللّٰہ عنہ قال قال رسول اللّٰہ ﷺ فی الجنۃ لمجتمعا للحور العین۔ یرتفعن باصوات لم تسع الخلائن بمثلا، قال یقلن نحن الخالدات فلا نبیذ ونحن الناعمات فلا نبأس ۔ ونحن الراضیات فلا نسخط۔ طوبی لمن کان لنا وکنا لہ ۔

অর্থঃ হযরত আলী (রাঃ) বলেন- নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন- “জান্নাতের মধ্যে ডাগর চোখ বিশিষ্ট হুরদের মিলনমেলা বসবে। তাঁরা এত উচ্চ আওয়াজ করবে- যা সৃষ্টির কেউ শুনেনি। হুযুর () বলেন- “তাঁরা উচ্চ আওয়াজে বলতে থাকবে- “আমরা জান্নাতে এমন চিরস্থায়ী যে- নষ্ট হবো না। আমরা এমন নেয়ামত প্রাপ্তা যে- তা কখনও পুরাতন এবং নষ্ট হবেনা। আমরা স্বামীদের প্রতি এমন রাযী যে- কোনদিন গোস্বা হবোনা। আমরা যাদের জন্য এবং যারা আমাদের জন্য- সবারই ভাগ্য সুপ্রসন্ন” (তিরমিযি শরীফ)।


দুনিয়ার স্ত্রীদের জবাব

قالت عائشۃ رضی اللّٰہ عھا ان الحور العین اذا قلن ھذہ المقالۃ ۔ اجابھن ۔ المؤمنات من اھل الدنیا ۔ نحن المصلیات وما صلیتن ۔ ونحن الصائمات ۔ وما صمتن ،ونحن المتوضات وما توضائن ونحن المتصدقات وما تصدقتن ۔ قالت عائشۃ فلغبنھن۔

অর্থঃ হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) বলেন- “জান্নাতী হুরেরা যখন ঐসব বড়াই করবে- তার জবাবে দুনিয়ার মুমিন স্ত্রীগণ বলবে-“আমরা ছিলাম নামাযী- তোমরা নামাযী নও। আমরা ছিলাম রোযাদার- তোমরা তো রোযা রাখনি। আমরা ছিলাম ওযু সম্পাদনকারিনী- তোমরা তো তা ছিলেনা। আমরা ছিলাম সাদ্কাকারিনী- তোমরা তো তা ছিলেনা”। হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) বলেন- দুনিয়ার মহিলারাই এই বিতর্কে জিতে যাবে”। (আত-তাযকিরাহ্)।


ব্যাখ্যাঃ বুঝা গেলো- হুরেরা হলো ভোগেরআর দুনিয়ার স্ত্রীরা হলো ত্যাগের। হুরেরা আমল শুন্য- আর মোমেন নারীরা হবে আমলে পূন্য। শুন্যের উপর পূন্যের প্রাধান্য সর্বজন স্বীকৃত। কাজেই দুনিয়ার স্ত্রীর সম্মান হবে বেশী। ইহাই হাদীসের মূল কথা। আল্লাহ্ যেন আমাদেরকে জান্নাতে দুনিয়ার পূন্যবতী স্ত্রী নসীব করেন। আমীন!


বিঃ দ্রঃ ঐসব মা বোনদের জন্য সুসংবাদ- যারা দুনিয়াতে নামায রোযাঅযু গোসলপাক পবিত্রতা ও সাদকা খয়রাতে ত্রুটি করেন না। তাঁরাই হবেন সেরা ও মর্যাদার অধিকারিনী। তাঁদের মূল্য জান্নাতী হুরের চেয়েও অধিক।


সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!


হুর সম্পর্কে কুরআন হাদীসে অসংখ্য আলোচনা এসেছে। শুধুমাত্র হাদীস নয়বরং কুরআন দ্বারাও প্রমাণিত রয়েছে। সুতরাং হুর জান্নাতে থাকবে এবং এটা জান্নাতীদের জন্য আল্লাহর পক্ষ হতে একটি নিয়ামত। সুতরাং ঐভাবে দু‘আ করা ঠিক হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

No related questions found

...