আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
38 views
in সালাত(Prayer) by (33 points)
edited by
আমি ১৬ জুলাই   ভেলুর ইন্ডিয়া যাই চিকিৎসার উদ্দেশ্যে। নিয়ত ছিল সেখানে ১৫ দিনের বেশি থাকবো না। তো সেই হিসেবে আমি মুসাফির ছিলাম।২০ জুলাই একটি ডাক্তার দেখাই  তিনি আমাকে একটি পরীক্ষা দেন যার তারিখ পাওয়া যায়  ৩ আগষ্ট। আমি যেহেতু বাংলাদেশ থেকে এসেছি আর এতটা অপেক্ষা করা সম্ভব নয় ডক্টর আমাকে বলেছিলেন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করতে এর আগের  কোন তারিখে আমি পরীক্ষাটি করতে পারবো কিনা ঐ সময় মনে মনে এই নিয়ত করি যে পরীক্ষা করে ডক্টরকে রিপোর্ট দেখিয়ে তারপরে বাংলাদেশে আসবো এই ক্ষেত্রে হয়তো ১৫ দিনের বেশি বা কম সময় লাগতে পারতো অর্থাৎ কতদিন লাগতো তা নির্দিষ্ট নয়।২৫ জুলাই আমি আবার নিশ্চিত হই যে আমি ১৫ দিনের আগেই বাংলাদেশে ফিরে আসবো।৩১ জুলাই আমি ডাক্তারকে রিপোর্ট দেখিয়ে ১ আগস্ট বাংলাদেশে ফিরে আসি।
এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে ২০ জুলাই আমি যে নিয়ত করি ডাক্তার দেখিয়ে বাংলাদেশে আসব এক্ষেত্রে ১৫ দিনের কম সময়ও লাগতে পারতো বা বেশি সময়ও লাগতে পারতো এক্ষেত্রে ২০ তারিখের ঐ নিয়ত করার ফলে আমি কি মুকিম হয়ে  গিয়েছিলাম এবং পরবর্তীতে যখন আমি ২৫ জুলাই যখন নিশ্চিত হলাম যে ১৫ দিনের আগেই ফিরে আসতে পারবো ঐদিন থেকে আমি কি আবার মুসাফির হয়ে গিয়েছিলাম নাকি মুকিম অবস্থায় ছিলাম?


২।আজকে কয়েক বছর যাবত আমার সাদা স্রাবের অনেক সমস্যা। গোপনাঙ্গে বেশিরভাগ সময়ই সাদাস্রাব এসে থাকে।আজকে বেশ কয়েকদিন যাবত নামাজ পড়তে বেশ সমস্যা হচ্ছে। প্রত্যেক ওয়াক্তেই হয় দুইবার নাহয়  তিনবার অজু করার প্রয়োজন হচ্ছে শুধু চার রাকাত ফরজ সালাত আদায় করার জন্য।কালকে এশা ওয়াক্তে তিনবার চেষ্টা করার পরেও এক অজুতে চার রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে পারিনি।আজকে মাগরিবের ওয়াক্তে ঠিক একই রকম হয়েছে তিনবার চেষ্টা করার পরেও এক ওজুতে তিন রাকাত ফরজ নামাজ আদায় করতে পারিনি।এত বার বার গোপনাঙ্গ পরিষ্কার করার কারণে দেখা যাচ্ছে গোপনাঙ্গ কেটে যাচ্ছে বা ব্যথা করছে আবার দেখা যাচ্ছে টিস্যু গুরু গুরু হয়ে ভিতরেও থেকে যাচ্ছে কারন আমি কিছুটা ভিতর থেকে পরিষ্কার করি যেন আমার অজুটা থাকে কিন্তু এত চেষ্টার পরও অজু থাকছে না ভেঙে যাচ্ছে এই ক্ষেত্রে আমার করনীয় কি আমি কি নিজেকে মাজুর ধরতে পারবো কারণ এত বারবার অজু করে প্রত্যেক  নামাজে পড়াটা আসলে অনেকটা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে।

1 Answer

0 votes
by (546,690 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
শরীয়তের বিধান হলো শরয়ী সফরের দূরত্বে কোন স্থানে গিয়ে সেখানে যদি কমপক্ষে পনের দিন থাকার নিয়ত না করে, তাহলে কসর পড়তে হবে। ১৫ দিন বা তার চেয়ে বেশি দিন থাকার নিয়ত করলে কসর করতে পারবে না।

৭৮ কিলোমিটার হল সফরের দূরত্ব। এর কম নয়। সুতরাং কেউ যদি ৭৮ কিলোমিটার দূরত্বের সফরের নিয়তে বের হয় কেবল সেই ব্যক্তি কসর পড়তে পার। এরচে’কম দূরত্বের সফরের জন্য কসর পড়া জায়েজ নয়।

বিস্তারিত জানুনঃ- 

সেক্ষেত্রে চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজ কসর করতে হবে। কুরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে,

وَإِذَا ضَرَبْتُمْ فِي الْأَرْضِ فَلَيْسَ عَلَيْكُمْ جُنَاحٌ أَنْ تَقْصُرُوا مِنَ الصَّلَاةِ

‘আর যখন তোমরা যমীনে সফর করবে, তখন তোমাদের নামাজ কসর করাতে কোনো দোষ নেই।’ [সূরা নিসা, আয়াত: ১০১]

হাদিস শরীফে এসেছে,

عِيسَى بْنُ حَفْصِ بْنِ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ الْخَطَّابِ عَنْ أَبِيهِ قَالَ صَحِبْتُ ابْنَ عُمَرَ فِى طَرِيقٍ – قَالَ – فَصَلَّى بِنَا رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ أَقْبَلَ فَرَأَى نَاسًا قِيَامًا فَقَالَ مَا يَصْنَعُ هَؤُلاَءِ قُلْتُ يُسَبِّحُونَ. قَالَ لَوْ كُنْتُ مُسَبِّحًا أَتْمَمْتُ صَلاَتِى يَا ابْنَ أَخِى إِنِّى صَحِبْتُ رَسُولَ اللَّهِ – ﷺ – فِى السَّفَرِ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ أَبَا بَكْرٍ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ وَصَحِبْتُ عُمَرَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَصَحِبْتُ عُثْمَانَ فَلَمْ يَزِدْ عَلَى رَكْعَتَيْنِ حَتَّى قَبَضَهُ اللَّهُ تَعَالَى وَقَدْ قَالَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ (لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِى رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ

ইবনে উমর রাযি. বলেন, নিশ্চয় আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাথে সফর করেছি, তিনি মৃত্যুবরণ করার আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি আবু বকর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও আমরণ সফরে ২ রাকাতই পড়েছেন। আমি উমর রাযি. এর সাথেও সফর করেছি তিনি মৃত্যু পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আমি  উসমান রাযি. এর সাথেও সফর করেছি, তিনিও মৃত্যুর আগ পর্যন্ত সফরে ২ রাকাতের বেশি পড়েন নি। আর আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, আমি তোমাদের জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মাঝে রেখেছি উত্তম আদর্শ। (মুসলিম ১৬১১)

আরো জানুনঃ 

যদি আপনি পনেরো দিন বা তার চেয়ে বেশি  থাকার নিয়ত না করেন,বরং আজ কাল যেকোনো মুহুর্তে আপনার চলে যেতে হবে,এমনটি যদি হয়,তাহলে আপনি এই অবস্থায় যতদিন এখানে থাকবেন,মুসাফির হিসেবে কসরের নামাজ আদায় করবেন।

যদি এমন হয় যে কাল চলে যাবো বা পরশু চলে যাবো,নিয়ত যদি নির্দিষ্ট না থাকে, এইভাবে যদি কয়েকমাসও অতিবাহিত হয়ে যায়,তাহলেও ব্যাক্তি কসর এর নামাজ আদায় করবে।

ফাতাওয়ায়ে শামীতে আছেঃ

أو دخل بلدة ولم ينوها) أي مدة الإقامة (بل ترقب السفر) غدا أو بعده (ولو بقي) على ذلك (سنين) إلا أن يعلم تأخر القافلة نصف شهر كما مر.
(قوله: أو دخل بلدة) أي لقضاء حاجة أو انتظار رفقة.
(قوله: ولم ينوها) وكذا إذا نواها وهو مترقب للسفر كما في البحر لأن حالته تنافي عزيمته."
(باب صلوة المسافر، ج:2، ص:126، ط:ایچ ایم سعید)

সারমর্মঃ
যদি এমন হয় যে কাল চলে যাবো বা পরশু চলে যাবো,নিয়ত যদি নির্দিষ্ট না থাকে, এইভাবে যদি দুই বছরও অতিবাহিত হয়ে যায়,তাহলেও ব্যাক্তি কসর করবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নের বিবরন মতে আপনি ঐ দিন থেকে মুকিম হয়ে যাননি।
বরং মুসাফিরই ছিলেন।

(০২)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
যদি আপনি মা'যুর হোন,অর্থাৎ নামাজের শুরু ওয়াক্ত থেকে নিয়ে ওয়াক্তের শেষ পর্যন্ত আপনার স্রাব বের হতেই থাকে,এই ওযরের কারণে অল্প সময়ে ছোট সুরা দিয়ে হলেও ফরয নামায পড়া আপনার জন্য কোনোভাবেই সম্ভবপর না হয়,সেক্ষেত্রে আপনি যেভাবে নামাজ আদায় করছেন,এই ভাবে নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
কেননা আপনি মা'যুর। 

পরবর্তী ওয়াক্ত গুলোতে এই ওযর একবার পাওয়া গেলেও আপনি মা'যুর হিসেবেই বহাল থাকবেন।

আপনি প্রতি ওয়াক্তের জন্য অযু করবেন,এই অযু দিয়ে উক্ত ওয়াক্তের মধ্যে যত ইচ্ছা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
(যদি অন্য কোনো অযু ভঙ্গকারী কিছু না পাওয়া যায়।)
,
পরবর্তী ওয়াক্তে আবার অযু করবেন।

বিস্তারিত জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...