জবাবঃ-
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم
হাদীস শরীফে এসেছেঃ-
أَخْبَرَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ حُرَيْثٍ قَالَ حَدَّثَنَا الْفَضْلُ بْنُ مُوسَى عَنْ الْحُسَيْنِ بْنِ وَاقِدٍ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ بُرَيْدَةَ عَنْ أَبِيهِ قَالَ خَطَبَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا فَاطِمَةَ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنَّهَا صَغِيرَةٌ فَخَطَبَهَا عَلِيٌّ فَزَوَّجَهَا مِنْهُ
হুসায়ন ইবন হুরায়াছ (রহঃ) ... আবদুল্লাহ ইবন বুরায়দা (রহঃ) তাঁর পিতার সূত্রে বর্ণনা করেন, আবু বকর এবং উমর (রাঃ) ফাতিমা (রাঃ)-এর বিবাহের পয়গাম পাঠালে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ সে তো অল্প বয়স্ক। এরপর আলী (রঃ) প্রস্তাব করলে তিনি তাঁর সাথে বিবাহ দিলেন।
(নাসায়ী ৩২২৪)
হযরত ফাতেমা রা. এর বিয়ের প্রস্তাব সর্ব প্রথম হজরত আবু বকর রা. দেন। অতপর হজরত ওমর রা. প্রস্তাব দেন। কারণ, এটুকু যোগ্যতা ও সম্মান তাঁদের অর্জিত ছিলো। তাঁদের কন্যাদ্বয় রাসুলুল্লাহসাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সম্মাণিতা স্ত্রী ছিলেন। এখন তারা রাসুলুল্লাহসাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জামাতা সম্মান অর্জন করবেন। রাসুলুল্লাহসাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, انها لصغيرة সে অনেক ছোট। তাঁদের বয়স অনেক বেশি ছিলো। রাসুলুল্লাহসাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বয়সের কথা বিবেচনা করে তাঁদের আবেদন নাকচ করে দেন। হযরত ফাতেমা রা. এর বিয়ের ঘটনা উল্লেখ করার উদ্দেশ্য হলো, হজরত শায়খাইন রা. (আবু বকর ও ওমর) এর সঙ্গে বিয়ে দিতে রাসুলুল্লাহসাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর আপত্তি ছিলো সে ছোট বাচ্চা। এর থেকে বুঝা গেলো
পাত্র পাত্রীর বয়স কাছাকাছি হওয়া চাই।
হযরত ফাতেমা [রা.] -এর বিয়ের সময় বয়স ছিলো সাড়ে পনেরো বছর। হযরত আলী রা. বয়স ছিলো একুশ বছর। এর থেকে জানা যায়, বর-কণের বয়সের সমতা ঠিক রাখা উচিৎ।
উত্তম হলো সমবয়সী স্বামী সমবয়সী স্ত্রী থেকে একটু বড় হবে। জ্ঞানীগণ বলেন, মেয়ে যদি একটু ছোট হয় তাহলে সমস্যা নেই। রহস্য হলো নারী অধীনস্থ হয় এবং কর্তৃত্বকারী। তাছাড়াও নারীর শারীরিক শক্তি ও সামর্থ থাকে দুর্বল। ফলে সে আগে বৃদ্ধা হয়ে যায়। যদি দুই-চার বছরের পার্থক্য থাকে তাহলে সমতা আসে। [হুকুকুল জাওযাইন, পৃষ্ঠা-৩৭০।]
(কিছু তথ্য সংগৃহীত)
★বিবাহের ক্ষেত্রে ছেলে মেয়ের বয়সের মাঝে বেশি পার্থক্য থাকা উচিত নয়; বরং বয়সের পার্থক্য কম থাকা উত্তম। এটা বুঝা যায় হযরত ফাতিমা রাযি. এর বিয়ের দিকে তাকানো হলে।
তাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব হযরত আবু বকর রাযি. এবং হযরত উমর রাযি.-ও দিয়েছিলেন। যাঁদের শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার কথা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁরা ছিলেন উম্মতের শ্রেষ্ঠতম ব্যক্তি। কিন্তু রাসূল ﷺ তাঁদের কাছে কম বয়সী ফাতিমা রাযি.-কে বিবাহ দেন নি। দিয়েছেন কাছাকাছি বয়স্ক হযরত আলী রাযি.-এর সাথে। (মওসূআতু হায়াতুস সাহাবিয়্যাত ৬২১)
স্বামী স্ত্রীর মধ্যে নির্দিষ্ট বয়সের কোনো তফাৎ নাই।বরং যে কোনো বয়সের কাউকে অন্য যে কেউ বিয়ে করতে পারবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া-সাল্লাম' ২৫ বৎসর বয়সে চল্লিশোর্ধ নারীকে বিয়ে করেছিলেন।এবং পঞ্চাশোর্ধ অবস্থায় ৬/৯ বৎসরের মহিয়সী নারী আম্মাজান আয়েশা রাযির সাথে সংসার শুরু করেছিলেন।
হ্যা, সাধারণত স্বামীর বয়স থেকে দুয়েক বৎসর কম হওয়াটা উচিৎ যাতেকরে স্ত্রীকে ফরমায়েশ করা যায় এবং চলাফেরা করতে সুবিধা হয়। জান্নাতে নারী পুরুষগণ সমবয়স্ক হবে।
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,
ক, মূলত বালেগ বালেগাহ হলেও সেক্ষেত্রে বিবাহ করা যাবে।
তবে এক্ষেত্রে পুরুষের এর জন্য স্ত্রীর মোহরানা ও অন্যান্য আবশ্যকীয় হক আদায়ে সক্ষমতা অর্জন করা পর্যন্ত অপেক্ষা করা চাই।
খ, বিষয়টি উপরে বিস্তারিত উল্লেখ রয়েছে।
গ, বয়সে বড় কোনো নারীকে বিবাহ করলে শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে বাধা নেই।
তবে পরবর্তী জীবনে স্ত্রীর হক আদায়ে অপূর্ণতা আসতে পারে।
হ্যাঁ, এক্ষেত্রে স্ত্রী বিষয়টি মেনে নিলে কোনো সমস্যা নেই।
ঘ, যে স্বামী তার স্ত্রীর হক আদায় করে,এবং স্ত্রীও তার স্বামীর হক আদায় করে,তারাই আদর্শ স্বামী-স্ত্রী।
স্বামী স্ত্রীর হক সংক্রান্ত জানুনঃ-