ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া
বারাকাতুহু
بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে শুধু
সুরা ফাতেহা পাঠ করা সুন্নাত। সুরা ফাতেহার সাথে অন্য সুরা মিলাবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ،
عَنْ أَبِيهِ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْرَأُ
فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ، وَسُورَتَيْنِ، وَفِي
الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ،
وَيُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مَا لاَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ
الثَّانِيَةِ، وَهَكَذَا فِي العَصْرِ وَهَكَذَا فِي الصُّبْحِ» (صحيح البخارى،
رقم-776)
আবূ কাতাদাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’রাক‘আতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা ও দু’টি সূরাহ্ পড়তেন এবং শেষ
দু’রাক‘আতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেন, আর তিনি প্রথম রাক‘আতে
যত দীর্ঘ করতেন,
দ্বিতীয়
রাক‘আতে তত দীর্ঘ করতেন না। ‘আসরে এবং ফাজরেও এ রকম করতেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৭৬]
جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، قَالَ: قَالَ
عُمَرُ لِسَعْدٍ: لَقَدْ شَكَوْكَ فِي كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى الصَّلاَةِ، قَالَ:
«أَمَّا أَنَا، فَأَمُدُّ فِي الأُولَيَيْنِ وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ، وَلاَ
آلُو مَا اقْتَدَيْتُ بِهِ مِنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ
وَسَلَّمَ» قَالَ: صَدَقْتَ ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ أَوْ ظَنِّي بِكَ
জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘উমার (রাযি.) সা‘দ (রাযি.)-কে
বললেন, আপনার বিরুদ্ধে তারা
(কূফাবাসীরা) সর্ব বিষয়ে অভিযোগ করেছে, এমনকি সালাত সম্পর্কেও। সা‘দ (রাযি.)
বললেন, আমি প্রথম দু’রাক‘আতে
কিরাআত দীর্ঘ করে থাকি এবং শেষের দু’ রাক‘আতে তা সংক্ষেপ করি। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে যেমন সালাত আদায় করেছি, তেমনই সালাত আদায়ের ব্যাপারে
আমি ত্রুটি করিনি। ‘উমার (রাযি.) বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন, আপনার ব্যাপারে ধারণা
এমনই, কিংবা (তিনি বলেছিলেন)
আপনার সম্পর্কে আমার এ রকমই ধারণা। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৭০]
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি
ভাই/বোন!
১. ৪ রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে সূরা ফাতেহার সাথে বিসমিল্লাহ পড়লে বা অন্য সূরা মিলালে নামাজ
হবে। তবে যেহেতু উক্ত রাকাত গুলো সুরা না মিলানোই সুন্নাত ছিলো, তাই ভবিষ্যতে এরকমটি করা যাবে না । তবে উক্ত ভুলের কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।
২. নামাযের মধ্যে পঠিত সূরার সমূহের ধারাবাহিকতা (কুরআনে
বিদ্যমান বিন্যাস) রক্ষা করা ওয়াজিব। তবে কোনো কারণে যদি উক্ত ওয়াজিব তরক হয়ে যায় তবে
সেজাদায়ে সাহু আসবে না, এবং নামাযকে দোহরাতেও হবে না। বরং নামায আদায় হয়ে
যাবে। (কিতাবুল ফাতাওয়া-২/২০৩)
ইচ্ছাকৃতভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে
ক্বেরাত পড়া মাকরুহ। তবে অনিচ্ছায় হলে মাকরুহ হবে না।
(ক) এই হল ফরয নামাযে ধারাবাহিকতা রক্ষা করার বিধান।
তবে নফল নামাযে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরী কোনো বিষয় নয়।
(খ) উক্ত ধারাবাহিকতা বলতে এ রকম নয় যে, সূরা ফীল পড়লে পরের রাকাতে তাকে সূরা কুরাইশই পড়তে হবে। বরং ধারাবাহিকতা বলতে বুঝায়
কুরআনুল কারীমে যেই সূরা আগে আছে সেটাকে আগের রাকাতে তেলাওয়াত করা। সুতরাং প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে প্রথম রাকাতে সূরা ফীল তেলাওয়াত করলে পরের রাকাতে সূরা ইখলাস পড়া যাবে। এতে
কোনো সমস্যা নেই।
৩. জ্বী না হানাফি মাজহাব মতে সাহু সিজদা
করার উত্তম পদ্ধতি হলো, নামাজের শেষ রাকাতে তাশাহুদ পড়ে শুধু ডানদিকে সালাম
ফিরানোর পর তাকবির বলে যথারীতি দুটি সিজদা আদায় করবে। এরপর বসে পুনরায় তাশাহুদ, দরুদ ও দোয়া পাঠ করে দুই সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করবে।
(ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৪/১৭০)