আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
61 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (19 points)
১) যারা শহীদ হয়ে গেছেন, যদি তাদের মূর্তি বানানো হয় তবে কি তাদের কবরে আজাব হয়?

২) শহীদদের নিয়ে কনসার্টের আয়োজন করলে কি সেটাতে শহীদদের কবরে আজাব হয়?

৩) জালিমের জুলুম থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে আন্দোলন করে মৃত্যু বরণ করলে কি শহীদ?

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/7566/ নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

হাদীস নং এক.

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর(রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ، رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا أَخْبَرَهُ: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: " إِنَّ الَّذِينَيَصْنَعُونَ هَذِهِ الصُّوَرَ يُعَذَّبُونَ يَوْمَ القِيَامَةِ، يُقَالُ لَهُمْ: أَحْيُوا مَا خَلَقْتُمْ "

রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন,যারা ফটো বানায়, কিয়ামতের দিন তাদের শাস্তি দেয়া হবে এবং তাদের উদ্দেশ্যে বলা হবে,যা তোমরা বানিয়েছ তাতে জীবন দাও। [সহীহ বুখারী-৫৯৫১]


হাদীস নং দুই.

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

عن عَبْدَ اللَّهِ، قَالَ: سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: «إِنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَذَابًا عِنْدَ اللَّهِ يَوْمَ القِيَامَةِ المُصَوِّرُونَ»

রাসূলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন,যারা ফটো বানাবে,কিয়ামতের দিন তাদের কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।[সহীহ বুখারী-৫৯৫০]


হাদীস নং তিন.

হযরত আবু যুর'আ (রা.)থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

عَنْ أَبِي زُرْعَةَ، قَالَ: دَخَلْتُ مَعَ أَبِيهُرَيْرَةَ فِي دَارِ مَرْوَانَ فَرَأَى فِيهَا تَصَاوِيرَ، فَقَالَ: سَمِعْتُ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ: قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ: «وَمَنْ أَظْلَمُ مِمَّنْ ذَهَبَ يَخْلُقُ خَلْقًا كَخَلْقِي؟ فَلْيَخْلُقُوا ذَرَّةً، أَوْ لِيَخْلُقُوا حَبَّةً أَوْ لِيَخْلُقُوا شَعِيرَةً»

একবার আমি হযরত আবু-হুরায়রা (রা.)এর সঙ্গে (খলিফা)মারওয়ানের ঘরে প্রবেশ করলাম।হযরত আবু-হুরায়রা (রা.)মারওয়ানের ঘরে বেশকিছু ফটো দেখতে পেয়ে বললেন,আমি রাসূলুল্লাহ

কে বলতে শুনেছি,তিনি বলেন,আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেছেন,ওই ব্যক্তির চেয়ে বড় জালিম কে,যে আমার সৃষ্টিতুল্য সৃষ্ট? সুতরাং তার উচিৎ সে যেন অনু সৃষ্টি করে দেখায় এবং শস্যদানা সৃষ্টি করে দেখায় এবং যব সৃষ্টি করে দেখায়। [সহীহ মুসলিম-২১১১]


হাদীস নং চার.

হযরত আবু তালহা (রা.)থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন

عَنْ أَبِي طَلْحَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَاتَدْخُلُ الْمَلَائِكَةُ بَيْتًا فِيهِ كَلْبٌ وَلَا صُورَةٌ»

আমি রাসূলে কারীম কে বলতে শুনেছি: 'ওই ঘরে ফেরেশতা প্রবেশ করে না,যে ঘরে কুকুর এবং ফটো রয়েছে।'[ সহীহ মুসলিম-২১০৬]

আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/7566/


https://ifatwa.info/26782/  নং ফাতওয়াতে উল্লেখ রয়েছে যে,

*শহীদি মৃত্যু দুই প্রকার। এক প্রকার হলো প্রকৃত শহীদ। তা হলো, দ্বিন কায়েমের জন্য কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জীবন দেওয়া। এ ধরনের শহীদের মর্যাদা অনেক বেশি। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, ‘আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না; বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা বুঝ না।’ (সুরা আল-বাকারা : ১৫৪)


আরেক প্রকারের শহীদ হলো, হুকমি। অর্থাৎ তারা শহীদের সাওয়াব প্রাপ্ত হবেন।

আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, শহীদ পাঁচ প্রকার। যেমন—১. প্লেগ বা মহামারিতে মৃত্যুবরণকারী, ২. পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকারী, ৩. পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারী, ৪. কুপে পড়ে মৃত্যুবরণকারী ও ৫. আল্লাহর রাস্তায় শহীদ (বুখারি ও মুসলিম)


সায়িদ ইবনে যায়েদ রা: থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেন, যে তার সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয়, সে শহীদ। যে তার পরিবার-পরিজনদের রক্ষা করতে গিয়ে নিহত হয়, সে শহীদ। যে দ্বীন রক্ষায় নিহত হয়, সে শহীদ। যে তার জীবন রক্ষায় নিহত হয় সে শহীদ। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৭৭২; তিরমিজি, হাদিস : ১৪১৮)


মহামারী জাতীয় কোনো রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা। আনাস ইবনে মালেক রা: বলেন, আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, ‘তাউন’ হচ্ছে সব মুসলিমের জন্য শাহাদত। (বুখারি ১০/১৬৫-১৬৭; মুসনাদে আহমদ ৩/১৫০, ২২০)


সন্তান প্রসবের সময় ও নেফাস অবস্থায় নারী মৃত্যুবরণ করা। উবাদা ইবনে সামিত রা: থেকে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেন-সন্তান প্রসব করতে গিয়ে নারীর মৃত্যু হলে তা শাহাদত। তার সন্তান তাকে জান্নাতের দিকে টেনে নিয়ে যাবে। (মুসনাদে আহমদ ৪/২০১, ৫/৩২৩)


পানিতে ডুবে, আগুনে পুড়ে কিংবা ভূমিধসে মৃত্যুবরণ করা। আবু হুরায়রা রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, শহীদ পাঁচ শ্রেণীর : প্লেগ রোগে মৃত্যুবরণকারী, পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকারী, পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারী, ভূমিধসে মৃত্যুবরণকারী এবং আল্লাহর পথের শহীদ। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৬৩; মুসলিম, হাদিস :১৯১৫)


হজরত জাবির ইবনে ওতাইক বলেন, আল্লাহর রাসূল সা: ইরশাদ করেছেন, আল্লাহর পথে নিহত হওয়া ছাড়াও আরো সাত শ্রেণীর শহীদ আছেন। যথা প্লেগ রোগে মৃত্যুবরণকারী শহীদ, পানিতে ডুবে মৃত্যুবরণকারী শহীদ, জাতুল জাম্বে (ফুসফুসের একটি বিশেষ ব্যাধি) মৃত্যুবরণকারী শহীদ, পেটের পীড়ায় মৃত্যুবরণকারী শহীদ, আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ, ধসের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুবরণকারী শহীদ। সন্তান প্রসব করতে গিয়ে মৃত্যুবরণকারী নারী শহীদ। (মুসনাদে আহমদ ৫/৪৪৬; আবু দাউদ, হাদিস : ৩১১১; নাসায়ি ৪/১৩-১৪)

আরো বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/26782/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!


১-২. মূর্তি বানানো কনসার্ট করা ইসলামে জায়েজ নেই; বরং হারাম তাই মূর্তি বানালে বা কনসার্ট করলে বড় গোনাহ হবে আর যারা নিহত হয়েছেন বা শহীদ হয়েছেন তারা যদি মৃত্যুর আগে ব্যাপারে অর্থাৎ তাদের মূর্তি বানাতে বা তাদের নামে কনসার্ট করতে বলে যান বা তার জীবদ্দশায় এমন কাজে তার সম্মত থাকে তাহলে অবশ্যই এর কারণে মৃত ব্যক্তিরও গোনাহ হবে কবরের আযাব হবে আর যদি না বলে যান বা তার সম্মত না থাকে তাহলে অন্য কেউ তাদের নামে মূর্তি বানালে বা কনসার্ট করলে যারা এগুলো করলো শুধু তাদেরই গোনাহ হবে মৃত ব্যক্তি নয়

৩. কাউকে অন্যায় ভাবে বা জুলুম করে হত্যা করা হলে ঐ নিহত ব্যক্তি দ্বিতীয় প্রকারের শহীদ হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...