আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
59 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (22 points)
আসসালামু আলাইকুম। আমাদের দেশে স্টুডেন্ট ভাড়া প্রচলিত আছে, স্কুল কলেজে যেতে হলে আমাদের থেকে হাফ ভাড়া নেয়। তবে এটা স্কুল কলেজ বা পড়াশোনার ক্ষেত্রে। শুক্র বা শনিবার হাফ ভাড়া গ্রহণযোগ্য হয় না কারণ বন্ধ থাকে প্রতিষ্ঠান।

কিন্তু এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সপ্তাহের অন্যান্য দিন পড়াশোনার উদ্দেশ্য ছাড়া ঘোরাঘুরি, মার্কেট করা, বেড়াতে যাওয়া ইত্যাদি কাজে স্টুডেন্ট পরিচয় দিয়ে হাফ ভাড়া দেওয়া কি যৌক্তিক? শরিয়তের হুকুম কি এক্ষেত্রে?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

https://ifatwa.info/310/ ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,  বৈধ বিষয়ে সরকারি বিধিনিষেধ মানা সকলের জন্য অত্যাবশ্যকীয়।

চার মাযহাব সম্বলীত সর্ব বৃহৎ ফেক্বাহী গ্রন্থ'আল-মাওসু'আতুল ফেক্বহিয়্যায়' রয়েছে,

" ﻃﺎﻋﺔ ﺍﻟﻤﺨﻠﻮﻗﻴﻦ - ﻣﻤّﻦ ﺗﺠﺐ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ – ﻛﺎﻟﻮﺍﻟﺪﻳﻦ ، ﻭﺍﻟﺰّﻭﺝ ، ﻭﻭﻻﺓ ﺍﻷﻣﺮ : ﻓﺈﻥّ ﻭﺟﻮﺏ ﻃﺎﻋﺘﻬﻢ ﻣﻘﻴّﺪ ﺑﺄﻥ ﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ، ﺇﺫ ﻻ ﻃﺎﻋﺔ ﻟﻤﺨﻠﻮﻕ ﻓﻲ ﻣﻌﺼﻴﺔ ﺍﻟﺨﺎﻟﻖ " ﺍﻧﺘﻬﻰ

যাদের আদেশ-নিষেধ এর অনুসরণ শরীয়ত কর্তৃক ওয়াজিব।যেমন-মাতাপিতা,স্বামী,সরকারী বিধিনিষেধ,এর অনুসরণ ওয়াজিব।

এ হুকুম ব্যাপক হারে প্রযোজ্য হবে না বরং ঐ সময়-ই প্রযোজ্য হবে যখন তা গুনাহের কাজ হবে না। কেননা হাদীস দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে আল্লাহর অবাধ্যতায় কোনো মাখলুকের অনুসরণ করা যাবে না।

(২৮/৩২৭)

হাফ ভাড়া সরকার কর্তৃক নির্ধারিত।তাই ছাত্ররা হাফ ভাড়া দিবে।হ্যা কোনো ছাত্র সেচ্ছায় ফুল ভাড়া দিতে চাইলে,তা দিতেও পারবে। তবে ছাত্রদের হাফ ভাড়ার ক্ষেত্রে কিছু ইসলামী স্কলারগন বলেছেন, যে পরিবহনে উঠা হয়, যদি সেই পরিবহনের মালিক স্বেচ্ছায় শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়া গ্রহণ করে থাকে, তাহলে হাফ ভাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীদের যাতায়াত জায়েজ আছে। নতুবা চাপ সৃষ্টি করে সেই পরিবহন মালিকের সন্তুষ্টির খেলাফ হাফ ভাড়া দেওয়া ঠিক হবেনা।

এক্ষেত্রে কেহ যদি ছাত্র না হয়ে ছাত্র পরিচয় দিয়ে ভাড়া কম দেয়,তাহলে তার জন্য এটি কোনোভাবেই জায়েজ হবে না। এখনো ছাত্র পরিচয় দিয়ে ভাড়া কম দিলে সেটি ধোঁকাবাজীর অন্তর্ভূক্ত হবে। যা ইসলামে সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।

হাদীসে ইরশাদ হচ্ছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ: أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَنْ حَمَلَ عَلَيْنَا السِّلَاحَ فَلَيْسَ مِنَّا، وَمَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের উপর তরবারী উত্তলোন করে, সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়, এবং যে আমাদের ধোঁকা দেয়, সে আমাদের অন্তর্ভূক্ত নয়। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-২২২৪}

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আলিম কোর্সের স্টুডেন্ট হিসেবে আইওএম এর আইডি কার্ড দেখিয়ে স্টুডেন্ট ভাড়া দিতে চাইলে সেক্ষেত্রে পরিবহনের দায়িত্বশীল ব্যাক্তি যদি তাহা মেনে নেয়, এক্ষেত্রে স্টুডেন্ট ভাড়া দেয়া যদিও জায়েজ।

তারপরেও কাহারো জব থাকলে বা কোনো ইনকাম সোর্স থাকলে তার জন্য এভাবে স্টুডেন্ট ভাড়া না দিয়ে ফুল ভাড়া পরামর্শ থাকবে। উল্লেখ্য,এক্ষেত্রে পরিবহনের দায়িত্বশীল ব্যাক্তি যদি হাফ ভাড়া গ্রহনে অস্বীকৃতি জানায়,তাহলে অবশ্যই ফুল ভাড়া দিতে হবে।

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

বাস ভাড়া অর্ধেক নেওয়ার ক্ষেত্রে বাস মালিক কর্তৃপক্ষ যে বিষয়টিতে শিথীলতা প্রদর্শন করেন, তা হল যে, শিক্ষার্থীরা পড়াশোনার উদ্দেশ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের ক্ষেত্রে তাদের প্রতি সহানুভূতি  প্রদর্শন করা। এমতাবস্থায় যদি কোন শিক্ষার্থী স্টুডেন্ট কার্ড ব্যবহার করে পড়াশোনা সম্পর্কিত কোন বিষয়ে কোথাও যাতায়াত করা ছাড়ায় এমনিতেই ঘোরাফেরা বা আনন্দ বিনোদনের জন্য কোথাও যাতায়াত করে সেক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ থাকবে পূর্ণ ভাড়া প্রদান করা। ঠিক তেমনি ভাবে ছুটির দিনগুলিতে যেমন: শুক্রবার শনিবারও পূর্ণ ধরা প্রদান করা। এটাই তাকওয়ার নিকটবর্তী সিদ্ধান্ত  হিসেবে উলামায়ে কেরাম মনে করেন।

তবে বাস মালিকপক্ষ যদি উক্ত দিনগুলিতেও স্বেচ্ছায় অর্ধেক ভাড়া গ্রহণ করেন এমতাবস্থায় অর্ধেক ভাড়া প্রদান করা জায়েজ আছে। এত কোন সমস্যা নেই।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...