আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
63 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (49 points)
edited by

আসসালামু আলাইকুম 
 

১) মসজিদের হুজুর বলে থাকেন দান করলে সম্পদ বৃদ্ধি পায়। সত্যি কি সম্পদ বৃদ্ধি পায়?  এখানে তারা সম্পদ বলতে কি অর্থকে বুঝাচ্ছেন?

 

২) ১ নং অনুযায়ী যদি সত্যিই সম্পদ বৃদ্ধি পায়   তাহলে দান করার সময় কি ধরনের নিয়ত রাখতে হবে এবং আকিদা কি রকম রাখতে হবে? 

 

৩) সাদাকায়ে জারিয়া করার ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তি যদি এমন নিয়ত রাখে যে সে আল্লাহ সন্তুষ্ট অর্জনের জন্য দান করছে এবং সওয়াবের জন্য দান করছে তাহলে কি সাদাকায়ে জারিয়ায় হয়ে যাবে? 


 

৪) যেকোন ক্ষেত্রে দান করার ক্ষেত্রে একাধিক চাওয়া রাখা যাবে? রাখলে কি সবগুলি আদায় হবে? এ প্রশ্নের সাথে পূর্বের প্রশ্নের মিল নেই।  এটা আলাদা।

৫) হারাম অর্থ সওয়াবের নিয়ত ছাড়া কি যে কোন খাতেই দান করা যাবে? 

 

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

قُلْ اِنَّ رَبِّیْ یَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَنْ یَّشَآءُ مِنْ عِبَادِهٖ وَ یَقْدِرُ لَهٗ وَ مَاۤ اَنْفَقْتُمْ مِّنْ شَیْءٍ فَهُوَ یُخْلِفُهٗ وَ هُوَ خَیْرُ الرّٰزِقِیْنَ.

তুমি বলো, নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক স্বীয় বান্দাদের মধ্য থেকে যাকে ইচ্ছা রিযিক বাড়িয়ে দেন, (যাকে ইচ্ছা) কমিয়ে দেন। আর তোমরা যা কিছুই দান কর, তিনি তার জায়গায় অন্য কিছু দিয়ে দেন। আর তিনিই তো শ্রেষ্ঠ রিযিকদাতা। -সূরা সাবা (৩৪) : ৩৯

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জোর দিয়েই বলেছেন-

مَا نَقَصَتْ صَدَقَةٌ مِنْ مَالٍ.

কোনো দান-সদকাই সম্পদে ঘাটতি সৃষ্টি করে না। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ২৫৮৮

রাসুলুল্লাহ সাঃ বলেছেন-

مَا مِنْ يَوْمٍ يُصْبِحُ الْعِبَادُ فِيهِ إِلاّ مَلَكَانِ يَنْزِلاَنِ فَيَقُولُ أَحَدُهُمَا اللّهُمّ أَعْطِ مُنْفِقًا خَلَفًا وَيَقُولُ الآخَرُ اللّهُمّ أَعْطِ مُمْسِكًا تَلَفًا.

প্রতিদিনই দুজন ফেরেশতা নেমে আসেন। তাদের একজন দোয়া করেন- আল্লাহ! যে দান করে তাকে আপনি আরও দিন। অপরজন দুআ করেন- আল্লাহ! যে ধনসম্পদ আঁকড়ে ধরে রাখে, তার সম্পদ ধ্বংস করে দিন। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৪৪২

حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْمَاعِيلَ، حَدَّثَنَا أَبُو نُعَيْمٍ، حَدَّثَنَا عُبَادَةُ بْنُ مُسْلِمٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ خَبَّابٍ، عَنْ سَعِيدٍ الطَّائِيِّ أَبِي الْبَخْتَرِيِّ، أَنَّهُ قَالَ حَدَّثَنِي أَبُو كَبْشَةَ الأَنْمَارِيُّ، أَنَّهُ سَمِعَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " ثَلاَثَةٌ أُقْسِمُ عَلَيْهِنَّ وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا فَاحْفَظُوهُ " . قَالَ " مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ وَلاَ ظُلِمَ عَبْدٌ مَظْلِمَةً فَصَبَرَ عَلَيْهَا إِلاَّ زَادَهُ اللَّهُ عِزًّا وَلاَ فَتَحَ عَبْدٌ بَابَ مَسْأَلَةٍ إِلاَّ فَتَحَ اللَّهُ عَلَيْهِ بَابَ فَقْرٍ أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثًا فَاحْفَظُوهُ قَالَ " إِنَّمَا الدُّنْيَا لأَرْبَعَةِ نَفَرٍ عَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ مَالاً وَعِلْمًا فَهُوَ يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ وَيَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ وَيَعْلَمُ لِلَّهِ فِيهِ حَقًّا فَهَذَا بِأَفْضَلِ الْمَنَازِلِ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ عِلْمًا وَلَمْ يَرْزُقْهُ مَالاً فَهُوَ صَادِقُ النِّيَّةِ يَقُولُ لَوْ أَنَّ لِي مَالاً لَعَمِلْتُ بِعَمَلِ فُلاَنٍ فَهُوَ بِنِيَّتِهِ فَأَجْرُهُمَا سَوَاءٌ وَعَبْدٍ رَزَقَهُ اللَّهُ مَالاً وَلَمْ يَرْزُقْهُ عِلْمًا فَهُوَ يَخْبِطُ فِي مَالِهِ بِغَيْرِ عِلْمٍ لاَ يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ وَلاَ يَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ وَلاَ يَعْلَمُ لِلَّهِ فِيهِ حَقًّا فَهَذَا بِأَخْبَثِ الْمَنَازِلِ وَعَبْدٍ لَمْ يَرْزُقْهُ اللَّهُ مَالاً وَلاَ عِلْمًا فَهُوَ يَقُولُ لَوْ أَنَّ لِي مَالاً لَعَمِلْتُ فِيهِ بِعَمَلِ فُلاَنٍ فَهُوَ بِنِيَّتِهِ فَوِزْرُهُمَا سَوَاءٌ "

আবূ কাবশা আল-আনমারী (রাঃ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেনঃ আমি তিনটি বিষয়ে শপথ করছি এবং সেগুলোর ব্যাপারে তোমাদেরকে বলছি। তোমরা এগুলো মনে রাখবে।

তিনি বলেন, দান-খাইরাত করলে কোন বান্দার সম্পদ হ্রাস পায় না। কোন বান্দার উপর যুলুম করা হলে এবং সে তাতে ধৈর্য ধারণ করলে আল্লাহ তা’আলা অবশ্যই তার সম্মান বাড়িয়ে দেন। কোন বান্দাহ ভিক্ষার দরজা খুললে অবশ্যই আল্লাহ তা’আলাও তার অভাবের দরজা খুলে দেন অথবা তিনি অনুরূপ কথা বলেছেন।

আমি তোমাদেরকে একটি কথা বলছি, তোমরা তা মুখস্থ রাখবে। তারপর তিনি বলেনঃ চার প্রকার মানুষের জন্য এই পৃথিবী। আল্লাহ তা’আলা যে বান্দাহকে ধন-সম্পদ ও ইলম (জ্ঞান) দিয়েছেন, আর সে এই ক্ষেত্রে তার প্রভুকে ভয় করে, এর সাহায্যে আত্মীয়দের সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার করে এবং এতে আল্লাহ তা’আলারও হক আছে বলে সে জানে, সেই বান্দার মর্যাদা সর্বোচ্চ।

আরেক বান্দাহ, যাকে আল্লাহ তা’আল ইলম দিয়েছেন কিন্তু ধন-সম্পদ দেননি সে সৎ নিয়াতের (সংকল্পের) অধিকারী। সে বলে, আমার ধন-সম্পদ থাকলে আমি অমুক অমুক ভালো কাজ করতাম। এই ধরনের লোকের মর্যাদা তার নিয়্যাত মুতাবিক নির্ধারিত হবে। এ দুজনেরই সাওয়াব সমান সমান হবে।

আরেক বান্দাহ, আল্লাহ তা’আলা তাকে ধন-সম্পদ প্রদান করেছেন কিন্তু ইলম দান করেননি। আর সে ইলমহীন (জ্ঞানহীন) হওয়ার কারণে তার সম্পদ স্বীয় প্রবৃত্তির চাহিদা মতো ব্যয় করে। সে ব্যক্তি এ বিষয়ে তার রবকেও ভয় করে না এবং আত্মীয়দের সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহারও করে না। আর এতে যে আল্লাহ তা’আলার হক রয়েছে তাও সে জানে না। এই লোক সর্বাধিক নিকৃষ্ট স্তরের লোক।

অপর এক বান্দাহ, যাকে আল্লাহ তা’আলা ধন-সম্পদও দান করেননি, ইলমও দান করেননি। সে বলে, আমার যদি ধন-সম্পদ থাকত তাহলে আমি অমুক অমুক ব্যক্তির ন্যায় (প্রবৃত্তির বাসনামতো) কাজ করতাম। তার নিয়্যাত মুতাবিক তার স্থান নির্ধারিত হবে। অতএব, এদের দুজনের পাপ হবে সমান সমান।

সহীহ, ইবনু মা-জাহ (৪২২৮) তিরমিজি ২৩২৫)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
দান করলে সম্পদ কমেন,বরং এতে সম্পদ বৃদ্ধি পায়। এটিই কুরআন হাদীস দ্বারা প্রমানিত। 

এক্ষেত্রে প্রকৃত অর্থেই সম্পদ বাড়বে,অথবা সম্পদের মধ্যে বরকত হবে।
উভয়টিও এখানে উদ্দেশ্য। 

(০২)
আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির নিয়ত রাখবেন।

(০৩)
এক্ষেত্রে যদি সদকায়ে জারিয়ার খাতে দান করা হয়,তাহলে সদকায়ে জারিয়াহ হবে।

(০৪)
যেকোন ক্ষেত্রে দান করার ক্ষেত্রে একাধিক চাওয়া রাখা যাবে।

(০৫)
হালাল যেকোনো খাতেই দান করা যাবে।

হালাল খাতে দান করার পরেও লোক দেখানো,সম্মান ইজ্জত,প্রভাব প্রতিপত্তির জন্য তথা ফাসেদ নিয়তে দান করলে সেক্ষেত্রে ছওয়াব হবেনা।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...