আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
107 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (2 points)
আসসালামু আ'লাইকুম ওয়া রহমাতুল্লহি ওয়া বারকাতুহ্।

কোনো জীবন বীমা কোম্পানির সাথে "Money Changing, Financial Associate"  এই পদে চাকরি/ব্যবসা করা জায়েজ হবে? পাত্র যদি এই চাকরি/ব্যবসা করে আর, পাত্রের বাবাও যদি এরকম কোনো জীবন বীমা কোম্পানির সাথে জড়িত "Money Changing" এর চাকরি বা ব্যবসা করে তাহলে এইখানে কি পাত্রীর(মেয়ের) পরিবারের উচিত হবে বিয়ের কথা-বার্তা চালিয়ে যাওয়ার?....

জাযাকাল্লহু খইরন...

1 Answer

0 votes
by (61,230 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

শরীয়তের একটি মূলনীতি হলো অন্যায় কাজ যেমন নিজে করা জায়েজ নেই,অন্যায় কাজে সহযোগিতা করাও জায়েজ নেই।

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ-

وَتَعَاوَنُوا عَلَى الْبِرِّ وَالتَّقْوَىٰ ۖ وَلَا تَعَاوَنُوا عَلَى الْإِثْمِ وَالْعُدْوَانِ ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ [٥:٢]

সৎকর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। {সূরা মায়িদা-২}

قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}

https://ifatwa.info/65843/?show=65843#q65843   নং ফাতওয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে যে,

বীমা নাজায়েয ও হারাম।কেননা কম্পানির পক্ষ্য থেকে মাসিক কিস্তিতে যে টাকা উসূল করা হয়, সেটা মূলত কম্পানির নিকট ঋণ হিসেবে থাকে। এবং পরবর্তীতে এ জমাকৃত টাকা তথা ঋণের বিপরিতে যে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করা হয়,সেটা সুদ। আর সুদ হারাম।

দ্বিতীয়ত বীমার বিষয়টা শর্ত তথা গ্রাহকের কোনো অঘটনের সাথে চুক্তিবদ্ধ। আর শর্তের সাথে কোনো ঋণের আদাণ-প্রদাণ জায়েয না বরং হারাম।

তৃতীয়ত,বীমার টাকা দেড়ীতে গ্রাহকের হস্তগত হওয়ার শর্ত থাকে।আর ঋণের মধ্যে শর্তের মাধ্যমে দেড়ীতে লেনদেনের সমাপ্তি বিশুদ্ধ নয়।

তাছাড়া বীমা কম্পানি গ্রাহকের নিকট থেকে কিস্তিতে টাকা তুলে সেই টাকা দিয়ে সুদি লেনদেনে জড়িয়ে থাকে।

সুতরাং এসমস্ত কারণ বিবেচনায় ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, জীবন বীমা করা এবং বীমা কম্পানিতে চাকুরী করা জায়েয হবে না।(আহসানুল ফাতাওয়া-৭/২৪) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1204   

সরকারি বাধ্যতামূলক বীমা ব্যতিত বাদবাকী সকল প্রকার বীমা নাজায়েয ও হারাম।

সরকারের পক্ষ থেকে সবার জন্য জীবন পেনশন সুবিধা চালু করতে যাচ্ছে। জীবন বীমা কর্পোরেশন এরকম পেনশন প্যাকেজ অলরেডি চালু করে দিয়েছে। পদ্ধতি হল, সেখানে নির্দিষ্ট মেয়াদে নির্দিষ্ট মেয়াদে কিছু টাকা জমা দেওয়ার পর নির্দিষ্ট একটি বয়সে গিয়ে প্রতি মাসে পেনশন চালু হয়ে যাবে।

(১)এই পেনশন স্কিম ও সাধারন জীবন বিমা একই। তবে যদি সরকারিভাবে বাধ্যতামূলক হয়ে যায়, বা সরকার আলেম উলামাদের সাথে এ বিষয়ে পরামর্শ করে, তাহলে নিয়মনীতিকে কিছুটা পরিবর্তন করে সেটাকে সুদমুক্ত রাখা সম্ভব হতে পারে।

(২)সরকারী জনসাধারন পেনশন স্কিম নাজায়েয ও হারাম। তবে সরকারি বাধ্যতামূলক হলে সেগুলোর রুখসত থাকবে।

(৩) হ্যা,ভবিষ্যতে টাকা জমানোর উদ্দেশ্যে এবং মূল প্রদত্ত অর্থের অতিরিক্ত গ্রহণ না করার নিয়তে যদি পেনশন পলিসি গ্রহন করা হয়, তাহলে সেটা নাজায়েয হবে না।

(৪) আপনার একটি ডিপিএস আছে, সেটার লভ্যাংশ বিনা সোয়াবের আশায় দান করার আপনার ইচ্ছা আছে। সেটাকে আপনার ছোট ভাইয়ের পড়ালেখায় খরচ করতে পারবেন, যদি আপনার বাবা সামর্থ্যহীন থাকেন। নতুবা কোনো এতিম খানায় বা গরীব মিসকিনকে দিয়ে দিতে হবে।

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

হালাল ইনকাম রয়েছে এমন পাত্রের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়াই প্রত্যেক ঈমান নারীর উচিৎ। সুদী কারবারে জড়িত সকল প্রকার চাকুরী হারাম। আর হারাম মাল দ্বারা ভালো কিছু আশা করা যায়না।

সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনার জন্য করনীয় হলো যথাসম্ভব জেনে শুনে এমন বিবাহে অগ্রসর  না হওয়া।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...