ওয়া আলাইকুমুস-সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
আল্লাহর রাসুল
(সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি জামাতের সঙ্গে এশার নামাজ আদায় করল, সে যেন অর্ধেক রাত পর্যন্ত (নফল) নামাজ আদায় করল।
আর যে ব্যক্তি ফজরের নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করল সে যেন সারা রাত জেগে নামাজ আদায়
করল।’ (মুসলিম, হাদিস : ১৩৭৭)
অন্য বর্ণনায়
এসেছে, ‘যে ব্যক্তি এশা ও ফজর জামাতের সঙ্গে পড়ল, সে যেন সারা রাত দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ল।’ (মুসলিম,
হাদিস: ৬৫৬)
রাসুল (সা.)
বলেছেন, ‘মুনাফিকদের জন্য ফজর ও এশার নামাজের চেয়ে অধিক ভারী কোনো নামাজ নেই। এ দুই নামাজের
ফজিলত যদি তারা জানত, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তারা উপস্থিত হতো।’ (বুখারি,
হাদিস : ৬৫৭)
উবাই ইবনে
কাব (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘একবার মহানবী (সা.) আমাদের ফজরের নামাজ পড়িয়েছেন। সালাম ফিরিয়ে জিজ্ঞেস করেন,
অমুক কি আছে?
লোকেরা বলল,
নেই। তারপর আরেকজনের নাম নিয়ে জিজ্ঞেস
করেন, অমুক কি আছে? লোকেরা বলল, নেই। তিনি বলেন, এ দুই নামাজ (এশা ও ফজর) মুনাফিকদের জন্য সবচেয়ে কঠিন। তোমরা যদি জানতে যে এই
দুই নামাজে কী পরিমাণ সওয়াব আছে, তাহলে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও তাতে শরিক হতে।’ (আবু দাউদ,
হাদিস: ৫৫৪)
জাবির রাযি.
থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
مَنْ
خَافَ أَنْ لَا يَقُومَ مِنْ آخِرِ اللَّيْلِ فَلْيُوتِرْ أَوَّلَهُ ، وَمَنْ
طَمِعَ أَنْ يَقُومَ آخِرَهُ فَلْيُوتِرْ آخِرَ اللَّيْلِ ، فَإِنَّ صَلَاةَ آخِرِ
اللَّيْلِ مَشْهُودَةٌ ، وَذَلِكَ أَفْضَلُ
যে ব্যক্তি
শেষ রাতে উঠতে না পারার আশংকা করবে, সে যেন শুরু রাতেই বিতির পড়ে নেয়। আর যে ব্যক্তি
রাতের শেষ ভাগে উঠে (ইবাদত) করার লালসা রাখে, সে যেন রাতের শেষ ভাগেই বিতির সমাধা করে। কারণ,
রাতের শেষ ভাগের নামাযে ফেরেশতারা
হাজির হন এবং এটিই উত্তম আমল। (মুসলিম ৭৫৫)
আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/4722/
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী
ভাই/বোন!
জ্বী জামাত সম্পর্কিত
হাদীসটি সহিহ, যা বিস্তারিত উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। আর ২য় বিষয়টি নিয়ে কিছু পরামর্শ
থাকবে যে, সাধারণত বাড়িওয়ালার বিষয়টি হলো নিরাপত্তার জন্য তারা চাবি
দেয় না। ঢাকা শহরে এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। তাই অনেক বাড়িওয়ালার নিরাপত্তার দিকে লক্ষ্য
করে চাবি দেয় না। কিন্তু বাড়িওয়ালারও উচিত জামাতের দিকে খেয়াল রাখা। তার ভাড়াটিয়ারা
নামাজ জামাতে পড়তে পারছে কি না লক্ষ্য রাখা এটা তার দায়িত্ব।
দুর্ঘটনা ঘটার
থাকলে ঘটবেই। দুনিয়া ক্ষণস্থয়ী। একদিন সব শেষ হয়ে যাবে। তখন নামাজ রোজা আর ইবাদতই থাকবে।
তাই জামাতের প্রতি গুরুত্ব দিতে বাড়িওয়ালার উচিত দারওয়ান রাখা। না হয় যেভাবেই সম্ভব
ভাড়াটিয়াদের জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করার ব্যবস্থা করা।
বাস্তবতা দেখা
যায়, যে বাড়িওয়ালারা নিজেরা
জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করে তার ভাড়াটিয়ারাও জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করে। আর যারা
জামাতে নামাজ আদায় করে না তারা ভাড়াটিয়াদেরও নামাজ আদায় করতে দেয় না। এজন্য এগিয়ে আসতে
হবে নামাজি বাড়িওয়ালাদের। তারা বাড়িওয়ালাদের নিয়ে বসে তাদের বুঝানোর চেষ্টা করবে জামাতের
সঙ্গে নামাজ আদায়ের ফজিলত। এতে ইমামরাও সহযোগিতা করলে বিষয়টি আরো সহজ হবে বলে আমি মনে
করি।
সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত
ছুরতে আপনি স্থানীয় কোন আলেম বা ইমামের মাধ্যমে বাড়িওয়ালা ও দারোয়ানকে বুঝানোর চেষ্টা
করবেন। এরপরেও যদি উক্ত সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে কষ্ট হলেও বাসা
পরিবর্তন করতে হবে এবং এমন জায়গায় বাসা নেওয়া উচিত যেখানে জামায়াতের সাথে সালাত
আদায়ের সুযোগ থাকবে।