জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
(০১)
সামুরাহ ইবনু জুনদুব রযিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, নবী ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার স্বপ্নের বর্ণনাতে বলেন, ‘আমরা এক বাগানে আসলাম। সেই বাগানের মাঝে অনেক উঁচু দীর্ঘকায় একজন পুরুষ রয়েছেন, যার মাথা যেন আমি দেখতেই পাচ্ছি না। এমনিভাবে তার চারপাশে এত বিপুল সংখ্যক বালক-বালিকা দেখলাম যে, এত অধিক আর কখনো আমি দেখিনি। আমি বললাম, উনি কে? এরা কারা? তাকে বলা হলো, যে দীর্ঘকায় ব্যক্তি বাগানে ছিলেন, তিনি হলেন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম। আর তাঁর আশেপাশের বালক-বালিকারা হলো ঐসব শিশু যারা ফিতরাতের (স্বভাবধর্মের) ওপর মৃত্যুবরণ করেছে’। রাবী বলেন, তখন কিছু ছাহাবী জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসূল ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও কি? তখন রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘হ্যাঁ, মুশরিকদের শিশু সন্তানরাও’ (ছহীহ বুখারী, হা/৭০৪৭)।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই বোন,
এই বিষয়ে উলামায়ে কেরামদের মাঝে মতবিরোধ রয়েছে।
ইমাম আবু হানিফা রহঃ এই বিষয়ে তাওক্কুফ করেছেন।
জান্নাত জাহান্নাম কোনো মতের দিকে যাননি।
,
وقال الإمام النووي : أجمع من يعتد به من علماء المسلمين على أن من مات من أطفال المسلمين فهو من أهل الجنة ؛ لأنه ليس مكلفا . أ.هـ " شرح مسلم " (16 / 207) .
সারমর্মঃ
ইমাম নবাবী রহঃ বলেন যে তারা মুসলমান,এই ব্যাপারে উলামায়ে কেরামগন একমত হয়েছেন।
وقال القرطبي : إن قول أنهم في الجنة هو قول الأكثر ، وقال : وقد أنكر بعض العلماء الخلاف فيهم. " التذكرة " (2/328) সারমর্মঃ
তারা জান্নাতে যাবে,এটিই বেশিরভাগ উলামায়ে কেরামদের মত।
মা'আরেফুল কোরআন ৫/৪৫৭ এবং ফতোয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ ১২/২১১ তে আছে যে
কুরআন শরীফে এসেছেঃ
وَلَا تَزِرُ وَازِرَةٌ وِزْرَ أُخْرَىٰ ۚ
আল্লাহ তায়ালা কাহারো গুনাহের বোঝা অন্যের উপর চাপিয়ে দিবেননা।
(সুরা ফাতির ১৮)
সুতরাং কাফের মুশরিকদের নাবালেগ সন্তান যদি বালেগ হওয়ার পূর্বেই মারা যায়,তাহলে তাদের শাস্তি হবেনা।
কেননা মা বাবার কুফুরির কারনে সে শাস্তির উপযুক্ত হবেনা।
বিস্তারিত জানুনঃ-
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত শিশু শহীদ হবেনা।
তার ব্যাপারে জান্নাত জাহান্নাম কোনো মতের দিকে না যাওয়াই ভালো।
(০২)
বিষয়টি সম্পর্কে ফাতওয়ার কিতাবে খুজে কোনো তথ্য পাইনি।
(০৩)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
حَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا وَكِيعٌ، عَنْ أَبِي الْعُمَيْسِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ جَابِرِ بْنِ عَتِيكٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّهُ مَرِضَ فَأَتَاهُ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم يَعُودُهُ فَقَالَ قَائِلٌ مِنْ أَهْلِهِ إِنْ كُنَّا لَنَرْجُو أَنْ تَكُونَ وَفَاتُهُ قَتْلَ شَهَادَةٍ فِي سَبِيلِ اللَّهِ . فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " إِنَّ شُهَدَاءَ أُمَّتِي إِذًا لَقَلِيلٌ الْقَتْلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ شَهَادَةٌ وَالْمَطْعُونُ شَهَادَةٌ وَالْمَرْأَةُ تَمُوتُ بِجُمْعٍ شَهَادَةٌ - يَعْنِي الْحَامِلَ - وَالْغَرِقُ وَالْحَرِقُ وَالْمَجْنُوبُ - يَعْنِي ذَاتَ الْجَنْبِ - شَهَادَةٌ " .
জাবির ইবনে আতীক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে দেখতে আসেন। জাবির (রাঃ) এর পরিবারের কেউ বললো, আমরা আশা করতাম যে, সে আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হয়ে মৃত্যুবরণ করবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেনঃ তাহলে আমার উম্মাতের শহীদের সংখ্যা তো খুব কম হয়ে যাবে। আল্লাহর পথে নিহত হলে শহীদ, মহামারীতে নিহত হলে শহীদ, যে মহিলা গর্ভাবস্থায় মারা যায় সে শহীদ এবং পানিতে ডুবে, আগুনে পুড়ে ও ক্ষয়রোগে মৃত্যুবরণকারী শহীদ।
(ইবনে মাজাহ ২৮০৩,নাসায়ী ১৮৪৬, ৩১৯৪, আবূ দাউদ ৩১১১, আহমাদ ২৩২৪১, মুয়াত্তা মালেক ৫৫২, আল-আহকাম ৩৯-৪০ নং পৃষ্ঠা, আত-তালীকুর রাগীব ২/২০২।)
★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত কথাটি সঠিক নয়।
বরং হাদীসে এসেছে,যে মহিলা গর্ভাবস্থায় মারা যায় সে শহীদ।
(০৪)
যারা প্রকৃত পক্ষে হুকমি শহীদ হবে,আল্লাহ তায়ালা তাদের গুনাহ মাফ করে দিবেন,তাই তাদের আযাব হবেনা।
(০৫)
আপনার নামাজ হয়েছে।