আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
52 views
in সালাত(Prayer) by (6 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওবারকাতুহ

১.ফরজ সালাত এ ৩য় বা চতুর্থ রাকাতে সূরা ফাতিহার পর বিসমিল্লাহ / বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম  বললে কি অন্য সূরা পড়ব নাকি বিসমিল্লাহ বলেই থেমে যেয়ে এর জন্য সাহু সিজদাহ্ দিতে হবে??
২.সালাত এ সুরা গুলা ধারাবাহিকতায় না পড়লে কি গুনাহ হয়?  যেমন, সুরা কাউছার এর পর সুরা ইখলাছ পড়লে
৩.সাহু সিজদাহ এর ক্ষেত্রে একবারে দুদিক সালাম ফিরে তারপর সাহু এর ২ টা সিজদাহ দিলে কি উত্তম হবে না?

1 Answer

0 votes
by (54,210 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

চার রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে শুধু সুরা ফাতেহা পাঠ করা সুন্নাত। সুরা ফাতেহার সাথে অন্য সুরা মিলাবেনা।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ، وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ، وَيُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مَا لاَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ، وَهَكَذَا فِي العَصْرِ وَهَكَذَا فِي الصُّبْحِ» (صحيح البخارى، رقم-776)

আবূ কাতাদাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’রাক‘আতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা ও দু’টি সূরাহ্ পড়তেন এবং শেষ দু’রাক‘আতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেন, আর তিনি প্রথম রাক‘আতে যত দীর্ঘ করতেন, দ্বিতীয় রাক‘আতে তত দীর্ঘ করতেন না। ‘আসরে এবং ফাজরেও এ রকম করতেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৭৬]

جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، قَالَ: قَالَ عُمَرُ لِسَعْدٍ: لَقَدْ شَكَوْكَ فِي كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى الصَّلاَةِ، قَالَ: «أَمَّا أَنَا، فَأَمُدُّ فِي الأُولَيَيْنِ وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ، وَلاَ آلُو مَا اقْتَدَيْتُ بِهِ مِنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» قَالَ: صَدَقْتَ ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ أَوْ ظَنِّي بِكَ

জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘উমার (রাযি.) সা‘দ (রাযি.)-কে বললেন, আপনার বিরুদ্ধে তারা (কূফাবাসীরা) সর্ব বিষয়ে অভিযোগ করেছে, এমনকি সালাত সম্পর্কেও। সা‘দ (রাযি.) বললেন, আমি প্রথম দু’রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করে থাকি এবং শেষের দু’ রাক‘আতে তা সংক্ষেপ করি। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে যেমন সালাত আদায় করেছি, তেমনই সালাত আদায়ের ব্যাপারে আমি ত্রুটি করিনি। ‘উমার (রাযি.) বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন, আপনার ব্যাপারে ধারণা এমনই, কিংবা (তিনি বলেছিলেন) আপনার সম্পর্কে আমার এ রকমই ধারণা। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৭০]

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

 ১. ৪ রাকাত বিশিষ্ট ফরজ নামাজের শেষ দুই রাকাতে সূরা ফাতেহার সাথে  বিসমিল্লাহ পড়লে বা অন্য সূরা মিলালে নামাজ হবে। তবে যেহেতু উক্ত রাকাত গুলো সুরা না মিলানোই সুন্নাত ছিলো, তাই ভবিষ্যতে এরকমটি করা যাবে না । তবে  উক্ত ভুলের কারণে সাহু সিজদা ওয়াজিব হবে না।

২. নামাযের মধ্যে পঠিত সূরার সমূহের ধারাবাহিকতা (কুরআনে বিদ্যমান বিন্যাস) রক্ষা করা ওয়াজিব। তবে কোনো কারণে যদি উক্ত ওয়াজিব তরক হয়ে যায় তবে সেজাদায়ে সাহু আসবে না, এবং নামাযকে দোহরাতেও হবে না। বরং নামায আদায় হয়ে যাবে। (কিতাবুল ফাতাওয়া-২/২০৩)

ইচ্ছাকৃতভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা না করে ক্বেরাত পড়া মাকরুহ। তবে অনিচ্ছায় হলে মাকরুহ হবে না।  

 (ক) এই হল ফরয নামাযে ধারাবাহিকতা রক্ষা করার বিধান। তবে নফল নামাযে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা জরুরী কোনো বিষয় নয়।

(খ) উক্ত ধারাবাহিকতা বলতে এ রকম নয় যে, সূরা ফীল পড়লে পরের রাকাতে তাকে সূরা কুরাইশই পড়তে হবে। বরং ধারাবাহিকতা বলতে বুঝায় কুরআনুল কারীমে যেই সূরা আগে আছে সেটাকে আগের রাকাতে তেলাওয়াত করা। সুতরাং প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে প্রথম রাকাতে সূরা ফীল তেলাওয়াত করলে পরের রাকাতে সূরা ইখলাস পড়া যাবে। এতে কোনো সমস্যা নেই।

৩. জ্বী না হানাফি মাজহাব মতে সাহু সিজদা করার উত্তম পদ্ধতি হলো, নামাজের শেষ রাকাতে তাশাহুদ পড়ে শুধু ডানদিকে সালাম ফিরানোর পর তাকবির বলে যথারীতি দুটি সিজদা আদায় করবে। এরপর বসে পুনরায় তাশাহুদ, দরুদ ও  দোয়া পাঠ করে দুই সালামের মাধ্যমে নামাজ শেষ করবে। (ফাতাওয়ায়ে ফকীহুল মিল্লাত : ৪/১৭০)


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...