আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
71 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (8 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ উস্তায,

একজন দ্বীনদার পাত্রের ব্যাপারে আমি বিয়ের জন্য ভীষণ আগ্রহী। পাত্র নিজেও আগ্রহী। আমার পরিবার থেকেও কোনো সমস্যা নেই। আমার পরিবার কিছুটা গরিব। এখন পাত্রের আম্মা চাচ্ছেন বিয়েতে আমার পরিবার থেকে আমাকে গয়না দেয়া হবে কি-না। উনি এটাকে যৌতুক বলে সংজ্ঞায়িত করছেন না। উনি বলছেন যে, উনারা নাকি মেয়ের জন্যই গয়না চাচ্ছেন, ছেলের জন্য না। ছেলের জন্য চাইলে যৌতুক হয়, মেয়েকে দিলে নাকি হয় না। উনারা আর কিছুই চান না, শুধু মেয়ের জন্য সামান্য হলেও স্বর্ণ চান।

ছোটবেলায় আমার স্বর্ণ ছিলো, তা বিক্রি করা হয়েছিলো তখন। এজন্য আমার আব্বু বলেছেন আমাকে ১ ভরি স্বর্ণ দিবেন। বিয়ে উপলক্ষে না। এমনি দিবেন ইনশাআল্লাহ। আব্বু জানেননা যে আমার শাশুড়ি গয়না চান।

(১) এখন আমি তো মনে মনে জানি যে এ গয়নাগুলো শাশুড়ির সামনে পেশ করতে পারলে আমাদের বিয়ে হবে। যদিও আমার আব্বু খুশিমনে এমনি এমনি আমাকে স্বর্ণ দিবেন, কিন্তু আমি যদি সেই সুযোগে তা আমার শাশুড়ির সামনে বিয়ের জন্য পেশ করি তাহলে কি তা যৌতুক বা ঘুষ হবে এবং এর ফলে কি আমি ও পাত্র গোনাহগার হবো? নাকি আব্বুর নিয়তের জন্য এটা রুখসাত থাকবে?

(২) পারিবারিক বাধা জটিলতার কারণে পাত্র কি চাইলে পিতামাতার অমতে একা এসে আমাকে বিয়ে করতে পারবেন যদি আমার আব্বু ও পরিবারের অনুমতি থাকে?

(৩) আমাদের জন্য কোনো পরামর্শ আছে উস্তায?

উল্লেখ্য, পাত্র নিজে এসবের বিরুদ্ধে কিন্তু উনার পরিবারকে বুঝাতে পারছেন না। আবার তিনি বা আমি আমরাও চাচ্ছি না বিয়েটা ক্যানসেল হোক। আর এই গয়না আমিই ব্যবহার করবো, শাশুড়ি আমার জন্যই চাচ্ছেন।

1 Answer

0 votes
by (59,730 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/56002/ নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

বিবাহ সহীহ হওয়ার জন্য শর্ত হল  আযাদ প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেকবান দু’জন মুসলিম পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বাক্ষীর সামনে পাত্র/পাত্রি প্রস্তাব দিবে আর অপরপক্ষ পাত্র/পাত্রি তা কবুল করবে। আর সাক্ষিগণ উভয়ের কথা সুষ্পষ্টভাবে শুনবে। সুতরাং বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিত ছাড়া বিয়ে সহীহ হবে না।


হাদিস শরিফে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ ، أَنّ رَسُولَ اللَّهِ ﷺ قَالَ لا نِكَاحَ إِلا بِوَلِيٍّ وَشَاهِدَيْ عَدْلٍ ، وَمَا كَانَ مِنْ نِكَاحٍ عَلَى غَيْرِ ذَلِكَ ، فَهُوَ بَاطِلٌ

আয়শা রাযি. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্  বলেছেন, অভিবাক ও দু’জন ন্যায়পরায়ণ সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত বিয়ে শুদ্ধ হয় না। যে বিবাহ অভিবাক ও সাক্ষীর উপস্থিতি ব্যতিত হবে তা বাতিল। (সহিহ ইবন হিব্বান ৪০৭৫)


ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়াতে রয়েছে-

فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9)

অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল  বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}


বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দু’টি। যথা-

১-ইজাব কবুল হওয়া।

২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।


ব্যস উক্ত দু’টি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।

যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ-

স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে, কিংবা স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।


কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ https://www.ifatwa.info/4541/

বাসর ঘর সাজানো জায়েজ আছে কি না - https://ifatwa.info/79221/

সর্বনিম্ন মহর- https://ifatwa.info/22995/

দেনমোহর বাকী রাখা সংক্রান্ত - https://ifatwa.info/3259/

ওলিমার আয়োজন করা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন- https://ifatwa.info/52878/

কনের বাড়ীতে দাওয়াত খাওয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/52878/


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!


১. মেয়ের বাবার সামর্থ্য অনুযায়ী নিজের ইচ্ছায় (ছেলের পরিবারের পক্ষ হতে জোরপূর্বক নয়) বিয়ের সময় তার মেয়েকে কিছু উপঢৌকন ও গিপ্ট দিতে চাইলে তা পারবে। এতে কোনো সমস্যা নেই। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তার মেয়ে ফাতেমা রা. এর বিয়ের সময় তাকে অনেক কিছু উপঢৌকন দিয়েছিলেন। তবে ছেলের পরিবারের পক্ষ হতে জোরপূর্বক হলে এটা নাজায়েজ হবে। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনার বাবা যে, আপনাকে এক ভরি স্বর্ণ দিচ্ছে। এটা ছেলের পরিবারের কাছে বলাতে কোনো সমস্যা নেই।


২. প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আমরা পরামর্শ দিবো যে, উভয় পরিবারের সবাইকে যেভাবেই হোক রাজী করিয়ে এই বিয়েতে অগ্রসর হওয়া সবচেয়ে উত্তম হবে। তবে হানাফী মাযহাবে বিয়ে সহীহ হওয়ার জন্য অভিভাবক রাজী থাকা শর্ত নয়। বরং বালিগ ছেলে মেয়ে নিজেদের কু'ফুর মধ্যে বিয়ে করলেও বিয়ে সহীহ হয়ে যাবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...