পর্দা রক্ষা করা ফরজ।
وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا
অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}
বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তাআলা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)
★অসুস্থ্য মানুষদের সেবা করাও সওয়াবের কাজ। যেহেতু মহিলাদের জন্য মহিলা ডাক্তারের প্রয়োজন।
তাই মহিলাদের জন্য পর্দার বিধান পুরোপুরি ভাবে পালনের শর্তে ডাক্তারী শিক্ষা অর্জন করা,ডাক্তারী করা জায়েজ আছে।
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৪/২৫৬)
★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
ইসলামি স্কলারগন মুসলিম মহিলাদের মেডিকেল পড়াকে ফরযে কিফায়া বলেছেন। অর্থাৎ মুসলিমদের মধ্যে অবশ্যই কিছু মহিলার এ পেশায় আসা আবশ্যক যেন মহিলা সংক্রান্ত অসুখ-বিসুখ, সিজার, সন্তান ডেলিভারি ইত্যাদি ক্ষেত্রে মুসলিম নারীদেরকে পর পুরুষ বা অমুসলিমদের শরণাপন্ন না হতে হয়।
সুতরাং সমাজের অর্থশালী ও উদ্যোগী ব্যক্তিদের জন্য মহিলাদের জন্য স্বতন্ত্র মেডিকেল কলেজ/ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা ফরজ- যেন আমাদের দ্বীনদার বোনেরা পর পুরুষ থেকে আলাদা থেকে নির্বিঘ্নে এ বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনা করতে পারে।
তবে স্বতন্ত্র ব্যবস্থা না থাকলেও দীনী কিছু বোনেরা পূর্ণ পর্দা ও শরীয়তের সীমারেখার মধ্যে থেকে প্রচলিত সহশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে মেডিকেল বা নার্সিং বিষয়ে পড়াশোনা করবেন এবং ভবিষ্যতে মহিলাদের জন্য আলাদা মেডিক্যাল কলেজ/বিশ্ববিদ্যালয় খোলার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করবেন।
আরো জানুনঃ
ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা (আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটি)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে,
قد تجد الطبيبة حرجا وصعوبات في تغطية وجهها عن غير المحارم أثناء عملها، فهل هذا يعتبر من الضرورة لكشفه؟
মহিলা ডাক্তার তার কর্মস্থলে ডিউটি করার সময় পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখতে সমস্যা ও কষ্ট হয়। সুতরাং চেহারা খোলা রাখার জন্য এটাকে জরুরত হিসেবে গণ্য করা যাবে কিনা?
তাঁরা উত্তর দিয়েছেন,
يحرم على المرأة كشف وجهها لغير محارمها، وليس هناك ضرورة لكشف الوجه في العمل
নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে চেহারা খোলা রাখা হারাম। আর ডিউটি করার সময় প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চেহারা খুলে রাখার জরুরত বিদ্যমান নেই। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১৭/২৭৭)
বিস্তারিত জানুনঃ
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নারীদের নার্স হওয়া জায়েজ আছে।
তবে পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করতে হবে।
ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে।
শুধুমাত্র নারীদের সেবা করতে হবে।
সহকর্মীদের সাথে পর্দা মেইনটেইন করে কথা বলবে,অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা থেকে হেফাজতে থাকবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার জন্য যদি বেপর্দা হতে হয়,শরীয়াহ বিরোধী কাজ করতে হয়,সেক্ষেত্রে বেপর্দা হওয়া এবং শরীয়াহ বিরোধী কাজ করার গুনাহ তো অবশ্যই হবে।
তদুপরি উলামায়ে কেরামগন বিশেষ জরুরতের স্বার্থে কিছু মুসলিমদেরকে ডাক্তার হওয়ার প্রতি উদ্ভুদ্ধ করেছেন,যাতে সমাজে পুরুষরা পুরুষের চিকিৎসা দিতে পারে, নারীরা নারীদের চিকিৎসা দিতে পারে, তদুপরি শিক্ষা অর্জন করতে গিয়ে শরীয়াহ বিরোধী কাজ হয়ে গেলে সেই কাজ করার গুনাহ তো অবশ্যই হবে।
তবে কোনো ভাবেই গুনাহ হতে বাঁচা সম্ভব না হলে মেডিক্যাল শিক্ষার পাশাপাশি ইস্তেগফার পাঠ করে যাওয়ারও পরামর্শ উলামায়ে কেরামগন দিয়ে থাকেন।
★সুতরাং আপনি সহ শিক্ষার শর্তাবলি মেনে জেনারেল লাইনে পড়তে পারলে আপনার প্রতি জেনারেল লাইনে পড়ারই পরামর্শ থাকবে।
আরো জানুনঃ
উপরোক্ত শর্তগুলি পূর্ণ রুপে মেনে পুরো শরীর,চেহারা,হাতা পা ঢেকে পর্দা করে মহিলাদের জন্য মেডিকেলে লেখাপড়া করা জায়েজ হবে।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
উম্মাহ এর খিদমাহ এর স্বার্থে,পর্দানশীন নারী রোগী দের পর্দা রক্ষার্থে সার্জারিতে দ্বীনদার মহিলা ডাক্তারদের ক্যারিয়ার করা জায়েজই শুধু নয়,বরং এটি
বর্তমান সময়ে অতিব প্রয়োজন।
আপনি যদি মেডিক্যালে পড়ালেখা চলাকালীন পূর্ণ ঈমান ও আমল ধরে রাখতে পারেন,গুনাহ ও ফিতনাহ মুক্ত চলতে পারেন,সেক্ষেত্রে পরামর্শ থাকবে মেডিক্যালে পড়াশোনা করার।
তবে সর্বক্ষেত্রে পূর্ণ পর্দা রক্ষা করে চলবেন,গায়রে মাহরাম পুরুষদের সাথে অপ্রয়োজনীয় কথা বলে থেকে বিরত থাকবেন।
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
আপনি সহ শিক্ষার শর্তাবলি মেনে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারলে পড়ালেখা চালিয়ে যাবেন।
সহ শিক্ষার শর্তাবলি মেনে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে না পারলে আপনার গুনাহ হবে।
(০২)
এক্ষেত্রে হাত মোজা পড়তে হবে।
পুরুষদের সাথে কথা বলা যাবেনা।
নিজের কন্ঠস্বর যেনো তারা না শুনতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
তারপরেও কেহ ফিতনায় পড়লে আশা করি আপনার গুনাহ হবেনা।
(০৩)
জায়েজ নেই।
এতে গুনাহ হবে।
(০৪)
এক্ষেত্রে আপনি শুধুমাত্র শিশু বা মহিলাদের চিকিৎসা করবেন।
(০৫)
এটা বিক্রয় করা জায়েজ হবেনা।
বিস্তারিত জানুনঃ-
(০৬)
বিষয়টি বিস্তারিত আকারে উপরে উল্লেখ রয়েছে।