ওয়া আলাইকুমুস-সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু
بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/30447/
নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,
https://www.ifatwa.info/6996 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে, দাইয়ুস সে ব্যক্তিকেই
বলা হয়, যে তার পরিবার পরিজনকে সঠিক রাস্তায় পরিচালনা করেন না।
অর্থাৎ- যে
ব্যক্তি তার স্ত্রী-সন্তানদের বেপর্দা বেহায়াপনা ও অশ্লীলতার সুযোগ দেয় তাকেও দাইউস
বলা হয়।
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন যে, “আল্লাহ
তিন ব্যক্তির জন্য জান্নাত হারাম করেছেন। মাদকাসক্ত, পিতা-মাতার
অবাধ্য এবং দাইউস, যে তার পরিবারের মধ্যে ব্যভিচারকে প্রশ্রয়
দেয়”[ মুসনাদে আহমাদ: ২/৬৯ ]
কোরআনে আল্লাহ
বলেন,
يَا
أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا قُوا أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًا وَقُودُهَا
النَّاسُ وَالْحِجَارَةُ عَلَيْهَا مَلَائِكَةٌ غِلَاظٌ شِدَادٌ لَّا يَعْصُونَ
اللَّهَ مَا أَمَرَهُمْ وَيَفْعَلُونَ مَا يُؤْمَرُونَ
“তোমরা নিজেরা
জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা কর।
যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর; যার উপর নিয়োজিত রয়েছেন কঠোর হৃদয় সম্পন্ন ফিরিশতাগণ, তারা আল্লাহ যা নির্দেশ করেন তা বাস্তবায়নে অবাধ্য হোন না, আর তাদের যা নির্দেশ প্রদান করা হয়, তা-ই তামিল করে’’।(সূরা
আত-তাহরীম:৬)
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) এরশাদ করেছেন :
‘দাইউস ব্যক্তি
জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) জিজ্ঞেস করলেনঃ হে আল্লাহ্র রাসূল
(সাঃ)! দাইউস কে? উত্তরে
রাসুলূল্লাহ (সাঃ) বললেন, ‘যে ব্যক্তি তার পরিবারে আল্লাহ্র আদেশ-নিষেধ
বাস্তবায়নের ব্যাপারে কোন তৎপরতা অবলম্বন করে না বরং উপেক্ষা করে চলে।’ অন্য বর্ণনায়
এসেছে যে, ‘দাইউস হল সে, যে তার পরিবারে
বেহায়পনার বাস্তবায়নে সন্তষ্ট ও পরিতুষ্ট।’ (মুসনাদে আহমদ)
রাসূলুল্লাহ
(সাঃ) বলেছেন,
“তোমাদের প্রত্যেকেই
দায়িত্বপ্রাপ্ত এবং তোমাদের প্রত্যেককেই তার দায়িত্বাধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা
হবে, রাষ্ট্রনেতা তার প্রজাদের
সম্পর্কে দায়িত্বশীল আর তাকে তাদের পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন
পুরুষ লোক তার পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, তাকে তাদের পরিচালনার
ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন মহিলা তার স্বামীর ঘরের সার্বিক ব্যাপারে দায়িত্বশীলা,
তাকে সেটার পরিচালনার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। একজন পরিচারক তার
মালিকের সম্পদের সংরক্ষক, আর তাকে সেটার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ
করা হবে। এক কথায় তোমরা সবাই দায়িত্বশীল আর সবাই জিজ্ঞাসিত হবে সে দায়িত্ব সম্পর্কে”।[
বুখারী : ৭১৩৮; মুসলিম: ১৭০৫ ]
★ আপনি তাকে সাধ্যমতো আপ্রান চেষ্টা করে হলেও বুঝাবেন। আপনার
এতো বুঝানোর পরেও যদি কাজ না হয়,তাহলে পৃথক বিছানায় ঘুমাবেন,তাতেও কাজ না হলে মুরব্বিদের
মাধ্যমে বৈঠক করে তাকে বুঝাবেন,তাতেও কাজ না হলে তাকে বাবার বাসায়
পাঠিয়ে দিবেন,এতেও সে যদি পূর্ণ পর্দা না করে, তাহলে এই অজুহাতে প্রয়োজনে তাকে তালাকও দিতে পারেন।
মহান আল্লাহ
তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
وَ
الّٰتِیۡ تَخَافُوۡنَ نُشُوۡزَہُنَّ فَعِظُوۡہُنَّ وَ اہۡجُرُوۡہُنَّ فِی
الۡمَضَاجِعِ وَ اضۡرِبُوۡہُنَّ ۚ فَاِنۡ اَطَعۡنَکُمۡ فَلَا تَبۡغُوۡا عَلَیۡہِنَّ
سَبِیۡلًا ؕ اِنَّ اللّٰہَ کَانَ عَلِیًّا کَبِیۡرًا ﴿۳۴﴾
আর স্ত্রীদের
মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে প্রহার
কর। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অন্বেষণ করো না। নিশ্চয়
আল্লাহ শ্ৰেষ্ঠ, মহান। (সুরা নিসা ৩৪)
★ সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. আপনার স্ত্রী পরিপূর্ণ পর্দা না করে গায়রে মাহরামদের
সামনে গেলেই আপনি দাইয়ুস হবেন। তবে আপনি যদি তাকে পূর্ণ পর্দা করানোর আপ্রান চেষ্টা
চালিয়ে যান, তাহলে আপনি দাইয়ুস হবেন না, ইনশাআল্লাহ ।
স্ত্রী স্বামীর
বাড়ি বা বাবার বাড়ি যেখানেই থাক তার ওপর পর্দা করা আবশ্যক। আলহামদুলিল্লাহ স্বামীর বাড়িতে যেহেতু পর্দার ব্যবস্থা
রয়েছে, এমতাবস্থায়ী স্ত্রীর উচিত স্বামীর বাড়িতেই থাকা। তবে বাবার বাড়িতেও যেতে
পারবে। সেক্ষেত্রে পর্দার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। যদি নিশ্চিত ভাবে বাবার বাড়িতে
গেলে পর্দা লঙ্ঘন হয়, এমতাবস্থায় বাবার বাড়িতে পর্দার পরিবেশ করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা
করা উচিত। তাদেরকে দ্বীনি পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য কোরআন ও সুন্নাহ এর আলোকে বোঝানোর
জন্য চেষ্টা করবেন এবং তাদের জন্য দোয়া করবেন। যদি তারা না শুনে তাহলে সাময়িকভাবে
নিজের পর্দা রক্ষার জন্য সেখানে যাতায়াত স্থগিত রাখবে। তবে এর অর্থ এই নয় যে, পিতা-মাতার
সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করবে। বরং তাদের
সাথে যোগাযোগ রাখবে এবং তাদের খোঁজখবর নিবে। সর্বোপরি তাদেরকে দ্বীনি পরিবেশ গড়ে তোলার
জন্য দাওয়াত প্রদান করবে।
স্বামী নিষেধ
করা শর্তেও স্বামীর নিষেধ অমান্য করে স্ত্রী যদি বাবার বাড়িতে যায় এবং তার পর্দা
লঙ্ঘন হয় এর গুনাহ স্ত্রীর উপরে বর্তাবে। এর জন্য স্বামী দায়ী হবে না।