عَنْ أَبِي هَارُونَ الْعَبْدِيِّ، قَالَ كُنَّا إِذَا أَتَيْنَا أَبَا سَعِيدٍ الْخُدْرِيَّ قَالَ مَرْحَبًا بِوَصِيَّةِ رَسُولِ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ . إِنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ لَنَا " إِنَّ النَّاسَ لَكُمْ تَبَعٌ وَإِنَّهُمْ سَيَأْتُونَكُمْ مِنْ أَقْطَارِ الأَرْضِ يَتَفَقَّهُونَ فِي الدِّينِ فَإِذَا جَاءُوكُمْ فَاسْتَوْصُوا بِهِمْ خَيْرًا "
তিনি বলেন, আমরা আবূ সাঈদ আল খুদরী (রাঃ) -এর কাছে এলেই তিনি বলতেনঃ তোমাদের জন্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর ওসিয়ত অনুযায়ী স্বাগতম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের বলতেনঃ লোকেরা অবশ্যই তোমাদের অনুগামী। অচিরেই পৃথিবীর দিকদিগন্ত থেকে লোকেরা তোমাদের নিকট দ্বীনি ইলম অর্জনের জন্য আসবে। তারা যখন তোমাদের নিকট আসবে,তখন তোমরা তাদেরকে ভালো ও উত্তম উপদেশ দিবে।(সুনানু তিরমিযি-২৪৯,তিরমিযী ২৬৫০-৫১, মুওয়াত্ত্বা মালিক ২৪৭।)
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
অতীব জরুরী ও সাধারণ মাস'আলা মাসাঈল আয়ত্বে না থাকার কারণে দৈনন্দিন জীবনে দ্বীন-ইসলাম পালন করতে, যে সমস্ত দ্বীনি ভাই-বোন থমকে দাড়ান,এবং যাদের দ্বীনি ইলম অর্জনের কাছাকাছি কোনো নির্ভরযোগ্য মাধ্যম নেই, মূলত তাদেরকে দিকনির্দেশনা দিতেই আমাদের এ ক্ষুদ্র প্রয়াস .....
মুহতারাম/মুহতারামাহ!
দ্বীনের পরিধি অনেক ব্যাপক, সকল বিষয়ে আলোচনা করা বা দিকনির্দেশনা দেওয়া স্বল্প পরিসরের এই ভার্চুয়ালি মাধ্যম দ্বারা আমাদের পক্ষে সম্ভব নাও হতে পারে। চেষ্টা করলেও প্রশ্নকারীর পিপাসা মিটানো সম্ভব হবে না। প্রত্যেক বিষয়ে আমরা শুধুমাত্র সামান্য আলোকপাত করে থাকি।
উপরোক্ত প্রশ্নটির উত্তরের জন্য আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট উলামায় কেরামের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা আপনার জন্য কল্যাণকর হবে বলেই আমাদের ধারণা।
তাছাড়া ইলম অর্জনের জন্য সফর করা অত্যান্ত জরুরী। এবং কষ্ট করে ইলম অর্জন করাই আমাদের আকাবির আসলাফদের রীতি ও নীতি। এদিকেই কুরআনের এই আয়াত ইঙ্গিত দিচ্ছে,
ۚفَلَوْلَا نَفَرَ مِن كُلِّ فِرْقَةٍ مِّنْهُمْ طَائِفَةٌ لِّيَتَفَقَّهُوا فِي الدِّينِ وَلِيُنذِرُوا قَوْمَهُمْ إِذَا رَجَعُوا إِلَيْهِمْ لَعَلَّهُمْ يَحْذَرُونَ
তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন বের হলো না, যাতে দ্বীনের জ্ঞান লাভ করে এবং সংবাদ দান করে স্ব-জাতিকে, যখন তারা তাদের কাছে প্রত্যাবর্তন করবে, যেন তারা বাঁচতে পারে।(সূরা তাওবাহ-১২২)
সুতরাং আপনাকে বলবো, আপনি বিস্তারিত জানতে স্ব-শরীরে কোনো দারুল ইফতায় যোগাযোগ করবেন।
প্রশ্ন করার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।আল্লাহ তা'আলা আপনার ইলম অর্জনের স্পৃহাকে আরোও বাড়িয়ে দিক, আমীন!!
প্রত্যেকটা বিষয়ের সাথে নিম্নের হাদীসকে লক্ষ্য রাখবেন।
হাসান ইবনে আলী রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে।
ﻭﻋﻦ ﺍﻟﺤَﺴَﻦِ ﺑﻦ ﻋَﻠﻲٍّ ﺭﺿﻲَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗَﺎﻝَ : ﺣَﻔِﻈْﺖُ ﻣِﻦْ ﺭَﺳُﻮﻝ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﷺ : « ﺩَﻉْ ﻣَﺎ ﻳَﺮِﻳﺒُﻚَ ﺇِﻟﻰ ﻣَﺎ ﻻ ﻳﺮِﻳﺒُﻚ » ﺭﻭﺍﻩُ ﺍﻟﺘﺮﻣﺬﻱ ﻭﻗﺎﻝ : ﺣﺪﻳﺚٌ ﺣﺴﻦٌ ﺻﺤﻴﺢٌ
তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি।তিনি বলেন,সন্দেহ যুক্ত জিনিষকে পরিহার করে সন্দেহমুক্ত জিনিষকে গ্রহণ করো।(সুনানু তিরমিযি-২৪৪২)
হযরত মু'আবিয়া ইবনে হাইদাহ রাযি থেকে বর্ণিত,
معاوية بن حيدة رضي الله عنه ، أن رسول الله صلى الله عليه وسلم قال ( أَتَرعُونَ عَنْ ذِكْرِ الْفَاجِرِ ! اذْكُرُوهُ بِمَا فِيهِ كَي يَعْرِفَهُ النَّاسُ وَيَحْذَرَهُ النَّاسُ ).
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,তোমরা কি ফাসিকের সমালোচনা থেকে বিরত থাকবে?বরং তোমরা ফাসিকের কৃত অপরাধ নিয়ে সমালোচনা করো,যাতেকরে লোকজন সেই অপরাধ থেকে বিরত থাকে।আস-(সুনানুল কুবরা-বায়হাক্বী-১০/২১০)
فَاِنۡ لَّمۡ تَجِدُوۡا فِیۡہَاۤ اَحَدًا فَلَا تَدۡخُلُوۡہَا حَتّٰی یُؤۡذَنَ لَکُمۡ ۚ وَ اِنۡ قِیۡلَ لَکُمُ ارۡجِعُوۡا فَارۡجِعُوۡا ہُوَ اَزۡکٰی لَکُمۡ ؕ وَ اللّٰہُ بِمَا تَعۡمَلُوۡنَ عَلِیۡمٌ ﴿۲۸﴾
যদি তোমরা ঘরে কাউকেও না পাও তাহলে সেখানে প্ৰবেশ করবে না যতক্ষণ না তোমাদেরকে অনুমতি দেয়া হয়। যদি তোমাদেরকে বলা হয়, ‘ফিরে যাও’, তবে তোমরা ফিরে যাবে, এটাই তোমাদের জন্য অধিক পবিত্ৰ। আর তোমরা যা কর সে সম্বন্ধে আল্লাহ সবিশেষ অবগত।
ছবি ভিডিও শরীয়তের দৃষ্টিতে হারাম। হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত,
عن ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﻤﺎ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ :( ﻣﻦ ﺻَﻮَّﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛُﻠِّﻒ ﺃﻥ ﻳَﻨْﻔُﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮُّﻭﺡ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ )
তরজমাঃ- ইবনে আব্বাস রাঃ বলেন, আমি নবী কারীম সাঃ কে বলতে শুনেছি, যে তিনি বলেছেন,
যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন(জানোয়ারের) ছবি আকবে,কিয়ামতের দিন তাকে দায়িত্ব দেয়া হবে,সে যেন উক্ত ছবির ভিতরে রূহ প্রদান করে, অথচ রূহ প্রদান করা তার জন্য কস্মিনকালে ও সম্ভব হবে না(অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করে আযাব প্রদান করা হবে)(সহীহ বুখারী -৫৬১৮)
ﻭَﻗَﺎﻝَ : ﺇﻥْ ﻛُﻨْﺖَ ﻻَ ﺑُﺪَّ ﻓَﺎﻋِﻼً ﻓَﺎﺻْﻨَﻊِ ﺍﻟﺸَّﺠَﺮَ ، ﻭَﻣَﺎ ﻻَ ﻧَﻔْﺲَ ﻟَﻪ
হযরত ইবনে আব্বাস রাঃ কে এক ব্যক্তি ছবি আকার অনুমতি প্রার্থনা করলে তিনি উত্তরে বললেনঃযদি তোমার ছবি একে উপার্জন করতেই হয় তাহলে তুমি গাছের ছবি আকো বা এমন ছবি আকো যাতে কোনো প্রাণীর ছবি নেই।(সহীহ বুখারী- ২২২৫)
বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/2253
https://www.ifatwa.info/361 নং ফাতাওয়ায় উল্লেখ রয়েছে যে,
লাইভ সম্প্রচার জায়েয এটা নিয়ে কোনো মতবিরোধ নেই।
রেকর্ড ভিডিও নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে।
মুফতী তাক্বী উসমানী রেকর্ড ভিডিওকে তাসবীর (যা সর্বসম্মতিক্রমে হারাম)এর আওতাধীন করতে ইতস্ততাবোধ করেছেন।উনি উনার অমরগ্রন্থ তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিমে লিখেন,
ﻭﺍﻣﺎ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺘﻰ ﻟﻴﺲ ﻟﻬﺎ ﺛﺒﺎﺕ ﻭﺍﺳﺘﻘﺮﺍﺭ، ﻭﻟﻴﺴﺖ ﻣﻨﻘﻮﺷﺔ ﻋﻠﻰ ﺷﻴﺊ ﻳﺼﻔﺔ ﺩﺍﺋﻤﺔ ﻓﺈﻧﻬﺎ ﺑﺎﻟﻈﻞ ﺍﺷﺒﻪ (ﺍﻟﻰ ﻗﻮﻟﻪ) ﻓﺎﻥ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﻻ ﺗﺴﺘﻘﻮ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻜﻴﺴﺮﺍ ﺍﻟﻰ ﺍﻟﺸﺎﺷﺔ ﻭﺗﻈﻬﺮ ﻋﻠﻴﻬﺎ ﺑﺘﺮﺗﻴﺒﻬﺎ ﺍﻷﺻﻠﻰ ﺛﻢ ﺗﻔﺘﻰ ﻭﺗﺰﻭﻝ،
ভাবার্থ-ঐ ছবি যার কোনো স্থায়িত্ব বা দীর্ঘতা নেই, এবং যা কোনো জিনিষের উপর স্থায়ী অঙ্কিত ও নয়।সেটা ছায়ার অধিকতম নিকটবর্তী। কেননা ছবি স্কীনে অবশিষ্ট থাকে না বরং তা মেমোরি বা রিলে সংরক্ষিত ধারাবাহিকার সাথে স্কীনে আসে আবার তা দূতই চলে যায়।(তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম-৪/১৬৪)
দ্বীনী প্রচার প্রসার এর উদ্দেশ্যে কোনো ফিল্ম তৈরী হলে এবং তাতে কোনো প্রকার হারাম জিনিস যেমন গান-বাদ্য, নারী দৃশ্য ইত্যাদি না থাকলে, অনুমোদন দেয়া যেতে পারে।(জাদীদ ফেকহী মাসাঈল;১/২৩৬)
★সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
প্রশ্নে বর্ণিত ছুরতে এসব ভিডিও যদি দ্বীনী প্রচার প্রসার এর উদ্দেশ্যে তৈরী করা হয় এবং তাতে কোনো বাদ্য-বাজনা ও কোনো প্রকার হারাম জিনিস না থাকে,কোনো নারীর ছবি না থাকে,সেক্ষেত্রে এ ধরনের ভিডিও ফেসবুকে আপলোড করা যাবে।