urgent post
আসসালামু আলাইকুম, আমার খালামনির তালাকের বিষয়ে তার সমস্যার বিষয়ে দয়া করে জলদি উত্তর টি দিবেন।সময় বেশি নেই তার জন্য।তার নিজ হাতে লিখা তার বিষয়টি নিম্নে উল্লখ করা হল
আসসালামু আলাইকুম।
আমার বিয়ে হয়েছে ২৬ বছর হলো। আমাদের লাভ ম্যারেজ হয়। বিয়ের ৬ বছর পর আমারই আপন মামাতো বোনকে আমার স্বামী বিয়ে করে হঠাৎ। শুরুতে আমি রাগ করে বাবার বাড়ি চলে এলেও পরে নিজের তিন বছরের বাচ্চার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সংসারে ফিরে আসি।
কিছু বছর পর ওই সংসারেও একটা মেয়ে হয়। আমার স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের পরে আমি যখন আবার ফিরে আসি এর কিছুদিন পর থেকে এমনকি বিয়ের পরেও সে আমাকে তার মতের অমিল হলে গালাগালি করতো, আমার পরিবারের আমার বাবা মা কেও সে অপছন্দ করা শুরু করে। আমার বাবা নাকি তার দ্বিতীয় স্ত্রীর চাকরি খেয়েছে এমন অভিযোগও করে। অথচ এই বিষয়ে আমার বাবার কোনো প্রকার হস্তক্ষেপই ছিল না। ধীরে ধীরে ঘটনাক্রমে আমার স্বামী চাইতে থাকে যেনো আমি আমার বাড়ির সবার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেই। আমি পুরোপুরি না পারলেও চেষ্টা করি তার কথা মানার। তবুও আমিও ভুল ত্রুটির উর্ধে না। সব সময় হয়তো তার কথা মতো পুরোপুরি ভাবে চলতে পারিনি। কিন্তু আল্লাহ্‌ জানেন আমি কতটা ধৈর্য ধরে আছি এবং কতটা তাকে এমনকি সব কিছুর উর্ধে তাকে গুরুত্ব দিয়ে আছি। এর কারণ যেমন আমার আল্লাহ্‌র হুকুম কে মেনে চলা তেমনি আমার ওই মানুষটার প্রতি অগাধ ভালবাসা বা দুর্বলতা। আমি চেয়েও তাকে ঘৃণা করতে পারিনি বরং তার ন্যায় অন্যায় সব কিছু মেনে নিয়ে চলেছি।
তার সাথে যে আমার সব সময়েই ঝগড়া হয় তা ও না। আমরা এতো কিছুর পরেও স্বাভাবিক সময় কাটিয়েছি স্বামী স্ত্রীর মত। তবে ঝগড়া হলেই সে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে চায়, অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, আমার বাবা মা তুলে গালাগালি করে। সে প্রায়ই বলে তার সাথে আমার সম্পর্ক নেই, আমি শুধু তার বাচ্চাদের মা ছাড়া আর কিছুই না।
যাইহোক, আমার স্বামী আমাকে কিছু হলেই ছেড়ে দেয়ার কথা, বাসা থেকে বের হয়ে যাওয়ার কথা বলে। একদিন তো সে আমাকে বলে, "এদের (আমার ননদ, দেবর, যা) সাথে কথা বললে তুই auto তালাক হয়ে যাবি"। এরপর আমি না চাওয়া সত্ত্বেও শশুড় বাড়ির লোকজন এর সাথে কথা হয়ে যায়।
পরবর্তীতে আবার একদিন ঝগড়ার এক পর্যায়ে "এক তালাক " বলে পরে সাথে সাথে আমি তার মুখ চেপে ধরি। ফলে সে আর বাকিটুকু বলতে পারেনি। এগুলোর পরেও আমরা আবার সংসার করি।
এই বছর আমার ভাইকে তার কাজের জন্য আমার বাসায় থাকতে হয়। আমার স্বামী নিজেই তাকে এখানে রাখতে চায়। পরে একদিনের ছোট্ট একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে সে আমার ভাইকে আর দেখতে পারে না। আমার ভাই হুট করে কোথায় বাসা পাবে এই চিন্তায় তাকে কিছুদিন সময় দেই বাসা খোঁজার। এর মধ্যে আমার স্বামীর আর সহ্য হয় না।
সে আমার সাথে মেলামেশা বন্ধ করে দেয়, এমনকি আসতে যেতেও যেনো তার গায়ে আমার ছোঁয়া না লাগে সেদিকে বিশেষ নজর দেন । পুরো বিষয়টি বেশ স্পষ্ট এবং চোখে পড়ার মত।
এর মাঝে তার দ্বিতীয় স্ত্রী রাগ করে বাবার বাড়ি চলে যায় নিজের 16 বছরের মেয়েকে রেখে। অনেক বলার পরেও সে এখনো আসেনি। সব কিছু মিলিয়ে পুরো রাগ টাই আমার উপর দিয়ে যাচ্ছিল। আগে সে সপ্তাহে 3/4 দিন তার দ্বিতীয় বাসায় থাকতো আর বাকি দিনগুলোতে এখানে থাকতো। কিন্তু পরে দেখা যায় সে 5 দিনই ওই বাসায় থাকছে আর দুই দিন এখানে দিচ্ছে। আর তার আতঙ্কে থাকছি আমি আর আমার দুই মেয়ে।
এসব দেখতে দেখতে আমার বড় মেয়ে আজ পাগল প্রায়।
যাইহোক অবশেষে এক মাস আগে সে সামান্য আনারস খাওয়াকে কেন্দ্র করে সে তুমুল ঝড় তোলে। এমন কোনো গালি নাই যে সেটা আমার বাবা মা ভাই বোন কে দেয়নি। এবং রাগের বসে সে কয়েকটা কথা বলে, "তোর সাথে আমার ছাড়াছাড়ি অনেক আগেই হয়ে গেছে , তোকে আমি ছেড়ে দিয়েছি, তুই আমার সন্তানের মা নাহলে তোকে আমি কখনোই ঘরে রাখতাম না (এই কথাগুলো সে বেশ কয়েকবার বলে)"
এরপর বলে, "তোর সাথে আমার অর্ধেক তালাক অনেক আগেই হয়ে গেছে "
আরো একটা বাক্য এমন ছিল যে এটার শেষের দুইটা শব্দ ছিলো "তালাক দিলাম "--- এই বাক্যটা সম্পূর্ণ মনে নেই।
আর অবাক করা বিষয় হচ্ছে, আগের দিন রাতেই আমি আল্লাহ্‌র কাছে নামাজে বসে কেদেছিলাম যেনো আল্লাহ আমাকে সঠিক পথ দেখান, আমি জানতে চেয়েছিলাম যে আমাদের সম্পর্কটা কি আদৌ জায়েজ আছে কিনা। যদি জায়েজ হয় তবে যেনো আল্লাহ সব ঠিক করে দেন আর জায়েজ না হলেও যেনো কোনো সঙ্কেত দেন।
আর তার পরদিনই এই ঘটনা ঘটে ।
এই ঘটনার এক সপ্তাহ পরে সে বাসায় আসে এবং বলে আমরা মিথ্যা কথা বলছি , সে এমন কিছু বলে নি। তার সেদিনের সবই মনে আছে শুধু তালাক এর বাক্যটা কে ঘুরিয়ে বলছে। ওনার ধারণা এইসব আমার বড় মেয়ের কোথায় হচ্ছে, অথচ সেদিন আমাদের মেয়ে একটা কথাও বলেনি ঝগড়ার মাঝে। এমনকি এর আগে যে সে আমাকে এক তালাক বলেছিলো এটাও অস্বীকার করেছে । সে জানায় যে বড় মেয়েকে শিক্ষা দেয়ার জন্য সে তৃতীয় বিয়েও করবে।
এমন অবস্থায় আমার প্রশ্ন হচ্ছে,
১)আমার সংসার কি হালাল আছে?
২)আর যদি এক তালাক দুই তালাক দিয়ে তিন মাসের মাঝে সম্পর্ক আবার তৈরী করলে সম্পর্ক তালাক বাতিল হয়ে যায় তবে এই প্রক্রিয়া টা কতবার হতে পারে?
মানে, একটা মানুষ যতবার ইচ্ছা একটা মেয়েকে কিছুদিন পরপর তালাক দিয়ে আবার তিন মাসের আগে ফেরত নিলে তাদের সম্পর্ক জায়েজ হয়ে যাবে?
৩) আর এখন আমার করণীয় কী?