আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
47 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (19 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ।
মুহতারাম মুফতি সাহেব,
০১।একজন অন্য আরেক জনের কাছে কিছু টাকা রাখল।বলল যখন প্রয়োজন হয় তখন সে ফেরত নেবে।যার কাছে টাকা রাখা হলো সে যদি ঐ টাকা থেকে খরচ করে । আর নিয়ত এটা রাখে যে, যখন  টাকা ফেরত চাইবে তখন এ সামান্য টাকা দেয়া যাবে ।  প্রয়োজনে ঋণ করে  ফেরত দিবে ইনশাআল্লাহ । এ অবস্থায় ঐ জমা টাকা  খরচ করার হুকুম কী?
০২। কেউর প্রথম রাকাতে সূরা বাকারার ১০নং থেকে ২০নং আয়াত পর্যন্ত পড়লেন । দ্বিতীয় রাকাতে ৩০নং  থেকে ৩৫ নং আয়াত পড়লেন।
অর্থাৎ মধ্যখানে ২১ থেকে ২৯ পর্যন্ত বাদ পড়ল।ইচ্ছা করে এভাবে পড়া যাবে কি?

০৩। আশ্চর্যের বিষয় হল মিসরের বড় বড় আলেমগণ দাড়ি রাখেন না। বিষয়টা আসলে কী?

1 Answer

0 votes
by (559,140 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১)
এই টাকা তার কাছে আমানত হিসেবে ছিলো।
সেই টাকা প্রশ্নে উল্লেখিত পদ্ধতিতে খরচ করা জায়েজ হবেনা।
তবে আমানত দাতার নিকট হতে অনুমতি নিয়ে সে এটা খরচ করতে পারবে।

(০২)
ফরজ নামাজের মধ্যে এমনটি হলে এটা মাকরুহ হবে।

فتاوی ہندیہ:

"وأما في ركعتين إن كان بينهما سور لا يكره وإن كان بينهما سورة واحدة قال بعضهم: يكره، وقال بعضهم: إن كانت السورة طويلة لا يكره. هكذا في المحيط كما إذا كان بينهما سورتان قصيرتان....هذا كله في الفرائض وأما في السنن فلا يكره."

(کتاب الصلاہ،الفصل الرابع فی القراءہ، ج:1، ص:79، ط:مصر)
সারমর্মঃ-
যদি দুই রাকাতে এমন হয়,সেক্ষেত্রে যদি ঐ তিলাওয়াত কৃত দুই আয়াতের মাঝে বড় সুরা থাকে,সেক্ষেত্রে তাহা মাকরুহ হবেনা।
অন্যথায় তাহা মাকরুহ হবে।

(০৩)
https://ifatwa.info/89526 নং ফতোয়াতে উল্লেখ রয়েছেঃ- 
রাসূল সাঃ এর সকল আমলকে আদর্শ সাব্যস্ত করে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন-

لَقَدْ كَانَ لَكُمْ فِي رَسُولِ اللَّهِ أُسْوَةٌ حَسَنَةٌ لِمَنْ كَانَ يَرْجُو اللَّهَ وَالْيَوْمَ الْآخِرَ وَذَكَرَ اللَّهَ كَثِيرًا [٣٣:٢١

যারা আল্লাহ ও শেষ দিবসের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে,তাদের জন্যে রসূলুল্লাহর মধ্যে উত্তম নমুনা রয়েছে। {সূরা   আহযাব-২৩}

একমুষ্টি পরিমান দাড়ি রাখা চার মাযহাব মতে ওয়াজিব।
হযরত ইবনে উমর রাঃ থেকে বর্ণিত,

 ﻋﻦ ﻋﺒﺪ ﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻋﻤﺮ - ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ – ﻗﺎﻝ : ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ : " ﺃﻧﻬﻜﻮﺍ ﺍﻟﺸﻮﺍﺭﺏ ﻭﺃﻋﻔﻮﺍ ﺍﻟﻠﺤﻰ "

তরজমাঃ- নবী কারীম সাঃ বলেন,তোমরা  গোঁফকে ছাটাই করো ,এবং দাড়িকে বাড়ার জন্য ছেড়ে দাও।
(সহীহ বুখারী-৫৪৪৩,সহীহ মুসলিম-৬০০)

দাড়ি মুন্ডানো হারাম।এবং একমুষ্টি থেকে কম দাড়ি রেখে অবশিষ্ট দাড়ি ছাঁটাই করাও হারাম।
এতে কবীরা গুনাহ হবে। 
(জাওয়াহিরুল ফিকহ-৭/১৬০)

عن ابن عمر  : عن النبي صلى الله عليه و سلم قال ( خالفوا المشركين وفروا اللحى وأحفوا الشوارب  . وكان ابن عمر إذا حج أو اعتمر قبض على لحيته فما فضل أخذه

হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন-তোমরা মুশরিকদের বিরোধীতা কর। দাড়ি লম্বা কর। আর গোঁফকে খাট কর।
আর ইবনে ওমর রাঃ যখন হজ্ব বা ওমরা করতেন, তখন তিনি তার দাড়িকে মুঠ করে ধরতেন, তারপর অতিরিক্ত অংশ কেটে ফেলতেন। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৫৫৫৩}

আরো জানুনঃ 
,
کان حلق اللحیۃ محرّما عند ائمۃ المسلمین المجتہدین أبی حنیفۃ، ومالک، والشافعی، وأحمد وغیرھم -رحمہم اللہ تعالیٰ-“․ (المنہل العذب المورود، کتاب الطہارۃ، أقوال العلماء فی حلق اللحیۃ واتفاقہم علی حرمتہ: 1/186، موٴسسۃالتاریخ العربی، بیروت، لبنان) 

সারমর্মঃ চার মাযহাব এই বিষয়ে একমত যে সমস্ত মুসলমান মুজতাহিদিনের নিকটে দাড়ি কাটা হারাম।
۔
وأما تقصیرُ اللحیۃ بحیثُ تصیرُ قصیرۃ من القبضۃ، فغیرُ جائزٍ فی المذاھب الأربعۃ“․ (العرف الشذی، کتاب الآداب، باب ما جاء فی تقلیم الأظفار، 4/162، دار الکتب العلمیۃ) 
এক মুষ্ঠি থেকে কম রেখে দাড়ি কাটা চার মাযহাবের সম্মতিক্রমে নাজায়েজ।  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
চার মাযহাবের সমস্ত ইমামদের নিকটে এক মুষ্ঠি থেকে কম রেখে দাড়ি কাটা নাজায়েজ।
কেউ এটিকে হালকা বিধান বলেননি।
চার মাযহাব এই বিষয়ে একমত যে সমস্ত মুসলমান মুজতাহিদিনের নিকটে দাড়ি কাটা হারাম।

★উল্লেখ্য, কোনো দেশের কারী/আলেমরা দাড়ি না রাখলে দাড়ির বিধান হালকা হয়ে যাবেনা।

আমাদের দলিল কোনো ব্যাক্তি নয়,
আমাদের দলিল কুরআন হাদীস। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...