ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া
রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://ifatwa.info/466/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,
মহিলাদের সৌন্দর্য গ্রহণের মূলনীতি
বিজ্ঞ উলামায়ে কেরাম জায়েয পরিবর্তন ও নাজায়েয পরিবর্তন
সম্পর্কে মূলনীতি উল্লেখপূর্বক বলেনঃ
ﻭﻣﻨﻬﺎ ﻣﺎ ﻳﺠﻮﺯ، ﻭﻫﻮ ﻣﺎ ﻳﺤﺘﺎﺝ ﺇﻟﻴﻪ ﺍﻟﺸﺨﺺ ﻹﺯﺍﻟﺔ
ﺿﺮﺭ ﺃﻭ ﺃﻟﻢ ﺃﻭ ﺷﻴﻦ، ﺳﻮﺍﺀ ﺧﻠﻖ ﺑﻪ ﺍﻟﺸﺨﺺ ﺃﻭ ﻧﺘﺞ ﻋﻦ ﺣﺎﺩﺙ ﺃﻭ ﻣﺮﺽ،
(ক) জায়েয শারীরিক পরিবর্তনঃ যদি কোনো মানুষ কষ্ট দূরীকরণার্তে
বা কোনো দোষ দূরীকরণার্তে চায় উক্ত দোষ নিজের মাধ্যমে আসুক বা
কোনো অসুস্থতা বা দুর্ঘটনাজনিত হোক
তাহলে এমতাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তন জায়েয। যেমন উরফুজা ইবনে আস'আদ রাযি থেকে
বর্ণিত
عن
ﻋﺮﻓﺠﺔ ﺑﻦ ﺃﺳﻌﺪ ﺃﻧﻪ ﻗﻄﻊ ﺃﻧﻔﻪ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻜُﻼﺏ، ﻓﺎﺗﺨﺬ ﺃﻧﻔﺎً ﻣﻦ ﻓﻀﺔ ﻓﺄﻧﺘﻦ ﻋﻠﻴﻪ، ﻓﺄﻣﺮﻩ ﺍﻟﻨﺒﻲ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓﺎﺗﺨﺬ ﺃﻧﻔﺎً ﻣﻦ ﺫﻫﺐ . ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ في سننه -ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﺒﺎﺱ ﻋﻦ ﺭﺳﻮﻝ
ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ-ﺑﺎﺏ ﻣﺎ ﺟﺎﺀ ﻓﻲ ﺷﺪ ﺍﻷﺳﻨﺎﻥ ﺑﺎﻟﺬﻫﺐﻭﺣﺴﻨﻪ، ﻭرواه ﺃﺑﻮ ﺩﺍﻭﺩ ﻭﺍﻟﻨﺴﺎﺋﻲ
ﻭﺃﺣﻤﺪ،
কিলাবের যুদ্ধে উনার নাক কর্তিত হয়ে যায়,তখন তিনি রূপার নাক তৈরী করে লাগিয়ে নেন।কিন্তু উক্ত নাকে দুর্গন্ধ
হয়ে যায়,যে জন্য নবীজী সাঃ উনাকে সর্ণের নাক বাধার অনুমিত প্রদান করেন।অতঃপর
তিনি সর্ণের নাক বেধে নেন। (সুনানে তিরমিযি-১৭৭০)
(খ) নিষিদ্ধ শারীরিক পরিবর্তন তা কয়েক ধাপে বিভক্ত।যেমনঃ
শারীরিক পরিবর্তন-পরিবর্ধনের যেসমস্ত পদ্ধতিতে কোরআন-হাদীসে
নিষেধ এসেছে,তা সর্বদাই নিষিদ্ধ,তা নিষিদ্ধ হওয়ার কোনো কারণ খোজা যাবে না বরং তা সবসময়ই নিষিদ্ধ
থাকবে।যেমনঃ ভ্রু-কে চেঁছে সরু (প্লাক) করা,বা দেহাঙ্গে ট্যাটু অংকন করা ইত্যাদি। এবং প্রত্যেক ঐ সমস্ত
শারীরিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন যা কোরআন-হাদীসে বর্ণিত তা বিনা দ্বিধায় জায়েয।যেমনঃখৎনা
করা,নক কাটা,নাভীর নীচ পরিস্কার করা,ইত্যাদি।
ঐ সমস্ত শারীরিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন যা শরয়ী দলীল
দ্বারা সরাসরি প্রমাণিত নয়, তা দু-প্রকার। হয়তো তা বাস্তবিক পরিবর্তন হবে নতুবা বাহ্যিক
পরিবর্তন হবে। যদি তা বাস্তবিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন হয় তাহলে তাও উপরোক্ত দালিলিক চাহিদায়
হারাম সাব্যস্ত হবে।যেমনঃ দাড়ী সেভ করা। আর যদি বাহ্যিক পরিবর্তন হয়,কিন্ত দেখতে
বাস্তবিক পরিবর্তন-ই মনে হয়,তাহলে তাও বাস্তবিক পরিবর্তনের ন্যায় হারাম হবে।
ـ ﺃﻥ ﻳﻜﻮﻥ ﺍﻟﺘﻐﻴﻴﺮ ﻧﺎﺗﺠﺎ ﻋﻦ ﺍﻟﺘﺪﺧﻞ ﺍﻟﺨﺎﺭﺟﻲ
ﻋﻦ ﺟﺴﻢ ﺍﻹﻧﺴﺎﻥ، ﻓﺈﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﺍﻟﺘﻐﻴﻴﺮ ﻧﺎﺗﺠﺎ ﻋﻦ ﺃﺟﻬﺰﺓ ﺍﻟﺠﺴﻢ ﻋﻦ ﻃﺮﻳﻖ ﺗﻨﺸﻴﻂ ﺑﻌﺾ ﺍﻟﻐﺪﺩ ﺃﻭ
ﺗﺤﻔﻴﺰﻫﺎ، ﺑﺎﺳﺘﺨﺪﺍﻡ ﺑﻌﺾ ﺍﻷﺩﻭﻳﺔ ﺍﻟﺘﻲ ﺗﺴﺎﻋﺪ ﺑﻌﺾ ﺃﺟﻬﺰﺓ ﺍﻟﺠﺴﻢ ﺃﻭ ﺧﻼﻳﺎﻩ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻘﻴﺎﻡ ﺑﻮﻇﺎﺋﻔﻬﺎ
ﺍﻟﻤﻌﺘﺎﺩﺓ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻨﺤﻮ ﺍﻟﻤﻌﺮﻭﻑ، ﻓﺈﻥ ﺍﻟﺘﻐﻴﻴﺮ ﺍﻟﻨﺎﺗﺞ ﻋﻦ ﻋﻤﻞ ﻫﺬﻩ ﺍﻷﺟﻬﺰﺓ ﺃﻭ ﺍﻟﺨﻼﻳﺎ ﺃﻭ ﺍﻟﻐﺪﺩ
ﺑﻌﺪ ﺗﻨﺸﻴﻄﻬﺎ ﻟﺘﺆﺩﻱ ﻭﻇﺎﺋﻔﻬﺎ ﺍﻟﻤﻌﻬﻮﺩﺓ ﻓﺈﻥ ﻫﺬﺍ ﻻ ﻳﻌﺪ ﺩﺍﺧﻼ ﻓﻲ ﺍﻟﺘﻐﻴﻴﺮ ﺍﻟﻤﻨﻬﻲ ﻋﻨﻪ .
শারীরিক পরিবর্তন-পরিবর্ধন বাহিরের
কোনো জিনিষ দ্বারা শরীরের বহির্ভাগে হতে হবে, সুতরাং যদি কোনো খাদ্য খাওয়ার দরুন অথবা হাটাচলা বা ব্যায়ামের
ধরুন স্বাভাবিক নিয়মে শরীরে কোনো পরিবর্তন ও পরিবর্ধন ঘটে, তাহলে তা নিষিদ্ধতার
আওতাধীন হবে না।
"বিউটি পার্লারে
সাজগোছ করা অত্যন্ত ক্ষতিকর।" (খাওয়াতিন কে লিয়ে জাদীদ মাসাঈল-৮৬;মুফতী ইহসানুল্লাহ
শাঈক্ব-দারুল এশা'আত,করাচী কর্তৃক ২০০৭সালে প্রকাশিত)
"স্বামীর জন্য
সাজগোছ জায়েয হলেও বিউটি পার্লারে সাজা কখনো কোনো মুসলমানের জন্য কাম্য হতে পারেনা।"
তোহফায়ে খাওয়াতিন-৮৫৫;মুফতী আশেকে এলাহী বুলন্দশরী-মাকতাবু মা'রিফুল কোরআন
করাচী কর্তৃক ১৪৩০মুতাবেক২০০৯সালে প্রকাশিত)
"ইনজেকশনের মাধ্যমে চুল কালো করাও হারাম।" লিভিস্টিক দেয়া
স্বামীর জন্য জায়েয,অন্যথায় হারাম।তবে তা ফাসিকাহ মহিলাদের নিদর্শন। ক্রিম,লোশন,আতর,আরো অন্যান্য
হালাল সামগ্রী মহিলাদের জন্য ব্যবহার জায়েয। (খাওয়াতিনকে যেব ও জিনত-৮৬-১০৬-১০৭- মুফতী
জিয়াউর রহমান-মাকতাবাতুস সাঈদ,
করাচী কর্তৃক ২০০৯সালে প্রকাশিত)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ!
উপরোক্ত আলোচনা দ্বার বুঝতে পারলাম।
যদি শরীয়ত সম্মত বিউটি পার্লার হয় তাহলে শুধুমাত্র স্বামীকে খুশী করার জন্য বিউটি পার্লার
থেকে বৈধ অস্থায়ী সাজগোছ যেমন ক্রিম ইত্যাদি দিয়ে সাজা বৈধ আছে। এক্ষেত্রে ৩টি জিনিষ
অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে লক্ষ্য রাখতে হবে।
ক. বিউটি পার্লার শরীয়ত সম্মত হতে
হবে।
খ. বৈধ সাজগোছ করতে হবে।
গ. শুধুমাত্র স্বামীকে সন্তুষ্টি
করার জন্য হতে হবে। ক্রিম, লোশন ইত্যাদি হালাল কসমেটিক সামগ্রী ব্যবহার করা যাবে।
আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/466/
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে সতর্কতা মূলক উক্ত টাকা ব্যবহার না করে
কোনো গরীব ব্যক্তিকে সওয়াবের নিয়ত ছাড়া দান করে দিবেন।