আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
81 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (9 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমি বিবাহিত।আমার বিয়ে আমার খুশিতে হয়নি।তারপরও আমি মানিয়ে নিতে চেষ্টা করছি। কিন্তু আমি আমার হাসবেন্ডকে সেভাবে এখনও মেনে নিতে পারিনি যেভাবে আমি বিয়ের আগে চাইতাম। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তার সাথে আমার মতবিরোধ হয়।বলতে গেলে ১০০% ই বিরোধ। যার অধিকাংশ ইসলামের বিধিনিষেধ নিয়ে। বিয়ের শুরু থেকেই আমাদের নানা ঝামেলা হয়।বিয়ের ২.৫ বছর পর আমি কনসিভ করি।কিন্তু সে আমাদের ১ম সন্তানকে চায়নি।মানে আমাকে গর্ভপাত করতে জোর করে।কিন্তু আমি সেটা করিনি।জোর করে সন্তানকে গর্ভে ধারন করি। অনেকটা জীবন বাঁচাতে গিয়ে বাপেরবড়ি উঠি।১ মাস থাকার পর আসলে তখন আবার চাপ দেয় গর্তাভপাতের। তখন কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে আমাকে তালাক দেয়।তখন আবার বাবার বাড়িতে যাই।পরে এখানে প্রশ্ন করাতে ১ তালাক হয়েছে বলে জানানো হয়।আমি আবার নির্লজ্জের মত বাসায় আসি যাতে সে আমাকে স্পর্শ করে। তখন সে আমাকে স্পর্শ করে।শুধু সন্তানের জন্য এসব করি।আমার বাবা-মা অনেক আগেই চেয়েছিলেন আমাকে নিয়ে আসতে।কিন্তু আমি চাইনি ডিভোর্স।
এরপর সে বাসায় কোনো বাজার-সদাই করে না।না খেয়ে থেকে আমি অনেক অসুস্থ হয়ে যাই।তারপর আবার চলে যাই।সে চাইত যাতে আমি চলে যাই বাবার বাসায়। আমার বাবা ভাই চিকিৎসাসহ, সকল ভরণপোষণ দেয়।আমার চিকিৎসায় অনেক টাকা খরচ হয়েছিল। কারন আমার জটিল প্রেগন্যন্সি ছিল।।কি যে লজ্জার ছিল সেই দিনগুলো।কারন আমি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট করা একটা মেয়ে হয়ে বাবার উপর এই অর্থনৈতিক চাপ আমি নিতে পারছিলাম না।এমনিতেই চাকরি করব না বলে তাদের সব স্বপ্ন শেষ করেছি।এদিকে আমার স্বামী একটা টাকাও খরচ করে না,বরং কোনো খোঁজই নেয় না।কিন্তু বাচ্চা হওয়ার সময় আসে।এরপরও বাবার বাড়িতে ১ বছর থাকতে হয়েছিল মেয়েকে নিয়ে। তখনও নামমাত্র খরচ দিত।

এখন আমার মেয়ের বয়স ১.৫ বছর। আমি আবার হয়ত প্রগন্যান্ট ১/১.৫ মাসের।শুনেই আমার স্বামী আমার সাথে খুবই দুর্ব্যবহার করে।মানে সে চায় না।আমিও চাচ্ছি না। কারণ আমার মেয়েটা এখনও ব্রস্টফিড করে, ১.৫ বছর আগেই আমার সিজার হয়।সিজারের পর থেকে আমি এখনও সুস্থ না।ডিপ্রেশনে আমার মন একদমই ভালো না।মানে আমি নিজেই শারীরিক ও মানসিকভাবে খুবই বিদধস্ত।এদিকে আবার যদি সে এমন করে আমি নিতে পারব না। বাবা ভাইর উপর আর বোঝা হতে পারব না।কারন তারাও আর্থিকভাবে বেশি ভালো নেই।আর এটা আমার জন্য লজ্জাজনক হবে।তাছাড়া তারা আবারও সব মেনে নিবে কিনা সেটাও জানি না।

তবে আল্লাহ দিলে আমি তা নিতে বাধ্য, যতই ওজর থাকুক। কিন্তু এবারও যদি আমার স্বামী আমাকে গর্ভপাত করতে চাপ দেয় তখন আমি কি করব? আমিও চাচ্ছি তাতে রাজি হব,আর তাকে ডিভোর্স দিব ইনশাআল্লাহ।
আমাকে পরামর্শ দিন প্লিজ।এ অবস্থায় এ পাপ করা যাবে কি না।আমি আসলে খুবই ডিস্টার্ব। তাই গুছিয়ে লিখতে পারিনি।

1 Answer

0 votes
by (59,400 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/53468/  নং ফাতওয়াতে আমরা বলেছি যে,

শরীয়তের বিধান হলো  যদি মহিলা অত্যাধিক দুর্বল হয়, যার কারণে গর্ভধারণ তার জন্য আশঙ্কাজনক হয় এবং গর্ভধারণের মেয়াদ চার মাসের কম হয়। তাহলে অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক গর্ভপাত বৈধ হবে। মেয়াদ চার মাসের অধিক হলে কোনোভাবেই বৈধ হবেনা।


খাদ্য, চিকিৎসা, বাসস্থান ইত্যাদির অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে, দৈহিক সৌন্দর্য বা ফিগার ঠিক রাখার উদ্দেশ্যে , কন্যাসন্তান জন্ম নেয়ার ভয়ে (যাতে পরবর্তীতে এদের বিয়ে শাদীর ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়),অধিক সন্তান নেয়াকে লজ্জার বিষয় মনে করে গর্ভপাত বিশেষত অভাবের কারণে সংসারকে সচ্ছল করার নিয়তে গর্ভপাত করলে আল্লাহর উপর বিশ্বাস ও ঈমান নষ্ট হয়ে যাবে। কেননা রিজিকের মালিক আল্লাহ।


আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন,

ولا تقتلوا أولادكم خشية إملاق، نحن نرزقهم وإيّاكم إنّ قتلهم كان خطأ كبيراً.

দারিদ্রতার ভয়ে তোমরা তোমাদের সন্তানকে হত্যা কর না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই খাদ্য প্রদান করে থাকি।নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মহাপাপ…’’(সূরা ইসরা, আয়াত-৩১)


অন্যত্র তিনি বলেন, الشَّيْطَانُ يَعِدُكُمُ الْفَقْرَশয়তান তোমাদের অভাবের ওয়াদা দেয়।” (সূরা আল-বাক্বারা)


আধুনিক যুগে ভ্রুণহত্যা জাহেলি যুগে কন্যাসন্তানকে জীবন্ত সমাধিস্থ করার নামান্তর। তখন বাবা নিজ মেয়েকে গর্তে পুঁতে ফেলত; আর এখন আধুনিক যন্ত্রপাতি দ্বারা মায়ের পেটেই শিশুকে মেরে ফেলা হয়। এ দুই হত্যার মধ্যে বাহ্যত কোনো তফাৎ নেই। এজন্য রাসুলুল্লাহ (সা.) ভ্রুণহত্যাকে ‘গুপ্তহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘স্মরণ কর ওই দিনকে, যেদিন জীবন্ত সমাধিস্থ নিষ্পাপ বাচ্চাকে জিজ্ঞেস করা হবে, তোমাকে কোন অপরাধের কারণে হত্যা করা হয়েছে?’ (সূরা তাকয়ির :৮)।


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন!

চার মাসের পূর্বে বিশেষ কিছু কারণে শরীয়ত গর্ভপাতকে অনুমোদন প্রদান করে থাকে।


(ক) বর্তমানে কোলে দুধের একটি শিশু রয়েছে, অপরদিকে উক্ত মহিলার গর্ভাশয়ে নতুন সন্তানও উৎপাদিত হচ্ছে। গর্ভের দরুন দুধ একেবারে শুকিয়ে গেছে।অপরদিকে উক্ত সন্তানকে অন্যকোনো উপায়ে লালনপালন করা যাচ্ছেনা। মায়ের দুধ ব্যতীত অন্যকিছুতে সে মূখই দিচ্ছে না। এমতাবস্থায় চারমাস হয়নি এমন গর্ভকে গর্ভপাত করা বৈধ রয়েছে।


(খ) কোনো মুসলমান বিজ্ঞ ডাক্তার উক্ত গর্ভবতী মহিলাকে পরিদর্শন করে বলে যে, গর্ভপাত না করলে মহিলার জান বা কোনো অঙ্গ বিনাশের আশঙ্কা রয়েছে।


আরো জানুনঃ

https://ifatwa.info/4441/

https://ifatwa.info/446/

https://ifatwa.info/12941/


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...