একবার মাসিক ভালো হয়ে সহবাসের পর একিদিনে রাতের বেলা ১২ টার কিছু আগে আমার স্বামী প্রচণ্ড রাগের মাথায় আমার শ্বশুরের সামনে বলে-"ওর সাথে আর সংসার করবো না, ওর বাবারে ডাকো জানাও ওরে নিয়া যাইতে বল", আমার শ্বশুর বকা দিয়ে বুঝানোর পর আমিও বলার পর উনি আমাকে বলে- "আমার কথা শুনবা? আমি যা বলমু তাই, আমার কথামত চলতে পারলে থাকবা" , এরপর রাত ১২ টার পরে সে আমার সাথে রাগ করে থাকে, ঠিকমত কথা বলে না, আমি জিজ্ঞেস করি যে তার বাবার সামনে বলা কথাগুলো মন থেকে বলে নাই তো, উওরে কয়েকবার বলে যে যা বলসে মন থেকেই বলসে নাকি, আবার বলে- "আমারে ডিভোর্স দিয়ে দাও তুমি, তোমার বাসায় গিয়া কয়দিন থাক তাদের সাথে বুঝো, ডিসিশন নাও তারপর", এরপরও আমি অনেক কিছু বললেও উনি রাগ ভাঙে না, কিছুক্ষণ পর শুয়ে মোবাইল চালাতে থাকে আর মোবাইলের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে নিজে নিজেই বলতে থাকে- "তালাক তালাক তালাক তালাকের নাম নেয়া হইসে না, তো একটা সময় তালাক হইয়াই যাইবো দেখবা, আমি যেটা কই ঐটা ফইল্লাই যায়", তারপর সকালে আমি অনেক চেষ্টা করি মানানোর, কিন্তু উনি রাগ করেই থাকে এবং আগের মতই ভাব করে যেন উনি রাগ ভাঙবে না এমনি থাকবে, আমাকে সময় নিয়ে আমার ডিসিশন নিতে বলে। আমি আবার মানানোর চেষ্টা করি এবং এবার সে রাগ ভাঙে আর বলে আমি কেন উনার কথা শুনি নাই তর্কে গেলাম তাই এমন করেছে, আমি জিজ্ঞেস করি তাহলে "মন থেকে বলসি" এমন বলার কারণ কি, বলে আমাকে কষ্ট দিতে নাকি এসব বলেছে। আমি এরপর জিজ্ঞেস করি যে তাহলে সংসার করবে নাকি আমার সাথে, উওরে হ্যাঁ বোধক মাথা নাড়ে।
ঐদিন-ই আমি চিন্তিত হয়ে সার্চ করতে গিয়ে আহমাদুল্লাহ হুজুরের ওয়াজে দেখি কেনায়ামূলক শব্দ দ্বারা নাকি তালাক হয়ে যায়। আমি আমার স্বামীকে বললে উনিও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে যান উনার কথাগুলোর জন্য এবং অনুতপ্ত হন। মৌখিকভাবে বলার মাধ্যমে তালাক হয়ে যায় এমন কিছুই উনি জানতেন না, এমনকি ইসলামে তালাকের বিধান সম্বন্ধে সম্পূর্ণ অজ্ঞ ছিলেন তিনি। এই ঘটনার পর ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে উনাকে জানাই আমি এসব।
আমি এই বিষয় নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তায় ভুগি, কিছুদিন আগেও জিজ্ঞেস করি উনাকে উনার নিয়ত সম্বন্ধে, উনি বলেন- "রাগে মুখে যা আসছে বলসি, চিন্তা ভাবনা করে বলি নাই কিছুই, আর নিয়ত হইল একটা জিনিস নিয়া আগে থেকা চিন্তা করা মনে মনে পুইষ্ষা ঠিক কইরা রাখা কিন্তু আমি তো তোমারে নিয়া এমন ভাবিই নাই কখনও" আমি আবার জিজ্ঞেস করি যে বিবাহিত জীবনে কখনও মনে এমন তালাকের কথা ভাবছে নাকি কিন্তু উনি মানা করেছে আমাকে যে এমন নিয়ত করে নাই / ভাবে নাই কখনও নাকি।
আর আমি উনাকে এটাও জিজ্ঞেস করি যে ঝগড়ার রাতে নিজি নিজেই যখন তালাক হইয়াই যাইবো একটা সময় এমন বলছিল যে তখন এটা বলার সময় ৩ বার তালাক শব্দ বলে এরপর পর ই এটা বলছিল কেন, কিন্তু উনি বলে যে হয়ত এটা বলসি যে দেখবা ভবিষ্যতে হইয়া যাইবো তালাক কিন্তু ৩ বার আগে কেন বলতে যামু আমি, এমন কিছু বলি নাই আমার যতটুক মনে পড়ে।
আমাদের মাঝে কি কোনো ধরনের তালাক হয়েছে?
এক হইলে তালাক হয় ই নাই বা হলেও এক তালাক হয়তোবা হয়েছে কিন্তু পরে যেহেতু ঠিক হয়ে গিয়েছিল তাই হলেও তো রুজু হয়ে গেছে- এমন ভাবা / স্বামীর সাথে আলোচনা করার দ্বারা কি তালাক না হয়ে থাকলেও হয়ে যায়?
(বোল্ড করা জায়গাটা সন্দেহ থেকে বলা শিউড়ভাবে বিশ্বাস করেছি মনে এমন না।)