আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
53 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (3 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম।
১)আমার আব্বু যে জুতা ঘরের মধ্যে পায়ে দিয়ে চলাফেরা করেন সেই একই জুতা পায়ে দিয়ে তিনি টয়লেটে প্রবেশ করেন। আব্বুর টয়লেটে হাই কমোড আছে। আমি আব্বুর সাথে একদমই ফ্রি নয়, তাকে এ ব্যাপারে নিষেধ করার সাহস আমার নেই । আম্মুকে বলেছিলাম তিনি যেন আব্বুকে নিষেধ করেন, তিনি বললেন তিনি আব্বুকে নিষেধ করতে পারবেন না , তাছাড়া যদি আব্বুকে নিষেধ করেন তাহলে আব্বু হয়তো বলবেন আমি তো হাই-কমোড ব্যবহার করি, ওই পায়খানায় তো কোনো লো- কমোড নেই, আর হাই-কমোড ব্যবহার করলে নাকি টয়লেটের ফ্লোরে কোন নাপাক পড়ে না,এ কথায় কতটুকু যৌক্তিকতা আছে আমি জানিনা। আমি কখনো হাই-কমোড ইউজ করিনা কিন্তু আমার ধারণা ছিটাফোঁটা হলেও তো ফ্লোরে পড়তে পারে । তাছাড়া শৌচকার্য করার পরে হাত ধৌত করার সময় সেই পানি তো ফ্লোরেই পড়ে। টয়লেটের জুতা পায়ে দিয়ে ঘরের মধ্যে চলাফেরা করার কারণে কি ঘরের ফ্লোর নাপাক হয়ে যাবে? আমি বাধ্যগত শুচিবায়ু তে আক্রান্ত। আমি জানি যে কোনো বিষয় সম্পর্কে শতভাগ নিশ্চিত না হলে নিজের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে সন্দেহ করা যাবে না। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ওয়াসওয়াসা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে বলেছেন। এখন আমি তো শতভাগ নিশ্চিত নই যে,  আব্বু ঘরের কোন কোন জায়গায় হাঁটাচলা করেছেন এবং সে সময় উনার জুতা শুকনা ছিল নাকি ভেজা ছিল, ফ্লোর শুকনা ছিল নাকি ভেজা ছিল। আমি কি তাহলে ফ্লোরকে পবিত্র ধরে নিব?

যদি ফ্লোরকে পবিত্র ধরে নেওয়া আমার জন্য বৈধ না হয় তাহলে যদি ফ্লোর থেকে কখনো পানি ছিটকে আমার শরীরে বা কাপড়ে এসে লাগে তাহলে কি তা অপবিত্র হয়ে যাবে ? কিংবা যদি ফ্লোর ভেজা থাকা অবস্থায় কোন কিছু ফ্লোরে পড়ে যায় তাহলে কি সেটা অপবিত্র হয়ে যাবে? আমার কাপড় যদি ভেজা ফ্লোর এর উপরে স্পর্শ করে তাহলে কি তা অপবিত্র হয়ে যাবে?

২) আমাদের বাথরুমে যে জুতা ব্যবহার করা হয় সেটা একজোড়া পুরুষের জুতা। আর এই জুতা আমার পরিবারের পুরুষ সদস্য ও নারী সদস্য সবাই ব্যবহার করে। পুরুষের জুতা, পোষাক পরিধান করা তো নারীর জন্য বৈধ নয়, তাহলে আমার পরিবারের নারী সদস্যদের জন্য এই জুতা পরিধান করার বিধান কি?

৩) মাসআলা জানার জন্য কোন আলেমের কাছে কোনো পরিস্থিতি বর্ণনা করার প্রয়োজনে কারো গীবত করা কি জায়েজ আছে?

৪) আমার একজন বান্ধবী আমাকে অনুরোধ করেছিল, আমি যেন তার সাথে যোগাযোগ রাখি। আমি তাকে বলেছিলাম, ইন শা আল্লাহ যোগাযোগ রাখব। কিন্তু সেই বান্ধবী গীবত , কু ধারনা ইত্যাদি বিভিন্ন মন্দ আচরণে অভ্যস্ত। আমার মনে হয় সে হয়তো আমার নামেও অন্যদের কাছে গীবত করবে কিংবা আমাকে নিয়েও বিভিন্ন কু ধারণা করবে।আর তার কিছু মন্দ আচরণ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমার দ্বীনদারীতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে যেতে পারে।এমতাবস্থায় কি তার সাথে যোগাযোগ না রাখলে আমি ওয়াদা ভঙ্গকারী হিসেবে গণ্য হব?

৫) ঘুম থেকে ওঠার পরে হাত না ধুয়ে কোনো পানির পাত্রে হাত ডোবাতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিষেধ করেছেন। এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে, হাতে দৃশ্যমান কোন নাপাকি লেগে থাকতে না দেখলেও আমি কি হাতটাকে অপবিত্র হিসেবে গণ্য করবো। আর ঘুম থেকে উঠে হাত না ধুয়ে আমার হাত যদি ঘেমে থাকে তাহলে সে হাত দিয়ে যদি কোনো কিছু বা আমার শরীর স্পর্শ করি তাহলে কি সেটা নাপাক হয়ে যাবে? কিংবা ঘুম থেকে ওঠার পরে আমার হাত যদি শুকনা থাকে এবং আমি কোনো ভেজা জিনিস স্পর্শ করি তাহলে কি জিনিসটি নাপাক হয়ে যাবে?

জাযাকুমুল্লাহু খাইরান।

1 Answer

0 votes
by (54,480 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/50099/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

জরুরত অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে হালাল করে দেয়,

 ﺍﻟﻀﺮﻭﺭﺍﺕ ﺗﺒﻴﺢ ﺍﻟﻤﺤﻈﻮﺭﺍﺕ

(প্রয়োজন অনেক নিষিদ্ধ জিনিষকে বৈধ করে দেয়)

এটা একাটা নীতিসিদ্ধ মৌলিক ফিকহী ক্বায়দা/ধারা যা কোরআন এবং হাদিসের থেকে চয়ন করা হয়েছে।

যেমনঃ-কোরআন থেকে.....

 ﻭَﻣَﺎ ﻟَﻜُﻢْ ﺃَﻻَّ ﺗَﺄْﻛُﻠُﻮﺍْ ﻣِﻤَّﺎ ﺫُﻛِﺮَ ﺍﺳْﻢُ ﺍﻟﻠّﻪِ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﻗَﺪْ ﻓَﺼَّﻞَ ﻟَﻜُﻢ ﻣَّﺎ ﺣَﺮَّﻡَ ﻋَﻠَﻴْﻜُﻢْ ﺇِﻻَّ ﻣَﺎ ﺍﺿْﻄُﺮِﺭْﺗُﻢْ ﺇِﻟَﻴْﻪِ ﻭَﺇِﻥَّ ﻛَﺜِﻴﺮًﺍ ﻟَّﻴُﻀِﻠُّﻮﻥَ ﺑِﺄَﻫْﻮَﺍﺋِﻬِﻢ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻋِﻠْﻢٍ ﺇِﻥَّ ﺭَﺑَّﻚَ ﻫُﻮَ ﺃَﻋْﻠَﻢُ ﺑِﺎﻟْﻤُﻌْﺘَﺪِﻳﻦ

তরজমাঃ কোন কারণে তোমরা এমন জন্তু থেকে ভক্ষণ করবে না, যার উপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়, অথচ আল্লাহ ঐ সব জন্তুর বিশদ বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোকে তোমাদের জন্যে হারাম করেছেন; কিন্তু সেগুলোও তোমাদের জন্যে হালাল, যখন তোমরা নিরুপায় হয়ে যাও। অনেক লোক স্বীয় ভ্রান্ত প্রবৃত্তি দ্বারা না জেনে বিপথগামী করতে থাকে। আপনার প্রতিপালক সীমাতিক্রম কারীদেরকে যথার্থই জানেন। (সূরা আন-আম-আয়াতঃ-১১৯)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!


১. জরুরতের কারণে আপনাদের বাড়ীর ফ্লোরে দৃশ্যমান নাজাসত বা নাপাকি না থাকলে সমস্ত ফ্লোরকে পবিত্র হিসাবে ধরা হবে। সুতরাং এখানে অন্য কোনো দিক দেখার প্রয়োজনিয়তা নাই। আপনি ঘরের নির্দিষ্ট একটি জায়গাকে নামাজের নির্দিষ্ট স্থান বানিয়ে নিবেন। সেখানে জায়নামাজ বিছিয়ে নামাজ পড়বেন। তাহলে আর আপনার মনের মধ্যে সন্দেহ আসবে না।


২. এটা যেহেতু শুধু টয়লেটেই পরা হয় তাই এতে কোনো সমস্যা নেই।

৩. মাসআলা জানার জন্য এটা বর্ণনা করার দ্বারা গীবত হবে না ইনশাআল্লাহ।

৪. না, এমন পরিস্থিতিতে তার সাথে যোগাযোগ না রাখলে এতে ওয়াদা ভঙ্গ করার কারণে কোনো গোনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ।

৫. শুধু সন্দেহের কারণে ঘুম থেকে ওঠার পর হাত দিয়ে কোন কিছু স্পর্শ করলে বা ধরলে এতে ওই জিনিস নাপাক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...