আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
135 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (15 points)
আমি আমার বাবার সাথে একদম ছোট থেকে একসাথে ঘুমাতাম। ক্লাস ৭/৮এ পড়ি তখনও। আমার সাথে আমার আপু ও থাকত। পরে জানতে পারি থাকতে বাধ্য হত আব্বুর জন্য। আব্বুর সাথে আম্মুর সম্পর্ক তেমন ভাল ছিল না। তারা ম্যাক্সিমাম সময় বিছানা আলাদা থাকত। যাই হোক, ঘটনা প্রায় ১৩/১৪বছর আগের। মাঝে মাঝে রাতে পানির পিপাসা/বাথরুমে যাওয়ার প্রয়োজন হলে ঘুম ভেঙে গেলে খেয়াল করতাম আব্বুর হাত আমার আপুর গায়ে ।কখনো পাজামার সরাসরি ভিতরে। ডিমলাইটের আলোয় বুঝতে পারতাম। পানি খাওয়ার জন্য উঠে আলো জ্বালালে স্পষ্ট দেখেছি আপুর পাজামার ফিতে খোলা। একরাতে ডিমলাইটের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পাই আপুর গায়ের উপর উঠে ঘষছে পাজামার উপরই। (আমাকে মাফ করবেন এভাবে সরাসরি লিখার জন্য) আপুর ঘুম এতটাই ভারী যে সে হয়ত সবসময় বুঝতে পারত না। কিন্তু একেবারে যে জানত না তা কিন্তু না।আব্বু আগে আপুর ঘুমের সুযোগ নিয়ে এসব করলেও পরে যখন বুঝে যে আপু ভয়ে-লজ্জায় কাউকে কিছু বলছে না, তখন থেকে তিনি আরো সাহস পেয়ে যান। এবং আপু জেগে থাকলেও সু্যোগ নিতে ছাড়তেন না। আপু রীতিমতো যুদ্ধ করত তার সাথে। কিন্তু সরাসরি শারীরিক সম্পর্ক হয়নি। তবু সে লজ্জায়,ভয়ে কাউকে বলত না। আব্বুর কথার উপর কারো কথা বলার সাহস নেই তাই বাধ্য হয়ে রাতে তার সাথে থাকতে হত। আম্মুও কখনো সন্দেহ করেনি। কারণ তাদের নিজেদের মধ্যের সম্পর্ক ঠিক থাকত না। তাই আম্মু ভাবত মেয়েদের নিয়ে বাবা ঘুমাচ্ছে তাই সমস্যা নাই। এদিকে এরকম অবস্থা কতদিন ছিল বা কয় বছর ছিল আমার মনে নাই। কারণ আপু আমার থেকে বয়সে অনেক বড় হওয়ায় আমাকে কখনো বলেনি। এদিকে আমিও সব বুঝতে পেরেও চুপ ছিলাম ভয়ে আর লজ্জায়। কাকে কিভাবে বলব বুঝতে পারিনি।এসব যখন স্বচক্ষে দেখি আমি তখন ক্লাস ৭/৮ এ পড়ি। কাউকে বলতে না পারলেও আমি আস্তে আস্তে আব্বুর সাথে থাকা কমিয়ে দিতে থাকি। আপুও পড়ালেখার জন্য শহরে চলে যায় খুব একটা আসত না আব্বুর হাতে এরকম হেনস্তা হওয়ার ভয়ে। আমি থাকা কমিয়ে দেয়াতে আপু বুঝতে পারে আমি এসব জেনে গেছি তাই একদিন আমাকে সব শেয়ার করে। এবং সিদ্ধান্ত নেয় আম্মুকে সব জানাবে। যেন আপুর মত আমার সাথেও এসব কখনো না করে। এরপর আম্মুকে জানায় সব, আব্বুর সামনেই। আম্মু আব্বুকে অনেক চিল্লাচিল্লি করে। আব্বুর কিছু বলার মত মুখ ছিলনা তাই চুপ ছিল। এরপর থেকে আপুর সাথে আর এসব হয়নি আলহামদুলিল্লাহ,  আমিও বেচে যাই। আপুর সাথে বেশ অনেক বছর আব্বু কথা বলত না,এখন অবশ্য কথা বলে, আর ১০টা বাবা-মেয়ের মত সম্পর্ক। আপুর মাফ করে দিসে আব্বুকে। যদিও তিনি কখনো মাফ চাননি।
আমার কথা হচ্ছে আব্বু-আম্মুর সম্পর্ক কি সেই ১৩/,১৪বছর আগেই শেষ হয়ে গেছিল?
যদি শেষ হয়ে গিয়ে থাকে তাহলে উনারা যে এতবছর একসাথেই ছিল,যিনার গুনাহ হয়েছে, সেটার কাফফারা কি হবে?

৫/৬মাস ধরে বড় ধরনের ঝগড়া হয়ে আব্বু-আম্মু কেউ কারো সাথে কথা বলেনা। মুখও দেখে না। আলাদা রুমে থাকে। একসাথে থাকার আর সম্ভাবনা নেই। এভাবে কি উনারা বাকি জীবন পার করে দিতে পারবেন? যেহেতু এখন ডিভোর্স হয়ে আলাদা হতে গেলে সমাজের মধ্যে একদম নিচু হয়ে যাবে যেহেতু সমাজে সবার কাছে উনারা সম্মানিত মানুষ।  আর আমার ভাবী জানলে সমস্যা বাড়বে আম্মু-আব্বুর এই বৃদ্ধ বয়সে ভাবী না দেখলে আর দেখার কেউ নেই। এসব জানলে উনি হয়ত ভাইয়ার থেকেই আলাদা হয়ে যাবেন। আর আম্মুরও বয়স হয়েছে, বাপের বাড়িতে বাপ,ভাই কেউ নেই যে উনার দায়িত্ব নিবে।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাবঃ- 
بسم الله الرحمن الرحيم

হাদীস শরীফে এসেছে 

أخبرنا إسماعیل بن عیاض، حدثنا سعید بن أبی عروبة، من قیس بن سعید، عن مجاهد في الرجل یفجر بالمرأة قال: إذا نظر إلی فرجها فلا یحله له أمها ولا بنتها، أخرجه محمد في الحجج أیضًا ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۲

যার সারমর্ম হলো যদি কেহ কোনো মহিলার লজ্জাস্থানের দিকে দৃষ্টিপাত করে,তাহলে সেই মহিলার মেয়ে বা তার মাকে সে কোনোদিন বিবাহ করতে পারবেনা।

ই'লাউস সুনান ১১/১৩১

أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)

যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।      

★★হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে।

শর্তগুলো হল,
১–

সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।

فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)

যার সারমর্ম হলো যদি কাপড় পরিধান অবস্থায় হয় তাহলে যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে, শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। 
তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবে।   

( যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে। ) 

অন্যথায় হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।     

২–

স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া।

পুরুষের উত্তেজনা অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।

وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)  
সারমর্মঃ
উত্তেজিত হওয়ার সীমা হলো লিঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
মহিলাদের ক্ষেত্রে কলব তথা অন্তর কেঁপে উঠা, আগে থেকেই কেঁপে উঠে থাকলে স্পর্শ করার পর কাঁপা বেড়ে যাওয়া। 

৩-
স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। 
আগে বা পরে উত্তেজিত হলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হবেনা।      

وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح : وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ، ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/108)

যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা প্রমাণিত হবে না। 

বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নের বিবরণ মতে আপনার বাবা মায়ের মাঝে হুরমতে মুসাহারাত প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে।
আজীবনের জন্য তাদের মাঝে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। 
তারা কোনো ভাবেই আর ঘর সংসার করতে পারবেনা।
একে অপরের জন্য গায়রে মাহরাম সাব্যস্ত হয়েছে।

সুতরাং তাদের আলাদা হয়ে যেতে হবে।
এভাবে আলাদা কক্ষে থাকলেও ফিতনার আশংকা থেকেই যায়,তাই তাদের আলাদা হয়েই যেতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
উনারা যে এতবছর  একসাথে ছিলেন, সেটার কাফফারা কি হবে?
by (565,890 points)
তারা খালেস দিলে মহান আল্লাহর কাছে তওবা করে নিবে।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...