আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
78 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (41 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহ মাতুল্লাহি ওয়াবারকাতুহ।
সম্মানিত উস্তাদ কিছু প্রশ্নের উত্তর জানতে চাই।

১/সাদাস্রাব জনিত সমস্যার কারণে এক সময় প্রতি ওয়াক্তে অজু করে নামায পড়েছি।এখন যদি আমার সমস্যাটা চলে গিয়ে থাকে তাহলে আমি কি মাজুর অবস্থায় যেই ভাবে নামায পড়া লাগতো সেই অবস্থা থেকে ফারেগ হয়ে স্বাভাবিক ভাবে নামায পড়তে পারবো?সাদাস্রাব যদি না বের হয় তাহলে এক অজু দিয়ে একাধিক ওয়াক্তের নামায পড়তে পারবো?

২/আল্লাহ যখন আমাকে দ্বীনের বুঝ দিয়েছিলেন তখন আমি কিছু আলেমের কাছ থেকে শুনেছিলাম নামাযে সিজদায় গিয়ে দোয়া করলে দোয়া কবুল হয়।এজন্য তারা নামাযে সেজদায় বেশি বেশি দোয়া করতে বলেছেন।এটা শুনে আমি ফরয,সুন্নাহ,নফল সব নামাযে নিজ ভাষায়  দুনিয়াবি যে কোন ধরনের দোয়া করতে লাগলাম।এখন না জেনে এমনটা করার কারণে আমার সেই সমস্ত নামায কি ভেঙে গিয়েছে?সেগুলো কি আবার কাজা আদায় করতে হবে?

৩/আমার বাবা এবং উনার ভাইদের মিলে কয়েকটি নারিকেল গাছ আছে।যেগুলো থেকে আগে নারিকেল পেড়ে ৩ ভাইয়ের জন্য সমান ৩ ভাগ করা হতো।আর নারিকেল বাতাসে ঝরে পড়লে ৩ ভাইয়ের পরিবারের মধ্যে যে সামনে পেতো সেই নিতো।এখন নারিকেল ঝরে পড়লে আমরা যদি সেই নারিকেল নিলে যদি আমার অন্য চাচি বা জেঠি মন থেকে এটা মেনে না নেন তাহলে সেটা কি খাওয়া জায়েয হবে।কারণ নারিকেল ঝরে পড়লে উনারাও নেয়।এটা বলতে পারেন এক ধরনের নিয়ম হয়ে গেছে।

৪/ আমার জেঠারা নারিকেল পেড়ে নিজেরা নিয়ে যায়।আমাদের এবং আমার অন্য চাচাকে ভাগ দেয়না।একধরনের জুলুমের স্বিকার হচ্ছি আমরা এখানে।এখন যদি নারিকেল বাতাসে ঝরে পড়ে তাহলে আমরা কি সেই নারিকেল বড় জেঠাদের না জানিয়ে খেতে পারবো?কারণ উনারা তো এমনিতেই আমাদের নারিকেলের ভাগ দেয়না তার উপর নারিকেল বাতাসে ঝরে পড়লেও কি আমরা সেটা নিয়ে খেতে পারবো না?

৫/এমনিতে স্বাভাবিক অবস্থায় যে সকল গাছে আমাদের এবং আমাদের চাচা জেঠাদের ভাগ আছে সে সকল গাছ থেকে কোন ফল পড়লে আমাদের কে কি সেটা তাদের থেকে অনুমতি নিয়ে খেতে হবে? নাকি তাদের না জানিয়েও খেতে পারবো?তারা নিজেরাও কোন ফল ফেলে আমাদের না জানিয়েই খায়।এটাকে সবাই নিয়ম মনে করে থাকে বলতে পারেন।

1 Answer

0 votes
by (574,470 points)
জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم

(০১)
আপনার যদি অযু না ভাঙ্গে,সেক্ষেত্রে এক অযু দিয়ে একাধিক ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে পারবেন।তবে যদি অযু ভেঙ্গে যায়,সেক্ষেত্রে পুনরায় অযু না করে নামাজ আদায় জায়েজ হবেনা।

(০২)
শরীয়তের বিধান হলো দুনিয়াবি দোয়া করলে নামাজ ভেঙে যায়।

দুনিয়াবি দোয়াঃ যেটা মানুষের কাছে থেকেও পাওয়া যায়,যেমন হে আল্লাহ আমাকে কাপড় দাও,বিবাহ দাও,এক লক্ষ টাকা দাও ইত্যাদি। 
(কিতাবুন নাওয়াজেল ৪/১০৫)

হাদীস শরীফে এসেছেঃ   
রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন

إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ، إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ»

নিশ্চয় এ নামায; এতে মানুষের মুখে প্রচলিত কথা বলা উচিত নয়। নিশ্চয় এটি তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন তিলাওয়াতের স্থান। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৫৩৭] 

قال العلامۃ التہانوي تحتہ: دل الحدیث علی أنہ لا یجوز في الصلاۃ شيء من کلام الناس، فتفرع علیہ أن الدعاء أیضاً إذا کان یشبہ کلامہم لا یجوز، وہو قول أبي حنیفۃ وأصحابہ وطاؤس وإبراہیم النخعي۔ (کذا في فتح الباري ۲؍۲۶۶، إعلاء السنن ۳؍۱۷۲ رقم: ۸۹۳ دار الکتب العلمیۃ بیروت)
থানবি রহঃ বলেন উক্ত হাদীস দালালত করে যে নামাজের ভিতর দুনিয়াবি কথাবার্তা বলা জায়েজ নেই।সুতরাং দুনিয়াবি দোয়া যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে,সেটি বলাও জায়েজ নেই।    

ویفسد ھا التکلم الخ، عمدہ وسہوہ قبل قعودہ قدر التشہد سیان، وسواء کان ناسیا أو نائماً أو جاھلا أو مخطئاً أو مکرھاً ھو المختار۔ (درمختار مع الشامي ۲؍۳۷۰ زکریا، مراقي الفلاح مع الطحطاوي ۱۷۵، بدائع الصنائع ۱؍۵۱۸، شرح الوقایۃ ۱؍۱۶۳، حاشیۃ الطحطاوي ۳۲۱)
সারমর্মঃ ইচ্ছাপূর্বক হোক,বা অনিচ্ছায় হোক,কথা বললে নামাজ ভেঙ্গে যাবে।  

والدعاء بما یشبہ کلامنا نحو: اللّٰھم ألبسني ثوب کذا أو أطعمني کذا أو أقض دیني أو أرزقني فلانۃ علی الصحیح؛ لأنہ یمکن تحصیلہ من العباد۔ (مراقي الفلاح)
দুনিয়াবি দোয়াঃ যেটা মানুষের কথার সাথে সাদৃশ্য রাখে,যেমন হে আল্লাহ আমাকে উমুক কাপড় দাও,ঐ খাবার দাও,ওই মহিলার সাথে বিবাহ দাও,আমার করজ শোধ করে দাও ইত্যাদি।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
আপনি যদি মনে মনে দোয়া করে থাকেন,সেক্ষেত্রে নামাজ ভেঙ্গে যায়নি। তবে যদি মুখে উচ্চারণ করে দোয়া করে থাকেন,সেক্ষেত্রে সেই নামাজ গুলি ভেঙ্গে গিয়েছে। পুনরায় সেই নামাজ গুলি আদায় হবে।

(০৩)
প্রশ্নের বিবরন মতে সেটা খাওয়া আপনাদের জন্য জায়েজ হবে।

তদুপরি আপনার বাবা সকল ভাইকে নিয়ে বসে বিষয়টি স্পষ্ট আকারে সুরাহা করে নিবেন,এটাই উত্তম, যাতে করে আর কোনো মন কষাকষি না হয়।

(০৪)
খেতে পারবেন। 

(০৫)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে তাদের থেকে অনুমতি নিতে হবেনা।
অনুমতি না নিয়েও খেতে পারবেন।

তদুপরি আপনার বাবা সকল ভাইকে নিয়ে বসে বিষয়টি স্পষ্ট আকারে সুরাহা করে নিবেন,এটাই উত্তম, যাতে করে আর কোনো মন কষাকষি না হয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...