আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
39 views
in যাকাত ও সদকাহ (Zakat and Charity) by (9 points)
closed by

আসলামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্ল-হ 
আমরা জানি যে  উচ্চসূরে আযান দিতে হয়।   কেননা-

মুয়াজ্জিনের আওয়াজ যে পর্যন্ত পৌছবে, কিয়ামতের দিন ঐ স্থানের সকল জ্বীন্ন, মানুষ এবং প্রতিটি বস্তু তার সাক্ষ্য প্রদান করবে।  সুনান আন-নাসায়ী (ই.ফা.) ৬৪৫।

মুয়াজ্জিনের আওয়াজের দূরত্ব পরিমাণ তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং প্রত্যেক শুষ্ক ও আদ্র জিনিস (অর্থাৎ জীবন্ত ও মৃত প্রত্যেক জিনিস) তার (ঈমানের) পক্ষে সাক্ষ্য প্রদান করবে। সুনান আন-নাসায়ী (ই.ফা.) ৬৪৬। সুনান আবূ দাউদ ৫১৫।  সুনান ইবনু মাজাহ ৭২৪।  মিশকাত ৬৬৭

মুয়াজ্জিন সেসব নামাজির সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করেন, যারা তার সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করেন।  সুনান আন-নাসায়ী (ই.ফা.) ৬৪৭


উপরোক্ত হাদিসে বলা হয়েছে মুয়াজ্জিনের আওয়াজ যতদূর পর্যন্ত যাবে ততদূর পর্যন্ত তাকে ক্ষমা করে দেয়া হবে এবং ততদূরের প্রত্যেক প্রাণী ও প্রাণহীন বস্তু কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে। আরো বলা হয়েছে মুয়াজ্জিন সেসব নামাজির সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করেন, যারা তার সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করেন।


মুয়াজ্জিন যদি খালি গলায় আজান দেন তাহলে খুব বেশিদূর যাবে না। তাই সে বেশিদূর পর্যন্ত ক্ষমা পাবে না এবং খুব অল্প প্রাণী ও প্রাণহীন বস্তু কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে।
কিন্তু যদি মুয়াজ্জিন মাইকে আজান দেন তাহলে তা খালি গলার চেয়ে কয়েকগুন বেশিদূরে পৌঁছায়। ফলে  সে বেশিদূর পর্যন্ত ক্ষমা পাবে  এবং অনেক দূরের প্রাণী ও প্রাণহীন বস্তু কিয়ামতের দিন তার পক্ষে সাক্ষ্য দিবে।

প্রশ্ন ১ : মসজিদে আজান দেয়ার এই মাইক(এবং এর সাথে আরো সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি যেমন এমপ্লিফায়ার, মাইক্রোফোন ইত্যাদি ) যদি কয়েকজন মিলে কিনে দেয় তাহলে কি তারা মুয়াজ্জিন এর আজান দেয়ার সমপরিমাণ সওয়াব পাবে ? যেহেতু নবীজি (সা.) বলেছেন, যে লোক কোন সৎকাজের পথ দেখায়, তার জন্য উক্ত কাজ সম্পাদনকারীর সমপরিমাণ সাওয়াব রয়েছে। (তিরমিজি, হাদিস : ২৬৭০-৭১)

প্রশ্ন ২:  সবাই কি আলাদা ভাবে  মুয়াজ্জিন এর সমপরিমাণ সওয়াব পাবে নাকি টাকার অনুপাতে  মুয়াজ্জিন এর সমপরিমাণ সওয়াব সকলের মাঝে ভাগ করে দেয়া হবে ? যেখানে সবাই সমপরিমাণ টাকা দেয় নি। 

প্রশ্ন ৩:  দান করার প্রতিযোগিতা যাবে কি ?
 যেমন। কোনো একটি দ্বীনের কাজে আমি মনে মনে নিয়ত করলাম যে আমি ৫ হাজার টাকা দিবো। কিন্তু কেউ একজন যখন বললো আমি ১০ হাজার টাকা দিবো, তখন তার সাথে দানের প্রতিযোগিতা করার জন্য আমি কি তার চেয়ে বেশি টাকা দান করতে পারি যদি তা লোক দেখানোর জন্য না হয় ? এভাবে দানের প্রতিযোগিতা করে বেশি সওয়াব আশা করা কি ইসলামে জায়েজ ?


প্রশ্ন ৪:  দ্বীনের কাজে উপস্থিত সকল লোকের সামনে কেউ একজন দান করতে চাইলো না এই জন্য যে লোকে তাকে দানবীর বলতে পারে , আবার হিংসাও করতে পারে; না জানি সে কত টাকার মালিক। আবার সবার সামনে না দিলে মানুষ ভাববে লোকটি কৃপণ , এমন কি  অগোচরে সমালোচনাও করতে পারে। 
এক্ষেত্রে দাতার কোনটি করা উচিত? 

closed

1 Answer

+1 vote
by (568,410 points)
selected by
 
Best answer
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
আব্দুল্লাহ ইবনু আবদুর রহমান ইবনু আবূ সাসাআ আনসারী আল-মাযিনী (রহঃ) তাঁর পিতা থেকে বর্ণনা করেন যে,
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، قَالَ أَنْبَأَنَا ابْنُ الْقَاسِمِ، عَنْ مَالِكٍ، قَالَ قَالَ حَدَّثَنِي عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي صَعْصَعَةَ الأَنْصَارِيُّ الْمَازِنِيُّ، عَنْ أَبِيهِ، أَنَّهُ أَخْبَرَهُ أَنَّ أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ لَهُ إِنِّي أَرَاكَ تُحِبُّ الْغَنَمَ وَالْبَادِيَةَ فَإِذَا كُنْتَ فِي غَنَمِكَ أَوْ بَادِيَتِكَ فَأَذَّنْتَ بِالصَّلاَةِ فَارْفَعْ صَوْتَكَ فَإِنَّهُ لاَ يَسْمَعُ مَدَى صَوْتِ الْمُؤَذِّنِ جِنٌّ وَلاَ إِنْسٌ وَلاَ شَىْءٌ إِلاَّ شَهِدَ لَهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ . قَالَ أَبُو سَعِيدٍ سَمِعْتُهُ مِنْ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم .
তিনি তাকে বলেছেন যে, আবূ সাঈদ খুদরী (রাঃ) তাকে বলেছেনঃ আমি তোমাকে দেখি তুমি বকরী চরাতে এবং ময়দানে থাকতে ভালবাসো, যখন তুমি তোমার বকরীর পালের নিকট ময়দানে থাক এবং সালাতের জন্য আযান দাও, তখন উচ্চসূরে আযান দিবে। কেননা মুয়াযযিনের আওয়াজ যে পর্যন্ত পৌছবে, কিয়ামতের দিন ঐ স্থানের সকল জ্বীন্ন, মানুষ এবং প্রতিটি বস্তু তার সাক্ষ্য প্রদান করবে। আবূ সাঈদ (রাঃ) বলেনঃ আমি এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট থেকে শুনেছি।(সুনানু নাসাঈ-৬৪৫, সহীহ বোখারী-৬০৯১)


সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
হাদীসে আজানের আওয়াজ দ্বারা সাধারণ খালি গলার আওয়াজ-ই উদ্দেশ্য। হ্যা, আল্লাহ চাইলে মাইকের আওয়াজ যতটুকু পর্যন্ত পৌছবে, ততটুকু পরিমাণ সওয়াব দিবেন।

(১) আজানের উদ্দেশ্য যেহেতু জানিয়ে দেওয়া। তাই মাইক দ্বারা আজান দেওয়া প্রশংসনীয় এবং ভালো ও উত্তম কাজ। মসজিদের মাইকের জন্য চাদা দেওয়াও সওয়াবের কাজ। তবে মাইক দাতা মুওয়াজ্জিনের সমপরিমাণ সওয়াব পাবেন না।

(২) সওয়াব হবে। যার নিয়ত যেমন তেমন সওয়াব হবে।

(৩) লোকদেখানো বা প্রতিহিংসার বশবর্তী না হয়ে অন্যর চেয়ে বেশী দান করা প্রশংসনীয় ও সওয়াবের কাজ।

(৪) লোক সমালোচনা করলেও অগোচরে দেওয়াটাই উত্তম।হ্যা, অন্যকে উৎসাহিত করার নিয়তে প্রকাশ্যেও দেওয়া যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...