আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
83 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (12 points)

আস সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহ

১] আমাদের শৌচাগার আর গোসলখানা একসাথে, যার কারণে অযু করার সময় দোয়া পড়া যায়না। এখন এই দু'টির মাঝখানে ৫ফুট পরিমাণ দেয়াল তুলে দিলে, গোসলখানায় দোয়া পড়তে পারবো?

বা কি করণীয় একটু বিস্তারিত জানালে মুনাসিব হতো ইং শা আল্লহ

২] বিয়ের কোন পর্যায়ে ইস্তেখারা করতে হয়?

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলামি শরিয়তের আদব হলো, টয়লেট ও বাথরুম আলাদা রাখা। বাথরুম মানে গোসল খানা। সম্ভব হলে অজুর জন্য বাথরুমের বাইরে একটি স্বতন্ত্র জায়গা রাখা। নিজে ইচ্ছা করে এমন ডিজাইনে ঘরবাড়ি তৈরি করতে পারলে সম্ভব। ভাড়া বাসায় এমন আলাদা আলাদা পাওয়া সম্ভব নয়।

যদি টয়লেট ও বাথরুমের মাঝে কোনো আড় বা পর্দা দেওয়ার ব্যবস্থা না থাকে তাহলে নির্দিষ্ট কমোড ও পা-দানি অংশটি ছাড়া বাকি বাথরুমটি গোসলখানা হিসাবে ধরে নিতে হবে। নাপাকি থেকে পূর্ণ সতর্ক হয়ে সেখানে বসে অজু বানাতে পারবে। অপারগ অবস্থায় সীমিত সুযোগেও মহান আল্লাহ বান্দার নিয়তের দিক বিবেচনা করে বহু সীমাবদ্ধতা ক্ষমা করে দিয়ে থাকেন। আশা করা যায় মহান আল্লাহ ক্ষমা করবেন। 

অজুর শুরু ও শেষে দোয়ার শিক্ষা রয়েছে হাদিসে। অজুর শুরুতে بِسْمِ ٱللَّٰهِ ‘বিসমিল্লাহ’ বলা সুন্নত ও ফজিলতপূর্ণ আমল। কিন্তু টয়লেটে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা সুন্নাহ পরিপন্থী কাজ। কেননা টয়লেট নাপাক স্থান। ওখানে দোয়া-দরুদ, জিকির ইত্যাদি মহান আল্লাহর শান ও মর্যাদার পরিপন্থী। (দেখুন ইবনে মাজাহ: ৩০৩, সহিহ ইবনে হিব্বান: ১৪১৩, মুসনাদে আবু ইয়ালা আলমুসিলি: ৩৫৪৩)

তাই আলেমদের পরামর্শ হলো- টয়লেট ও গোসলখানা একসঙ্গে হলে, দ্রুত আড়ালের ব্যবস্থা করা। অর্থাৎ টয়লেট ও গোসলখানার মাঝখানে পার্টিশন দেওয়া। এতে অজুর দোয়া পড়তে সমস্যা থাকে না, উপরন্তু আল্লাহর নামের মর্যাদা ও পবিত্রতাও রক্ষা হয়। কিন্তু পার্টিশন না থাকলে জায়গা যতবড়ই হোক না কেন, বাথরুম টয়লেটের বাইরের অংশ বিবেচিত হয় না। ফলে ওখানে যেকোনো জায়গায় আল্লাহর নাম নেওয়ার অর্থই হলো টয়লেটে আল্লাহর নাম নেওয়া। তাই আড়াল বা পার্টিশনের ব্যবস্থা করা উত্তম।

তবে, তা করতে না পারলে অজু শুদ্ধ হবে। মূলত দোয়া বা জিকিরের জন্য জায়গা পাক করে নেওয়াটাই দায়িত্ব। ফতোয়ার কিতাবে এসেছে, বাথরুমে যদি বেশি পরিমাণ পানি ঢালা হয়, যার ফলে সেখান থেকে নাপাকি দূর হওয়ার ব্যাপারে প্রবল ধারণা হয় তাহলে এর দ্বারা উক্ত এলাকা পাক হয়ে যাবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ১/৩৩৩)

তখন সেখানে অজু গোসল, দোয়া সবকিছু জায়েজ। যেমন রসুলুল্লাহ (সা.) এক বেদুঈনের মসজিদে প্রস্রাব করার ফলে তাতে পানি ঢালার নির্দেশ দিয়েছিলেন। (বুখারি: ২১৯)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. সর্তকতা হচ্ছে, টয়লেট, বাথরুমের মাঝখানে পর্দার ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত আল্লাহর নামটা মর্যাদার খাতিরে মুখে না নিয়ে মনে মনে নেওয়াকে উত্তম বলেছেন অনেক আলেম। কেউ কেউ বলেছেন, যদি সম্ভব হয় অন্তত অজুর শুরুর অংশটি বাথরুমের বাইরে সম্পন্ন করতে পারলে ভালো। কারণ, আল্লাহর নাম নিতে হয় অজুর শুরুতে। আর বর্তমানের এটাচট বাথরুমগুলোতে মাঝখানে সাধারণত দেয়াল থাকে না, তাই এসব বাথরুমে অযু করার সময় মুখে উচ্চারণ করে দোয়া না করা। তবে মনে মনে দোয়া করা যাবে। তবে আপনি যদি দেয়াল তুলে দেন তাহলে অবশ্যই দোয়া পাঠ করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।


২. সাধারণত নিয়ম হলো যে, সুন্নাত তরিকায় পাত্রী/পাত্র দেখার পর ইস্তেখারার আমল শুরু করা।

প্রথম দিন সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে না পারলে সাতদিন ইস্তেখারা করা যেতে পারে। ইস্তেখারার উদ্দেশ্য হল আল্লাহর কাছে সঠিক সিদ্ধান্ত চেয়ে দোয়া করা । যদি আমরা সঠিকভাবে ইস্তেখারা করতে পারি তাহলে আল্লাহ তা’আলা আমাদের যেটা । ভালো হবে সেদিকে ফিরিয়ে দেবেন।

ইস্তেখারা করার পর আপনার মনে যে সিদ্ধান্ত বারবার উদিত হবে আপনি সেটাই ফলাফল বলে ধরবেন । এ ছাড়া কেউ যদি স্বপ্নেও দেখে, তাহলে এটা আরো ভালো । আবার কেউ যদি স্বপ্নের সাদা অথবা সবুজ কিছু দেখে তাহলে এটা ভালো লক্ষণ। আর যদি কেউ লাল অথবা কালো কিছু দেখে তাহলে সেটা খারাপ বলে গণ্য হবে ।

ইস্তেখারার দোয়াটি চাইলে দেখে দেখে পড়তে পারেন। তবে মুখস্থ করতে বেশি সময় লাগবে না মুখস্ত করলে বেশি উত্তম হবে। পড়ার সময় মনোযোগ বেশি বৃদ্ধি পাবে। আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের সবাইকে পবিত্র সম্পর্কের বরকত বাড়িয়ে দিক এবং ইস্তিখারার মাধ্যমে জীবনসঙ্গী বের করার তাওফিক দান করুক। এসম্পর্কে আরো জানুন: https://www.ifatwa.info/13381/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...