আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
69 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (6 points)
স্বপ্নে দেখি আমার এক বন্ধু আর আমি কোথাও ঘুরতেছি । কিন্তু তার সাথে কোন বিষয়ে মত এর মিল না হলেই সে ইমোশনাল ব্লক মেইল করে , আমি অনেকবার এমন সবর করেছি কিন্তু বারবার যখন এমন করতেছে আমি রাগ হয়ে যাই । সম্ভবত সে আমাকে একটা মেরে দৌড় দেয় , আমি তার পিছু পিছু ধাওয়া করি রাস্তার জ্যাম এগুলা কিছু মানটেছি না আমার একমাত্র ইন্টেনসন তাকে ধরতে হবে , এক পর্যায়ে সে আমার থেকে বাচতে গিয়ে লাল একটা সাইকেল চুরি করে ,আমি তার পিছে পিছে যাই । পড়ে একটা জায়গায় গিয়ে হারায় যায় সে । কিন্তু আমি আটকে যাই অন্য জায়গায় দেখি এক মেয়ে কান্না করছে , আমি গিয়ে দেখি কোন পুরুষ নাই সেখানে ,মেয়ের মা এবং চাচী শুধু ।  মেয়েটা ছোট ৬,৭ এ পড়ে এমন হবে । শুনলাম মেয়েটার সাইকেল চুরি হয়ে গেছে আমি বুঝে গেলাম আমার বন্ধু চুরি করছে যেই সাইকেল টা সেটাই এটা । আমি তাদের কে ভরসা দিলাম আমি তাদের সাইকেল খুজে দিতে হেল্প করব । তখন আমি তাদের নিয়ে সাইকেল খুজতে থাকি এবং এক পর্যায়ে সাইকেল পেয়ে যাই , মেয়েটি তার কাছে থাক চাবি দিয়ে সাইকেল এর তাল খুলে সাইকেল পেয়ে যায় , পরবর্তীতে জানতে পরি ৫০০ বা ২০০০ তাকে সাইকেল টি কেউ একজন তাদের কাছে বিক্রি করেছে ।
এ স্বপ্নের মনে কি হতে পারে ? ব্যক্তিগত জীবনে প্রবল ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি বর্তমানে । কাছের বন্ধুবান্ধব এর কাছে  থেকে আমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি বলে আমার সন্দেহ কিন্তু কোন প্রকার প্রমাণ নেই এজন্য কিছু করতে পারছি না আবার তাদের জন্য মন থেকে কোন ফিলিংস অসছেই না ।
২ / ইমান বৃদ্ধির জন্য কি কি কাজ এবং আমল করতে পরি ?

৩/ অতিরিক্ত টেনশন থেকে কিভাবে মুক্তি পেতে পরি ?

৪/ আমি রাতে ঘুমাই ৯-১০ টায়  উঠে যাই ১-৩ টায় আবার ফজর পড়ে ঘুমাই এতে কি সমস্যা হবে ? ফজরের পর যেহেতু রিজিক বন্টন হয় কিন্তু আমি অনেক চেষ্টা করেও এই রুটিন পরিবর্তন করতে পরি নি এবং আমি স্টুডেন্ট পড়াশুনা বা সব মিলায় এই রুটিন য়ের সাথে অভ্যস্ত হয়ে গেছি ।

1 Answer

0 votes
by (547,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
ইসলামী দৃষ্টিতে স্বপ্ন তিন প্রকার। 
,
১. যা আল্লাহর পক্ষ থেকে বান্দাহকে দেখানো হয় যা কল্যানকর হয়।

২. শয়তানের পক্ষ হতে দেখানো হয় যাতে মানুষ খারাপ, মন্দ ভয়ংকর কিছু দেখে থাকে।
তবে শয়তান স্বপ্ন দেখানোর দ্বারা মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারেনা।
,
ভয়ংকর স্বপ্ন দেখলে দুশ্চিন্তার কোন কারন নেই। শয়তান মানুষকে দুশ্চিন্তায় ফেলার জন্যই এমন সব আজব আজব জিনিস দেখায়। এমনটা দেখলে ঘুম থেকে জেগে বাম দিকে থুথু ফেলে আস্তাগফিরুল্লাহ বলতে হয়। 

৩. মানুষের কল্পনা। অর্থাৎ মানুষ যা কল্পনা করে স্বপ্নে তা দেখতে পায়। 

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا الْحَسَنَةُ مِنَ الرَّجُلِ الصَّالِحِ جُزْءٌ مِنْ سِتَّةٍ وَأَرْبَعِينَ جُزْءًا مِنَ النُّبُوَّةِ ".

আবদুল্লাহ ইবনু মাসলামা (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ নেককার লোকের ভাল স্বপ্ন নবুয়তের ছেচল্লিশ ভাগের এক ভাগ।
(বুখারী শরীফ ৬৫১২)

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا زُهَيْرٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى ـ هُوَ ابْنُ سَعِيدٍ ـ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا سَلَمَةَ، قَالَ سَمِعْتُ أَبَا قَتَادَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ " الرُّؤْيَا مِنَ اللَّهِ، وَالْحُلْمُ مِنَ الشَّيْطَانِ ".

আহমাদ ইবনু ইউনুস (রহঃ) ... আবূ কাতাদা (রাঃ) সূত্রে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেনঃ ভাল স্বপ্ন আল্লাহর পক্ষ থেকে হয়ে থাকে আর অশুভ স্বপ্ন শয়তানের পক্ষ থেকে হয়ে থাকে।
(৬৫১৩)

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ يُوسُفَ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، حَدَّثَنِي ابْنُ الْهَادِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ خَبَّابٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ سَمِعَ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " إِذَا رَأَى أَحَدُكُمْ رُؤْيَا يُحِبُّهَا فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ اللَّهِ، فَلْيَحْمَدِ اللَّهَ عَلَيْهَا، وَلْيُحَدِّثْ بِهَا، وَإِذَا رَأَى غَيْرَ ذَلِكَ مِمَّا يَكْرَهُ، فَإِنَّمَا هِيَ مِنَ الشَّيْطَانِ، فَلْيَسْتَعِذْ مِنْ شَرِّهَا، وَلاَ يَذْكُرْهَا لأَحَدٍ، فَإِنَّهَا لاَ تَضُرُّهُ ".

আবদুল্লাহ ইবনু ইউসুফ (রহঃ) ... আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন, যখন তোমাদের কেউ এমন স্বপ্ন দেখে, যা সে পছন্দ করে, তাহলে তা আল্লাহর পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর উপর আল্লাহর প্রশংসা করে এবং অন্যের কাছে তা বর্ণনা করে। আর যদি এর বিপরীত অপছন্দনীয় কিছু দেখে, তাহলে তা শয়তানের পক্ষ থেকে। তাই সে যেন এর অনিষ্টতা থেকে আল্লাহর আশ্রয় চায়। আর কারো কাছে যেন তা বর্ণনা না করে। তাহলে এ স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি সাধন করবে না।
(বুখারী শরীফ ৬৫১৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত স্বপ্নটি অহেতুক স্বপ্ন বলেই মনে হচ্ছে। সুতরাং চিন্তিত না হওয়ার পরামর্শ রইলো। 

(০২)
এ সংক্রান্ত করনীয় জানুনঃ- 

(০৩)
নিম্বোক্ত দোয়া বেশি বেশি পাঠ করার পরামর্শ রইলো।

আনাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সা.) তাঁর সেবার জন্য এক কিশোরের খোঁজ নিতে বলেন।
অতঃপর আবু তালহা (রা.) আমাকে নিয়ে যান। আমি রাসুল (সা.)-এর অবস্থানকালে সেবা করতাম। রাসুল (সা.)-কে দোয়াটি বেশি পড়তে শুনতাম- 
«اللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ، وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ، وَالْبُخْلِ وَالْجُبْنِ، وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ»

উচ্চারণ : ‘আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুাযানি, ওয়াল আজাযি ওয়াল কাসালি, ওয়াল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া দালায়িদ দাইনি ওয়া গালাবাতির রিজালি।’ 

অর্থ : ‘হে আল্লাহ, আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের নিপীড়ন থেকে।
(সহিহ বুখারি, হাদিস নং : ৫৪২৫)

এ সংক্রান্ত আরো করনীয় জানুনঃ- 

(০৪)
এতে শরীরের ক্ষতি হতে পারে।
আপনি একটা কাজ করতে পারেন,তাহা হলো এভাবে ১-৩ টা তাহাজ্জুদের ওয়াক্তে উঠে তাহাজ্জুদ এর নামাজ আদায় করে পুনরায় ঘুমিয়ে পড়বেন। 

ফজরের জামাতের আগ দিয়ে উঠে জামাতে শরীক হবেন।

অন্যথায় আপনি ফজরের পর থেকে ইশরাকের ওয়াক্ত পর্যন্ত যিকির আযকার,কুরআন তিলাওয়াত করে ইশরাকের ওয়াক্তে ইশরাকের নামাজ পড়ে ঘুমিয়ে যেতে পারেন,এতে আশা করি সমস্যা হবেনা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...