আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (49 points)

আসসালামু আলাইকুম 
 

১) আমি এক জায়গা থেকে জানতে পারলাম একজন ব্যক্তির আমলনামা যখন দাঁড়িপাল্লায় মাপা হবে এবং তার আমলনামায় নেকি কিছু বেশি হয় এবং বদি কিছু কম হয় তাহলে সে জান্নাতে যাবে আবার নেকি বদী সমান হলে আরাফাহ এর মতো একটা স্থানে থাকবে যেটা অনেকটা পৃথিবীর মতো, আর নেকির চেয়ে বদি কিছু কম হলে সে জাহান্নামে যাবে। 

 

অপরদিকে আমি এটা জেনেছি কোন মানুষ আল্লাহর দয়া এবং অনুগ্রহ লাভ করলেই তবে জান্নাতে যেতে পারবে। তাহলে কারো যদি পাল্লায় নেকির চেয়ে বদী বেশি বা নেকি বা বদী সমান হলেও সে জান্নাতে যেতে পারবে? 

 

*এমন কি হতে পারে যে কারো আমলনামায় নেকি বেশি বদী কম কিন্তু তারপরও সে জান্নাতে না যেতে পারে? যেহেতু একজন ব্যক্তি জান্নাতে যাবে শুধু আল্লাহর দয়া এবং অনুগ্রহ প্রাপ্ত হলে।  


 

২) আজাজিল এবং অন্য ফেরেশতাদেরকে কি আদম আঃ কে সিজদাহ করার আদেশ দেয়া হয়েছিল? এটা কি সত্য?  আমি তো জানি আল্লাহর বিধান আল্লাহ ছাড়া কাউকে সেজদাহ করা যাবে না।

 

৩) মৃত্যু যন্ত্রণা কি সবারই হয় এবং এটা কি সবার ক্ষেত্রেই কষ্টদায়ক হবে? নাকি ঈমানদার এবং ঈমানহীনদের বিষয়ে পার্থক্য থাকবে। 


 

৩) মৃত্যু যন্ত্রণা যদি সবার ক্ষেত্রেই সত্য হয় তাহলে কেউ আল্লাহর নিকট এভাবে প্রার্থনা করতে পারবেঃ আল্লাহ আমাকে মৃত্যুযন্ত্রনা থেকে রক্ষা করুন বা মৃত্যু যন্ত্রণাকে সহজ করে দিন? 

 

৫) কওিয়্যুন নামের অর্থ কি শক্তিশালী এবং ক্ষমতাধর? এখন এই নাম বাংলা ভাষায় রাখলে কি রকম হবে? কওিয়্যুন তো আরবী। জাব্বারুন থেকে যেরকম জাব্বার হয় তাহলে কওিয়্যুন থেকে কি হবে? আমার নাম মোঃ হাসিন চৌধুরী। আমি কওিয়্যুন যোগ করলে নামের আগে আবদ যুক্ত করতে হবে? 


 

জাযাকাল্লাহু খাইরান

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

فَمَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۱۰۲﴾ 


অতঃপর যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই হবে সফলকাম।
(সুরা মু'মিনূন ১০২)


وَ الۡوَزۡنُ یَوۡمَئِذِ ۣالۡحَقُّ ۚ فَمَنۡ ثَقُلَتۡ مَوَازِیۡنُہٗ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُفۡلِحُوۡنَ ﴿۸﴾ 

আর সেদিন ওজন যথাযথ হবে। সুতরাং যাদের পাল্লা ভারী হবে তারাই সফলকাম হবে।
(সুরা আ'রাফ ০৮)

অন্য আয়াতেও আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “আর কেয়ামতের দিনে আমরা ন্যায়বিচারের মানদণ্ড স্থাপন করব, সুতরাং কারো প্রতি কোন যুলুম করা হবে না এবং কাজ যদি শস্য দানা পরিমাণ ওজনেরও হয় তবুও তা আমরা উপস্থিত করব।” [সূরা আল-আম্বিয়া: ৪৭] 

তবে আল্লাহ তা'আলা কোন কোন নেক বান্দার আমলকে বহুগুণ বর্ধিত করবেন। আল্লাহ বলেন, “নিশ্চয় আল্লাহ অণু পরিমাণও যুলুম করেন না। আর কোন পুণ্য কাজ হলে আল্লাহ সেটাকে বহুগুণ বর্ধিত করেন এবং আল্লাহ তার কাছ থেকে মহাপুরস্কার প্রদান করেন।” [সূরা আন-নিসা: ৪০]

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
নেকীর পাল্লা ভারি হলেই মুসলমান জান্নাত্র যাবে। এক্ষেত্রে আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়ায় মূলত নেকীর পাল্লা ভারি হবে।

(০২)
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ- 

وَ اِذۡ قُلۡنَا لِلۡمَلٰٓئِکَۃِ اسۡجُدُوۡا لِاٰدَمَ فَسَجَدُوۡۤا اِلَّاۤ اِبۡلِیۡسَ ؕ اَبٰی وَ اسۡتَکۡبَرَ ٭۫ وَ کَانَ مِنَ الۡکٰفِرِیۡنَ ﴿۳۴﴾

আর স্মরণ করুন, যখন আমরা ফেরেশতাদের বললাম, আদমকে সিজদা কর, তখন ইবলিস ছাড়া সকলেই সিজদা করল; সে অস্বীকার করল ও অহংকার করল। আর সে কাফেরদের অন্তর্ভুক্ত হল।
(সুরা বাকারা ৩৪)

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
সমস্ত ফেরেশতাদেরকে আল্লাহ তায়ালা আদম আঃ কে সিজদাহ করার আদেশ দিয়েছিলেন।

এটা সুস্পষ্ট যে, এ সিজদা ইবাদাতের উদ্দেশ্যে নয়। কেননা, আল্লাহ ব্যতীত অপরের ইবাদাত শিরক ও কুফরী। কোন কালে কোন শরীআতে এরূপ কাজের বৈধতার কোন সম্ভাবনাই থাকতে পারে না। 

সুতরাং এর অর্থ এছাড়া অন্য কোন কিছুই হতে পারে না যে, প্রাচীনকালের সিজদা আমাদের কালের সালাম, মুসাফাহা, মু'আনাকা, হাতে চুমো খাওয়া এবং সম্মান প্রদর্শনার্থে দাঁড়িয়ে যাওয়ার সমার্থক ও সমতুল্য ছিল। ইমাম জাসসাস আহকামুল কুরআন গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন যে, পূর্ববতী নবীগণের শরীআতে বড়দের প্রতি সম্মানসূচক সিজদা করা বৈধ ছিল। শরীআতে মুহাম্মদীতে তা রহিত হয়ে গেছে। বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের পদ্ধতি হিসেবে এখন শুধু সালাম ও মুসাফাহার অনুমতি রয়েছে। রুকূ’সিজদা এবং সালাতের মত করে হাত বেঁধে কারো সম্মানার্থে দাঁড়ানোকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। [আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস]

(০৩)
এ সংক্রান্ত জানুনঃ- 

(০৪)
হ্যাঁ,এমন দোয়া করা যাবে।
রাসুলুল্লাহ সাঃ দোয়া করেছিলেনঃ-

وَعَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا قَالَتْ: رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ بِالْمَوْتِ وَعِنْدَهُ قَدَحٌ فِيهِ مَاءٌ وَهُوَ يُدْخِلُ يَدَهُ فِي الْقَدَحِ ثُمَّ يَمْسَحُ وَجْهَهُ ثُمَّ يَقُولُ: «اللَّهُمَّ أَعِنِّي عَلَى مُنْكَرَاتِ الْمَوْتِ أَوْ سَكَرَاتِ الْمَوْتِ»

’আয়িশাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে আমি তাঁর মৃত্যুবরণ করার সময় দেখেছি। তাঁর কাছে একটি পানিভরা বাটি ছিল। এ বাটিতে তিনি বারবার হাত ডুবাতেন। তারপর হাত দিয়ে নিজের চেহারা মুছতেন ও বলতেন, হে আল্লাহ! তুমি আমাকে মৃত্যু যন্ত্রণায় সাহায্য করো।
(আত্ তিরমিযী ৯৭৮, মুখতাসার আশ্ শামায়িল ৩২৪, ইবনু মাজাহ্ ১৬২৩,মিশকাত ১৫৬৪)

(০৫)
হ্যাঁ, কওিয়্যুন নামের অর্থ কি শক্তিশালী এবং ক্ষমতাধর।

এ নামে মানুষের নাম রাখলে আবদুল কওি নাম রাখা যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...