আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
123 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (4 points)
আমি  বিএসসি ইন নার্সিং কোর্স এ ভর্তি হই বেশ কয়েক বছর আগে। মূলত আমার পরিবার আর্থিক ভাবে খুব বেশি সচ্ছল না হওয়ার কারণে আমাকে ভার্সিটি পড়াশুনা বাদ দিয়ে( যেহেতু ভার্সিটি পড়াশুনায় খরচও বেশি তুলনামূলক, আবার চাকরি পাওয়া ও কঠিন নার্সিং এর তুলনায়) শর্ট কাট এ নিশ্চিত চাকরির জন্য নার্সিং পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, আর আমিও ভর্তি হয়ে যায় এই কোর্সে। ওই সময় আমার পর্দার বিধান ও অন্যান্য দ্বীনি বুঝ সম্পর্কে ধারণা ছিল না তেমন। কিন্তু বর্তমানে আমি পর্দার বিধাম ও অন্যান্য বিষয়াদি সম্পর্কে জানতে পারছি এবং আলহামদুলিল্লাহ মেনে চলার চেষ্টা করে যাচ্ছি। কিন্তু ইতিমধ্যে আমার  নার্সিং কোর্সের পড়াশুনার ফাইনাল এক্সাম ও শেষ। কিন্তু সামনে আমার ৬ মাসের ইন্টার্নশিপ রয়েছে, এমতাবস্থায় আমার পরিবারেকে (আমার বাবা, মা ও স্বামী কে) আমি জানায় যে আমি ইন্টার্নশিপ করবো না, কিন্তু তারা এটা মানতে নারাজ। সবার এক কথা " এত বছর পড়াশুনা করেছো এখন শেষ করো আর তো মাত্র ছয় মাস" ।( অবশেষে আমি  পরিবারের সবাইকে যখন বলেছিলাম যে নার্সিং এ চাকরি করবো না যদিও পরিবারের সবাই তখন আমাকে এই বিষয় এ আশ্বস্ত করেছে যে তারা আমাকে নার্সিং এর চাকরি করা নিয়ে কোনো রকম জোরাজুরি করবে না, এটা একান্তই আমার ইচ্ছার ওপর।।

  এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি যদি শুধুমাত্র মহিলাদের সেবা দেই এবং লম্বা ঢিলা কামিজ, আপ্রণ,পাজামা, হিজাব নিকাব, পা মোজা জুতা পরি আমার ইন্টার্নশিপ করতে চাই তাহলে কি এটা আমার জন্য জায়েজ হবে?... মানে এই ড্রেস কোড এ আসলেই পর্দার বিধান মান্য হবে??
উল্লেখ্য, হাত মোজা পড়ে patient care দেওয়া টা বেশি কঠিন হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে হাত মোজা ছাড়া কি পর্দা হবে?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
জবাবঃ-
بسم الله الرحمن الرحيم

প্রয়োজনঅপরাগতা কিংবা ঠেকায় পড়ার পরিস্থিতি ছাড়া সাধারণ অবস্থায় নারীদেরকে ঘরে অবস্থান করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শরীয়ত তাদের ওপর এমন দায়িত্ব আরোপ করে নিযার কারণে তাদের ঘরের বাইরে যেতে হয়। 

 

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَقَرْنَ فِي بُيُوتِكُنَّ وَلَا تَبَرَّجْنَ تَبَرُّجَ الْجَاهِلِيَّةِ الْأُولَى

আর তোমরা স্বগৃহে অবস্থান করবে এবং জাহিলিয়াতযুগের মত নিজেদেরকে প্রদর্শন করে বেড়াবে না।’(সূরা আহযাব ৩৩)

 

রাসূলুল্লাহ  বলেন,

الْمَرْأَةُ عَوْرَةٌ ، وَإِنَّهَا إِذَا خَرَجَتِ اسْتَشْرَفَهَا الشَّيْطَانُ ، وَإِنَّهَا لا تَكُونُ أَقْرَبَ إِلَى اللَّهِ مِنْهَا فِي قَعْرِ بَيْتِهَا

নারী গোপন জিনিসযখন সে ঘর থেকে বের হয় শয়তান তাকে তাড়া করে। আর সে আল্লাহ তাআলার সবচে’ নিকটতম তখন হয় যখন সে নিজের ঘরের মাঝে লুকিয়ে থাকে।’ (তাবরানী ২৯৭৪)

 

নারী মসজিদে যাওয়ার বিষয়ে রাসূলুল্লাহ  বলেন,وَبُيُوتُهُنَّ خَيْرٌ لَهُنَّ তাদের জন্য তাদের ঘর উত্তম।’ (আবু দাউদ ৫৬৭)


পর্দা রক্ষা করা ফরজ। 

وَإِذَا سَأَلْتُمُوهُنَّ مَتَاعًا فَاسْأَلُوهُنَّ مِنْ وَرَاءِ حِجَابٍ ذَلِكُمْ أَطْهَرُ لِقُلُوبِكُمْ وَقُلُوبِهِنَّ وَمَا كَانَ لَكُمْ أَنْ تُؤْذُوا رَسُولَ اللَّهِ وَلَا أَنْ تَنْكِحُوا أَزْوَاجَهُ مِنْ بَعْدِهِ أَبَدًا إِنَّ ذَلِكُمْ كَانَ عِنْدَ اللَّهِ عَظِيمًا

অর্থ : আর তোমরা তাঁর (রাসূলুল্ল াহ সাল্ল াল্ল াহু আলাইহি ওয়াসাল্ল াম)-এর স্ত্রীগণের কাছে কিছু চাইলে পর্দার আড়াল থেকে চাইবে। এটা তোমাদের অন্তরের জন্য এবং তাঁদের অন্তরের জন্য অধিকতর পবিত্রতার কারণ। {সূরা আহযাব-৫৩}

বিখ্যাত তাফসীরবিদ ইমাম কুরতুবী রাহ. উক্ত আয়াতের আলোচনায় বলেন, উক্ত আয়াতে আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ সাঃ এর স্ত্রীদের কাছে কোনো প্রয়োজনে পর্দার আড়াল থেকে কিছু চাওয়া বা কোনো মাসআলা জিজ্ঞাসা করার অনুমতি দিয়েছেন। সাধারণ নারীরাও উপরোক্ত হুকুমের অন্তর্ভুক্ত। (তাফসীরে কুরতুবী ১৪/১৪৬)

অসুস্থ্য মানুষদের সেবা করাও সওয়াবের কাজ। যেহেতু মহিলাদের  জন্য মহিলা ডাক্তারের প্রয়োজন। 
তাই মহিলাদের জন্য পর্দার বিধান পুরোপুরি ভাবে পালনের শর্তে ডাক্তারী শিক্ষা অর্জন করা জায়েজ আছে।  
(কিতাবুন নাওয়াজেল ১৪/২৫৬)

ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা (আরব বিশ্বের সর্বোচ্চ ফতোয়া কমিটি)-কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে,
قد تجد الطبيبة حرجا وصعوبات في تغطية وجهها عن غير المحارم أثناء عملها، فهل هذا يعتبر من الضرورة لكشفه؟
মহিলা ডাক্তার তার কর্মস্থলে ডিউটি করার সময় পরপুরুষের সামনে চেহারা ঢেকে রাখতে সমস্যা ও কষ্ট হয়। সুতরাং চেহারা খোলা রাখার জন্য এটাকে জরুরত হিসেবে গণ্য করা যাবে কিনা?

তাঁরা উত্তর দিয়েছেন,
يحرم على المرأة كشف وجهها لغير محارمها، وليس هناك ضرورة لكشف الوجه في العمل
নারীর জন্য পরপুরুষের সামনে চেহারা খোলা রাখা হারাম। আর ডিউটি করার সময় প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে চেহারা খুলে রাখার জরুরত বিদ্যমান নেই। (ফাতাওয়া লাজনাতিদ্দায়িমা ১৭/২৭৭)

বিস্তারিত জানুনঃ  

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
নারীদের নার্স হওয়া জায়েজ আছে।
তবে পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করতে হবে।
ঢিলেঢালা পোশাক পরিধান করতে হবে।    
শুধুমাত্র নারীদের সেবা করতে হবে।  
সহকর্মীদের সাথে পর্দা মেইনটেইন করে কথা বলবে,অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা থেকে হেফাজতে থাকবে।

★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন, 
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি পোশাক ঢিলেঢালা হয়,যৌন আবেদনময়ী না হয়,শরীরের কোন অংশ খোলা না থাকে,সেক্ষেত্রে এটা আপনার জন্য জায়েজ হবে।

তবে পুরুষদের মাঝে থাকলে অবশ্যই হাত মোজা পরিধান করতে হবে,অন্যথায় পূর্ণ পর্দা না হওয়ায় গুনাহ হবে।

আরো জানুনঃ- 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
পরিপূর্ণ হাত মোজা কি জরুরি? হাত এর তালু , আঙুল কি পর্দার অন্তর্ভুক্ত হবে? কিছু হাত মোজা আছে আঙুল এর অংশ কাটা ওই হাত মোজা পড়া যাবে কি?
by (574,260 points)
পরিপূর্ণ হাত ঢাকা জরুরী, তাই পরিপূর্ণ হাত মোজা জরুরি।


আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...