আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
54 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
আমার প্রশ্ন হচ্ছে-

১)আমার কোনো আত্মীয় বা অন্য কেউ যদি আমার কাছে এসে আমার মা বাবা সম্পর্কে অভিযোগ করে,বিচার দেয়,

অথবা কেউ যদি আমার মা বাবাকে অসম্মান করে,অপমান করে,তাহলে তাদের সাথে কীভাবে আচরণ করা উচিত?

অথচ তাদের মা বাবাকে নিয়ে খারাপ কথা তারা সহ্য করেনা।

আমার এরকম পরিস্থিতিতে কি বলা উচিত?কি জবাব দেয়া উচিত? আমার মা বাবাকে নিয়ে তাদের অভিযোগ মিথ্যে, এটাতে যদি আমি শিউর না হই তাহলে কি বলবো? আমি যদি চুপ থাকি তাহলে এতে কি আমি আমার মা বাবাকে অপমানিত হতে দিলাম?কারণ চুপ থাকলে মানুষ মনে করে আমার মা বাবা খারাপ তাই আমি জবাব না দিয়ে চুপ আছি,অথচ আমি কি বলবো বুঝতে না পেরে চুপ থাকলাম।

আমি বড় দ্বিধায় আছি আমাকে জানান প্লিজ আমার করণীয় কী এরকম পরিস্থিতিতে?

২)আত্মসম্মান কি?কেউ আমাকে খারাপ কিছু বললে চুপ থাকা কি অনুচিত?সঠিক ভুল কথা বলার কনফিডেন্স যদি না থাকে তাহলে কি চুপ থাকবো?

আমি বুঝতে পারিনা কখন কীসে কেমন উত্তর দেয়া উচিত,আমি কি সবসময় চুপ থাকাকে বেছে নিবো?

৩)কারো থেকে কষ্ট পেলে আমি যদি অন্য কাউকে গিয়ে তার সম্পর্কে অভিযোগ শোনাই,কিন্তু তাকে সেই মানুষ চিনেওনা।তাহলে কি গীবত হয়েছে?

যদি আমার বন্ধুকে বলি আমার কোনো আত্মীয় নিয়ে নেগেটিভ কথা কিন্তু আমার বন্ধু সেই আত্মীয়কে চেনেনা,এতে গীবত হবে?

৪) মানুষের সাথে আমি কথায় পেরে উঠতে পারিনা,তাদের লজিকের কাছে নিজের সঠিক টা নিয়েও সন্দেহ হয়।

কারো সাথে গোছিয়ে কথাও বলতে পারিনা।এগুলোর জন্য

মানসিক ভাবে অনেক সমস্যা হয়। হীনমন্যতায় ভোগি।

অতিরিক্ত সন্দেহ কীভাবে দূর করবো?

৫)এখন যা বলেছি এতে কি আত্মীয়দের নিয়ে গীবত হয়েছে?

৬)আত্মীয় কেউ জাদু করে জানলে তাদের সাথে কি আচরণ করা উচিত?

1 Answer

0 votes
by (547,020 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ 

اِدۡفَعۡ بِالَّتِیۡ ہِیَ اَحۡسَنُ السَّیِّئَۃَ ؕ نَحۡنُ اَعۡلَمُ بِمَا یَصِفُوۡنَ ﴿۹۶﴾ 
মন্দের মুকাবিলা করুন যা উত্তম তা দ্বারা; তারা (আমাকে) যে গুণে গুণান্বিত করে আমরা সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবগত।
(সূরা মুমিনূন : ৯৬)

এই আয়াতের অর্থ মুহাদ্দিসিনে কেরামগন এইভাবেও করেছেনঃ
‘কেহ যদি তোমার সহিত অন্যায় ব্যবহার করে তুমি সদ্ব্যবহার দ্বারা তাহার প্রতিশোধ লও, তাহা হইলে যাহার সহিত তোমার শত্রুতা আছে সে তোমার পরম বন্ধু হইবে’। 

এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে,

অর্থাৎ আপনি মন্দকে উত্তম দ্বারা, যুলুমকে ইনসাফ দ্বারা এবং নির্দয়তাকে দয়া দ্বারা প্রতিহত করুন। এটা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রদত্ত উত্তম চরিত্রের শিক্ষা, যা মুসলিমদের পারস্পরিক কাজ কারবারে সর্বদাই প্রচলিত আছে। 

অন্য আয়াতে আল্লাহ্ তায়ালা বলেন, 
মন্দ প্রতিহত করুন তা দ্বারা যা উৎকৃষ্ট; ফলে আপনার ও যার মধ্যে শক্ৰতা আছে, সে হয়ে যাবে অন্তরঙ্গ বন্ধুর মত। আর এটি শুধু তারাই প্ৰাপ্ত হবে যারা ধৈর্যশীল। আর এর অধিকারী তারাই হবে কেবল যারা মহাভাগ্যবান।” 
[সূরা ফুসসিলাত: ৩৪–৩৫] 

আরো জানুনঃ- 

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
মাযলুম যালিমের কাছ থেকে সীমালঙ্ঘন ব্যতীত প্রতিশোধগ্রহণ করতে পারবে বা প্রতিশোধের অপেক্ষায় থাকতে পারবে এতে তার কোন প্রকার গুনাহ হবেনা।এ সম্পর্কে আরোও শুনুন আল্লাহর তা'আলার বাণী.....

ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳﻦَ ﺇِﺫَﺍ ﺃَﺻَﺎﺑَﻬُﻢُ ﺍﻟْﺒَﻐْﻲُ ﻫُﻢْ ﻳَﻨﺘَﺼِﺮُﻭﻥَ

যারা আক্রান্ত হলে প্রতিশোধ গ্রহণ করে।(৪২সূরা আশ শূরা-৩৯)
ﻭَﺟَﺰَﺍﺀ ﺳَﻴِّﺌَﺔٍ ﺳَﻴِّﺌَﺔٌ ﻣِّﺜْﻠُﻬَﺎ ﻓَﻤَﻦْ ﻋَﻔَﺎ ﻭَﺃَﺻْﻠَﺢَ ﻓَﺄَﺟْﺮُﻩُ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﺇِﻧَّﻪُ ﻟَﺎ ﻳُﺤِﺐُّ ﺍﻟﻈَّﺎﻟِﻤِﻴﻦَ

আর মন্দের প্রতিফল তো অনুরূপ মন্দই। যে ক্ষমা করে ও আপোষ করে তার পুরস্কার আল্লাহর কাছে রয়েছে; নিশ্চয় তিনি অত্যাচারীদেরকে পছন্দ করেন নাই।(৪২/৪০)

ﻭَﻟَﻤَﻦِ ﺍﻧْﺘَﺼَﺮَ ﺑَﻌْﺪَ ﻇُﻠْﻤِﻪِ ﻓَﺄُﻭْﻟﺌِﻚَ ﻣَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢ ﻣِّﻦ ﺳَﺒِﻴْﻞٍ ، ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﺍﻟﺴَّﺒِﻴﻞُ ﻋَﻠَﻰْ ﺍﻟّﺬِﻳْﻦَ ﻳَﻈْﻠِﻤُﻮﻥَ ﺍﻟﻨَّﺎﺱَ ﻭَﻳَﺒْﻐُﻮﻥَ ﻓِﻲْ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﺍﻟْﺤَﻖّ ، ﺃُﻭْﻟﺌِﻚَ ﻟَﻬُﻢ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴﻢٌ

নিশ্চয় যে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই।
অভিযোগ কেবল তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার চালায় এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। তাদের জন্যে রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।(৪২/৪১-৪২)

আরো জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
(০১)
এক্ষেত্রে প্রথমে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে অনুসন্ধান করবেন।

অভিযোগ অসত্য বলে প্রমাণিত হলে সেক্ষেত্রে আপনি প্রতিবাদ করতে পারেন।

(০২)
আত্মসম্মান হল নিজের মূল্য, ক্ষমতা বা নৈতিকতার প্রতি আস্থা।

★প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনি চাইলে চুপ থাকতে পারেন,চাইলে প্রতিবাদও করতে পারেন,বিষয়টি একান্তই আপনার ব্যাক্তিগত ব্যাপার।

(০৩)
এক্ষেত্রে সে আপনার যে ধরনের আত্মীয়,সেই বিষয়টি ও তার নাম ঠিকানা সম্পূর্ণ গোপন রাখলে গীবতের গুনাহ হবেনা।

(০৪)
বিষয়টিকে নিয়ে কোনো গুরুত্ব দিবেননা।
পাশ কাটিয়ে চলবেন।

(০৫)
না,এতে গীবত হয়নি।

(০৬)
এক্ষেত্রেও সম্পর্ক ছিন্ন করা যাবেনা,কমপক্ষে সালাম চালিয়ে যাবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...