আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
86 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)
নেয়ামত ও বরকত বলতে আল্লাহ আমাদের জন্য যা সৃষ্টি করেছেন সেগুলা বুঝায় কি বা নেয়ামত ও বরকত দুটাই সৃষ্ট কিছু বুঝায় কি ?


? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ? ?

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

কোরআনে কারিমে আল্লাহতায়ালা তার সাধারণ ও বিশেষ নেয়ামতগুলোর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন,

يَا أَيُّهَا النَّاسُ اذْكُرُوا نِعْمَتَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ ۚ هَلْ مِنْ خَالِقٍ غَيْرُ اللَّهِ يَرْزُقُكُم مِّنَ السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ ۚ لَا إِلَـٰهَ إِلَّا هُوَ ۖ فَأَنَّىٰ تُؤْفَكُونَ

 ‘হে মানুষ! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামতকে স্মরণ করো। আল্লাহ ছাড়া কোনো স্রষ্টা আছে? তিনি তোমাদের আসমান ও জমিন থেকে রিজিক দান করেন। তিনি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই।’ (-সূরা ফাতির: ৩)

আর রাগিব ইস্পাহানি (রহ.)-এর মতে, বরকত বলা হয় কোনো জিনিসে আল্লাহর কল্যাণ নিহিত থাকা।

যেমনপবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর এটি বরকতময় কিতাব, যা আমরা নাজিল করেছি, যা তার আগের সব কিতাবের সত্যায়নকারী।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৯২)। এ আয়াতে ‘বরকতময় কিতাব’ মানে কল্যাণময় কিতাব।

ইমাম বাগভি (রহ.)-এর মতে, ‘বরকত’ এর শাব্দিক অর্থ প্রবৃদ্ধি। আর বরকতের মূল হচ্ছে, কোনো কিছু নিয়মিত থাকা। যেমনপবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যদি সেসব জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তবে অবশ্যই আমরা তাদের জন্য আসমান ও জমিনের বরকতসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম, কিন্তু তারা মিথ্যারোপ করেছিল; কাজেই আমরা তাদের কৃতকর্মের জন্য তাদেরকে পাকড়াও করেছি।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ৯৬)

উপরোক্ত আয়াতে ‘আসমান ও জমিনের সব বরকত খুলে দেওয়া’ মানে সব রকম কল্যাণ সব দিক থেকে খুলে দেওয়া।

অর্থাৎ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সঠিক সময়ে আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষিত হতো আর জমিন থেকে যেকোনো বস্তু তাদের মনমতো উৎপাদিত হতো এবং অতঃপর সেসব বস্তু দ্বারা তাদের লাভবান হওয়ার এবং সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করে দেওয়া হতো। (ফাতহুল কাদির)

‘বরকত’ শব্দ দ্বারা কখনো কখনো নেক সন্তান-সন্ততির প্রবৃদ্ধিও বোঝানো হয়। যেমনপবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, আর আমি ইবরাহিমের ওপর বরকত দান করেছিলাম এবং ইসহাকের ওপরও; তাদের উভয়ের বংশধরদের মধ্যে কিছুসংখ্যক সৎকর্মপরায়ণ এবং কিছুসংখ্যক নিজেদের প্রতি স্পষ্ট অত্যাচারী। (সুরা : সাফফাত, আয়াত : ১১৩)

অর্থাৎ, তাঁদের উভয়ের বংশ বিস্তার করেছিলাম। বেশির ভাগ নবী ও রাসুলের আগমন তাঁদের বংশ থেকেই ঘটেছে।

বরকতের আরো বহু অর্থ হতে পারে। যা বোঝার জন্য পবিত্র কোরআনের এই আয়াতটির তাফসির দেখা যেতে পারে। ইরশাদ হয়েছে, ‘যেখানেই আমি থাকি না কেন তিনি আমাকে বরকতময় করেছেন।’ (সুরা : মারিয়াম : আয়াত : ৩১)

এখানে বরকতের মূল অর্থ হচ্ছে, আল্লাহর দ্বিনের ওপর প্রতিষ্ঠিত রাখা। কারো কারো মতে, বরকত অর্থ সম্মান ও প্রতিপত্তিতে বৃদ্ধি। অর্থাৎ আল্লাহ আমার সব বিষয়ে প্রবৃদ্ধি ও সফলতা দিয়েছেন। কারো কারো মতে, বরকত অর্থ মানুষের জন্য কল্যাণকর হওয়া। কেউ কেউ বলেন কল্যাণের শিক্ষক। কারো কারো মতে, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ। (ফাতহুল কাদির)

এক কথায়, আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই বরকতের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। জীবনে বরকত না থাকলে মানুষের দুশ্চিন্তায় সময় পার করতে হয়। এ জন্যই রাসুল (সা.) সর্বদা নিজের জন্য ও অন্যের জন্য বরকতের দোয়া করতেন। যেমনএকদিন সাহাবি আবদুর রাহমান ইবনে আওফ (রা.)-এর গায়ে (বা পোশাকে) রাসুল (সা.) হলুদ রঙের চিহ্ন দেখে প্রশ্ন করেন। কী ব্যাপার! তিনি বলেন, আমি এক নারীকে একটি খেজুর আঁটির অনুরূপ পরিমাণ সোনার বিনিময়ে বিয়ে করেছি। রাসুল (সা.) বলেন, তোমায় আল্লাহ তাআলা বরকত দিন, ওলিমার আয়োজন করো তা একটি ছাগল দিয়ে হলেও। (তিরমিজি, হাদিস : ১০৯৪)

এমনকি রাসুল (সা.) তাঁর প্রিয় দৌহিত্র হাসান (রা.)-কে বরকত লাভের দোয়া শিক্ষা দিয়েছিলেন। হাসান (রা.) কর্তৃক বিতর নামাজে পঠিত লম্বা দোয়ার অংশ ছিল, ‘ওয়া বারিক লি ফি-মা আ’তাইতা’ অর্থাৎ : (হে আল্লাহ) তুমি আমাকে যা দান করেছ, তার মধ্যে বরকত দাও! (তিরমিজি, হাদিস : ৪৬৪)

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

১. মুসলিম সমাজে বহুল প্রচলিত একটি শব্দ ‘বরকত’। এটি অত্যন্ত ব্যাপক শব্দ, স্থান-কাল-পাত্র ভেদে এর বহু অর্থ রয়েছে। কোরআন এবং হাদিসে বহুবার বরকত শব্দটির প্রয়োগ হয়েছে। তাফসিরবিদ ও হাদিসবিশারদরা বিভিন্ন জায়গায় ‘বরকত’ শব্দটি বিভিন্নভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। তবে সাধারণত ‘বরকত’ শব্দটি কল্যাণ ও প্রবৃদ্ধির অর্থে অধিকাংশ স্থানে ব্যবহার হয়ে থাকে।

২.আল্লাহ যা কিছু আমাদের কল্যাণার্থে সৃষ্টি করেছেন, সবই আমাদের জন্য তার দেওয়া নেয়ামত যা আমরা বিভিন্ন আয়াত ও হাদীসের আলোকে জেনে থাকি। এবং আল্লাহ তায়ালা যে আমাদের কে বিভিন্ন রোগ থেকে  মুক্তি দিয়েছেন,সুস্থ রেখেছেন, রিজিক সমৃদ্ধ করে দিয়েছেন, সমস্থ  প্রয়োজন পূরণ করছেন ইত্যাদী এসবই আমাদের হায়াতে তিনি নেয়ামত দিয়েছেন বলেই আমরা তা ভোগ করছি। অন্যথায় আল্লাহর নেয়ামত ও তার দেওয়া বরকত ছাড়া আমরা এক মহূর্তও চলতে পারবো না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...